ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ও ইমেলে বিদ্যুত বিলের তথ্য প্রদানের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

মোবাইল ও ইমেলে বিদ্যুত বিলের তথ্য প্রদানের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না

রশিদ মামুন ॥ সব গ্রাহককে মোবাইল ফোন এবং ইমেলে বিদ্যুত বিলের তথ্য প্রদানের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। ঢাকার দুই বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি ডিজিটাল তথ্য সেবা প্রদানে এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে রয়েছে অন্য চার বিদ্যুত বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান। বিদ্যুত বিভাগ সম্প্রতি প্রতিমাসে কতভাগ গ্রাহক ডিজিটাল পদ্ধতির এই সেবা পাচ্ছেন তা জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিদ্যুত বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, গ্রাহক যাতে সহজে বিল সম্পর্কে জানতে পারে সে জন্যই এই ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। যেসব গ্রাহক মেইল ব্যবহার করেন তাদের মেইল করেই বিদ্যুত বিলের কপি পৌঁছানো যায়। আর একবার গ্রাহক অভ্যস্ত হয়ে গেলে বিল বিতরণের ঝামেলা কমে যাবে। এখন তথ্য আদান প্রদানের ক্ষেত্রে অনলাইন এবং এসএমএস জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। দেশে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যার হাতে একটি মোবাইল ফোন নেই। সরকার নানা প্রচারে বা আহ্বান জানানোর ক্ষেত্রেও এই পথ অবলম্বন করে। সেই বিচারে এসএমএস এর মাধ্যমে বিল প্রদান প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ভবিষ্যতে গ্রাহককে এই প্রক্রিয়ায় অন্য তথ্যও প্রেরণ করা সম্ভব। এতে বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি এবং গ্রাহকের মধ্যে সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে বলে আশা করে বিদ্যুত বিভাগ। এর আগে বিভিন্ন সময়ে লোডশেডিং এর তথ্য গ্রাহককে জানানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষ পত্রপত্রিকায় লোডশেডিং এর তথ্য আগে জানানো হলেও সকল গ্রাহককে একই সঙ্গে জানানো হয় না। বিদ্যুত বিভাগ মনে করছে একটি ডাটাবেজ তৈরি করা সম্ভব হলে গ্রাহক আরও উপকৃত হবে। বিদ্যুত বিতরণকারী সংস্থা পিডিবি সবশেষ যে তথ্য বিদ্যুত বিভাগে জমা দিয়েছে তাতে বলছে এখন সংস্থার মোট গ্রাহকের সংখ্যা ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২১৫ জন। এর মধ্যে ৬০ ভাগ গ্রাহক এই সেবা পাচ্ছেন। অর্থাৎ মোট গ্রাহকের মধ্যে বিলের তথ্য এসএমএস পাচ্ছেন ১৫ লাখ ৩২ হাজার ৫১০ জন। এখনও সরকারের প্রত্যাশিত ডিজিটাল সেবার বাইরে রয়েগেছে পিডিবির ৪০ ভাগ গ্রাহক। পিডিবি দেশের বড় একটি অংশে বিদ্যুত বিতরণ করছে। যদিও সরকার চাইছে পিডিবির হাত থেকে বিদ্যুত বিতরণের সব কিছু সরিয়ে নিতে। দেশের সব থেকে বেশি গ্রাহককে বিদ্যুত বিতরণ করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড। সারাদেশে পৃথক পৃথক পল্লী বিদ্যুত সমিতি গ্রাহকের সংযোগ প্রদান থেকে বিল আদায় সব কিছু করে থাকে। প্রতিটি সমিতির হিসেবের খাতাও আলাদা। আরইবির গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ছাড়িয়েছে। তবে মোট গ্রাহকের মধ্যে এক কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৭জন গ্রাহকের মোবাইল ফোনে এই সেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে আরইবি। সংস্থাটি দাবি অনুযায়ী মোট গ্রাহকের মধ্যে এই হার ৫৮ দশমিক ১৩ ভাগ। অর্থাৎ ৪২ ভাগের বেশি গ্রাহক ডিজিটাল সেবা পাচ্ছে না। তবে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি রয়েছে ঢাকা এবং গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের কিছু এলাকায় বিতরণ করা দুই কোম্পানির। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষের কাছেই তারা ডিজিটাল সেবা পৌঁছানোর দাবি করেছে। তবে সংখ্যার বিচারে এই দুই কোম্পানির গ্রাহকও কম। সব থেকে বেশি অগ্রগতি রয়েছে ঢাকা ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি ডেসকোর। তারা দাবি করছে এখন পর্যন্ত তারা এসএমএস-এর মাধ্যমে বিল এর তথ্য প্রদান করা হয়েছে ছয় লাখ ৭১ হাজার ৮৯৬জন গ্রাহকে। এই হার মোট গ্রাহকের ৮০ ভাগ। তবে এখনও ২০ ভাগ গ্রাহক রয়ে গেছে ডিজিটাল সেবার বাইরে। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ডিপিডিসি বলছে তারা মোট গ্রাহক দশ লাখ ৫৯ হাজার ৭৩৯জনের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৭০ ভাগ গ্রাহককে এই সেবা দিচ্ছে। ডিজিটাল সেবা পাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা আট লাখ ৩৪ হাজার ৩০জন। ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) ডিজিটাল সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানিটি মোট গ্রাহকের মধ্যে মাত্র ৪২ ভাগকে ডিজিটাল সেবা দিচ্ছে। কোম্পানিটি দশ লাখ ৩৩ হাজার ২৯১জন গ্রাহকের মধ্যে চার লাখ ৩৩ হাজার ৯৮২জনকে এই সেবার আওতায় এনেছে। আর উত্তরাঞ্চলে নতুন গঠিত কোম্পানি নেসকোও ৪২ শতাংশ গ্রাহকে এই সেবা দিচ্ছে।
×