ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তাবিথই ঢাকা উত্তরে বিএনপি জোটের মেয়র প্রার্থী

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

তাবিথই ঢাকা উত্তরে বিএনপি জোটের মেয়র প্রার্থী

শরীফুল ইসলাম ॥ তাবিথ আউয়ালই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে (ডিএনসিসি) বিএনপি জোটের মেয়র প্রার্থী। এ জোট থেকে প্রার্থী হতে বেশ ক’জন নেতা আগ্রহ প্রকাশ করলেও আজ শনিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তাবিথ আউয়ালকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তাঁর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। জানা যায়, বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির আগের বৈঠকেই দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকে ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী ঠিক করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক দল জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন নিজেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করায় বিএনপি হাইকমান্ড নড়েচড়ে বসে। এ পরিস্থিতিতে ডিএনসিসি মেয়র প্রার্থী নিয়ে ৮ জানুয়ারি রাতে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে জামায়াতের একজন প্রার্থী হওয়ার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। তবে জোটের নেতারা এ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী করার বিষয়ে খালেদা জিয়ার ওপর দায়িত্ব অর্পন করেন। তিনি যাকে মেয়র প্রার্থী করবেন তাকেই ২০ দলীয় জোটের সবাই মেনে নেবেন বলেও আশ্বাস দেয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয় আজ শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইতোমধ্যেই বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, বিজেপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ এবং জামায়াতের মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকলেও এ জোটের সমর্থন নিয়ে বিকল্প ধারার যুগ্ম-মহাসচিব মাহি বি চৌধুরীও মেয়র প্রার্থী হতে চান। তবে আগের নির্বাচনে দুপুরের আগে বর্জনের ঘোষণা দিয়েও তাবিথ আউয়াল প্রায় ৩ লাখ ভোট পাওয়ায় এবং ওই নির্বাচনের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে তার ব্যাপক পরিচিতি ঘটায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া তাকেই আবার প্রার্থী করার বিষয়ে বেশি আগ্রহী বলে জানা গেছে। সূত্র মতে, আজ রাতে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে তার গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিতব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ডিএনসিসি মেয়র প্রার্থী নিয়ে আবারও বিস্তারিত আলোচনা হবে। দলের অধিকাংশ নেতা তাবিথ আউয়ালকে প্রার্থী করার বিষয়ে মতামত দেবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে তাবিথ আউয়ালকে প্রার্থী ঘোষণার আগে আগ্রহী অন্য প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা বলা হবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান বলেন, ডিএনসিসি নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত। দলীয় প্রার্থীও ঠিক করে রাখা হয়েছে। তবে পূর্বনির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুসারে শনিবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মেয়র প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি জোটের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত বলে দাবি করে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলব এ নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয় সে ব্যবস্থা করুন। তা না হলে রাজধানীর মানুষ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আমরা মনে করি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন দেশবাসীর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ নির্বাচনই বলে দেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভবিষ্যত কি হবে। উল্লেখ্য, ৯ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এ তফসিল অনুসারে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২১ ও ২২ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং ভোট গ্রহণ হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি বিরামহীন সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত আইন অনুযায়ী মেয়র পদের নির্বাচন হবে দলীয় ভিত্তিতে। তাই কোন দলের প্রার্থী কে হবেন তা দলগুলোই নির্ধারণ করবে। দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রার্থী হিসেবে দল থেকে পাওয়া প্রত্যয়নপত্রও জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগেই কেউ কেউ অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নেমে পড়লেও ২৯ জানুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনের আগে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবে না। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের ক্ষেত্রে বিএনপি বাড়তি সুবিধা পাবে। কারণ, নির্বাচনের আচরণ বিধি অনুসারে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা এ নির্বাচনে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। যেহেতু আওয়ামী লীগের অধিকাংশ প্রভাবশালী নেতা মন্ত্রী-এমপির পদে রয়েছেন তাই তারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু বর্তমানে মন্ত্রী-এমপির পদে না থাকায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের সকল সিনিয়র নেতা এ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। এদিকে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি নাম, পদবি আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন থেকে জানা যায়, রাজনৈতিক দল কোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করলে উক্ত দলের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি, নমুনা স্বাক্ষর রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট জমা দিতে হবে। আর এর একটি অনুলিপি নির্বাচন কমিশনের কাছেও পাঠাতে হবে। কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে একজন মাত্র প্রার্থীকেই মনোনয়ন দিতে পারবে। একাধিক ব্যক্তিকে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হলে সেই দলের প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হবে। প্রসঙ্গত ঃ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বর্তমানে রাজনৈতিকভাবে চরম বেকায়দায় রয়েছে বিএনপি। এছাড়া ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের যুদ্ধাপরাধের বিচারে ফাঁসি হওয়ায় এবং এ রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ায় তারাও রাজনৈতিকভাবে চরম বেকায়দায় রয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াতের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক তৎপরতা তেমন দেখা না গেলেও ভেতরে ভেতরে দুই দলের নেতাকর্মীরাই সুসংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ব্যাপক চেষ্টা চালাবে। প্রতিটি ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি করে ভোটারদের সরকারবিরোধী লিফলেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে যাবে তারা। জোরাল চেষ্টার মাধ্যমে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে বিজয়ী হতে পারলে একদিকে তারা নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণের সুযোগ পাবে। আর অপরদিকে এ নির্বাচনের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করতে পারবে। কথা প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা জানান, আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে ২০ দলীয় জোট। প্রার্থী ঘোষণার পর জোটের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে এলাকাভিত্তিক বেশ কিছু কমিটি গঠন করা হবে। এসব কমিটির তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ড পর্যায়ে প্রচার চালানো হবে। এছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ ২০ দলীয় জোটের সকল সিনিয়র নেতারা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেবেন। আর এ নির্বাচন কার্যক্রম কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করবেন ক’জন সিনিয়র নেতা। জায়ান্ট লিলি বড় আকৃতির পদ্মফুল (জায়ান্ট লিলি) পৃথিবী থেকে হারাতে বসেছিল। ২০০৬ সালে এই জাতের পদ্মফুলকে বিপন্ন প্রজাতি বলে আখ্যা দেয়া হয়। তবে আশার কথা হলো এই জায়ান্ট লিলি একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যায়নি। সম্প্রতি প্যারাগুয়েতে এই পদ্মফুলের দেখা মিলেছে। দেশটির রাজধানী আসুনচিয়ানের ২৫ কিলোমিটার উত্তরে প্যারাগুয়ে নদীতে এই ফুল জন্মেছে। প্যারাগুয়ের পরিবেশমন্ত্রী বলেন, অনেক কারণে এই গাছ বিলুপ্ত হতে বসেছিল। প্যারাগুয়ে অঞ্চলের পদ্মফুলগুলো গড়ে দেড় মিটার দৈঘ্যের হয়ে থাকে। এগুলোর আকৃতিও আলাদা ধরনের হয়। এ জাতের পদ্মফুল ফোটায় প্যারাগুয়ের ওই অঞ্চলে পর্যটকদের আনাগোনা বহুগুণে বেড়েছে। অনেকে এই ফুলের সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছে। কেউ আবার তাদের সন্তানদের এই ফুলের ওপর বসিয়ে দিচ্ছে। পর্যটকরা নৌকাযোগে এই ফুলের চারদিকে ঘুরছে। এ্যান্তোনিও বেনিতেজ নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ছোটবেলা থেকে আমি এই এলাকায় বাস করি। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম এই জাতের পদ্মফুল হয়ত বিলুপ্ত হয়ে গেছে। তবে এই ফুল আবার ফিরে এসেছে। অগাস্টিন গোমেজ নামের এক পর্যটক বলেন, আমি এত বড় পদ্মফুল দেখে অবিভূত হয়ে পড়েছি। আমরা এখন সব সময় এই ফুল দেখতে পাব। এগুলোর কোনটির প্রস্থ ২ মিটার পর্যন্ত। স্থানীয় এই পদ্মফুলকে রোগীরা পথ্য হিসেবে খায়। আবার অনেকে এ্যাজমা ও শ্বাসনালীর সমস্যা মোকাবিলায় এই ফুল খেয়ে থাকে। -বিবিসি অবলম্বনে
×