ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে চার বিচারপতির চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

ভারতের প্রধান  বিচারপতির  বিরুদ্ধে চার বিচারপতির  চ্যালেঞ্জ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতের সুপ্রীমকোর্টের চার সিনিয়র বিচারপতি দেশটির প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর কর্তৃত্বকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ, বিচারপতি জাস্তি চেলামেশ্বর, বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি মদন লকুর। শুক্রবার ওই সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন, প্রধানবিচারপতি নিয়ম ভেঙ্গে নিজের মর্জি অনুযায়ী মামলার বেঞ্চ নির্ধারণ করছেন। উচ্চ আদালত যদি নিয়ম না মানে, তাহলে ভারতে গণতন্ত্রও বাঁচতে পারবে না বলে তারা সতর্ক করে দিয়েছেন। -খবর বিবিসি অনলাইন ও এএফপির বিবিসি ভারতের ইতিহাসে উচ্চ আদালতের বিচারকদের এমন পদক্ষেপকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছে। কারণ, প্রচলিত রীতি অনুযায়ী উচ্চ আদালতের বিচারকরা সরাসরি কখনও সাংবাদিকদের সামনে কথা বলেন না। তাদের সংবাদ সম্মেলনে আসার ঘটনাও এর আগে কখনও ঘটেনি। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার দিল্লীতে বিচারপতি জাস্তি চেলামেশ্বরের বাসভবনের লনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তার পাশে ছিলেন অপর তিন বিচারক বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি মদন লকুর ও বিচারপতি কুরিয়ান জোসেফ। বিচারপতি চেলামেশ্বর বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানের (সুপ্রীমকোর্ট) সুরক্ষা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে না পারলে ভারতে গণতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকবে না বলে আমাদের চারজনের বিশ্বাস।’ টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলোতে বেঞ্চ বরাদ্দ নিয়ে আপত্তির বিষয়টি জানিয়ে দুই মাস আগে প্রধানবিচারপতিকে চিঠি দিয়েছিলেন চার বিচারক। ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব আদালতের কাজ সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য কাজের পালা ও মামলার ভার বণ্টন করা। তিনি সুপ্রীমকোর্টের সর্বেসর্বা নন। ‘সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতির দায়িত্ব যারা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে তার নাম আগে বলা হয়, পার্থক্য শুধুমাত্র এটুকুই।’ চিঠি পাঠানোর পরও বিচারপতি মিশ্র ‘সমাধানে কোন উদ্যোগ নেননি’ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি চেলামেশ্বর বলেন, বিচার বিভাগের নানা অনিয়মের বিষয়ে তারা এখন প্রকাশ্যে মুখ খুলতে বাধ্য হচ্ছেন। ‘কেউ যেন এমন অভিযোগ করতে না পারে যে আমরা সুপ্রীমকোর্টকে বাঁচাতে মুখ খুলিনি। কেউ যেন বলতে না পারে যে আমরা আমাদের বিবেক বিক্রি করে দিয়েছি। বিচারপতি চেলামেশ্বর এও বলেন, তাদের এই সংবাদ সম্মেলন কোন ধরনের রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়। প্রধান বিচারপতিকে লেখা সেই চিঠির একটি অনুলিপিও তিনি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন রেখেছিলেন, তারা প্রধানবিচারপতির অপসারণ চান কি না। জবাবে তারা সেই সিদ্ধান্তের ভার জাতির ওপর ছেড়ে দেন। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের এমন পদক্ষেপের পর ভারতের আইনমন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদের সঙ্গে জরুরী বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
×