ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শীতের সবজিতে ঠাসা রাজধানীর কাঁচাবাজার

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

শীতের সবজিতে ঠাসা রাজধানীর কাঁচাবাজার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শীতের সবজিতে ঠাসা রাজধানীর কাঁচাবাজার। সরবরাহ বাড়ায় এ সপ্তাহে সবজি ও পেঁয়াজের দাম কমেছে। চাল, আটা, চিনি, ডাল ও ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। বেড়েছে আদা ও ডিমের দাম। দাম কমে প্রতিকেজি দেশী ও আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭৫ টাকায়। তবে এই দামও অনেক বেশি বলে অভিযোগ রয়েছে ভোক্তাদের। সরবরাহ বাড়ায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা প্রতিপিস। শিম, শালগম, টমেটোসহ অন্যান্য সবজির দাম আর কমেছে। এছাড়া ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে নতুন আলু। সরু চাল ৫৮-৬৮, মাঝারি চাল ৪৮-৫৬ এবং মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৬ টাকায়। প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকায়। মাছ ও মাংসের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং কাপ্তান বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, ঘনকুয়াশায় পণ্যবাহী ট্রাক চলাচলে কিছুটা বিঘœ ঘটলে রাজধানীর বাজারগুলোতে সবজির সরবরাহের কোন কমতি নেই। বাজারগুলো ঠাসা বিভিন্ন ধরনের সবজিতে। তবে সবজির দাম যেভাবে কমছে সেই একইভাবে পেঁয়াজের দাম না কমায় অস্বস্তি রয়েছে ভোক্তাদের। পুরান ঢাকার বনগ্রামের বাসিন্দা মোছলেম উদ্দিন বাজার করছিলেন কাপ্তান বাজারে। পেঁয়াজের দাম নিয়েই তার যত অসন্তুষ্টি। তিনি জানান, সবজির দাম বেশ কম। কিন্তু গত মাস দুয়েক ধরে পেঁয়াজের দাম ভোগাচ্ছে তাকে। ৬৫-৭৫ টাকায় এখনও প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের স্বার্থে দ্রুত দাম কমিয়ে আনতে হবে। গত সপ্তাহ প্রতিহালি ডিম ২৫-২৬ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৬-৩০ টাকায়। এছাড়া বাজারে দেশীয় জাতীয় মাছের সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ মাছের দাম বেড়েছে। প্রতিজোরা মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা। গরু, খাসির মাংস এবং ব্রয়লার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মুরগির চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরবরাহ বেড়েছে। বাজারে দেশী জাতীয় সকল মাছের সরবরাহ বেড়েছে। কিছুটা স্বস্তায় পাওয়া যাচ্ছে দেশী মাছ। বিশেষ করে শোল, টাকি, কৈ এবং বড় সাইজের দেশী বোয়াল পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, বিত্তশালীরা বাজারে এসে বোয়াল মাছের খোঁজ করছেন। বড় আকারের প্রতিকেজি বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। আকারভেদে প্রতিটি শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকায়। তবে মসলা জাতীয় পণ্য আদার দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০-১২০ টাকায়। এছাড়া ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি রসুন। ভাল জাতের মসুর ডাল প্রতিকেজি ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা পর্যায়ে। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বাজারে বিভিন্ন জাতের খেজুরগুড় ও মুড়ির সরবরাহ বেড়েছে। মানভেদে প্রতিকেজি খেজুরগুড় ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে যেসব গুড় পাওয়া যাচ্ছে তা চিনি মিশ্রিত বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তারা। শাহিন হাওলাদার নামে এক ক্রেতা জানালেন, ধুপি পিঠা, পায়েশ এবং ক্ষীর রান্নার জন্য অনেকেই শীতকালে খেজুরগুড় কিনেন। কিন্তু বাজারে সবই ভেজাল ও চিনি মিশ্রিত খেজুরগুড় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, যশোর, ফরিদপুর ও রাজশাহীর পাটালিগুড় বাংলাদেশের ঐতিহ্য। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এখন আর সেই গুড় পাওয়া যায় না। যা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে তাও ভেজালে ভরা। গ্রামাঞ্চলে আগের মতো খেজুর গাছ দেখা যায় না। নেই গাছিও। তিনি বলেন, দেশীয় ঐহিত্য ও স্বাদের খেজুরগুড় হয়ত একদিন হারিয়ে যাবে। তাই এসব রক্ষায় এখনই সরকারীভাবে উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বাজারে মুড়ি ও মুড়ির তৈরি মোয়া জাতীয় খাবার আগের চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। মানভেদে প্রতিকেজি মুড়ি ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
×