স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ কনকনে ঠান্ড এবং শৈত্যপ্রবাহের কাঁপুনির মধ্যেও চট্টগ্রামের সরকারী ডাঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে যেন প্রাণের মেলা। শুক্রবার সকাল থেকেই দিনভর উৎসবমুখর পরিবেশ। বিভিন্ন বয়সের নারীরা মিলেছে এই মোহনায়। এমন মিলনমেলার সুযোগ জীবনে খুব একটা হয় না। বীরকন্যা প্রীতিলতার স্মৃতিধন্য ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠ উদযাপন করেছে ১১১তম বর্ষপূর্তির উৎসব। সে কারণে বাঁধভাঙ্গা।
ডাঃ খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১১তম বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, আমি মনে করি এই স্কুলটি সব সময় তার শিক্ষার্থীদের মনোরম জীবন সাজাতে অনুপ্রাণিত করে। এই বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, যিনি স্বদেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে বেরিয়ে যাওয়া হাজারো ছাত্রী সমাজ ও দেশকে আলোকিত করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন। এই প্রতিষ্ঠান শুধু সুশিক্ষা প্রদানই নয়, সংস্কৃতিমনষ্ক মানবিক মানুষ হওয়ার শিক্ষা যেন দিয়ে যায়। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই হোক এমনই একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে সবাই আসবে জীবনটাকে মনোরমভাবে সাজাতে। বিদ্যালয়ের ১১১তম বর্ষ উদযাপন উৎসবে মিলিত হয়েছেন বিভিন্ন প্রজন্মের নারীরা। জড়ো হওয়াদের মধ্যে অনেকেই মা-মেয়ে, বোন-বোন এবং বান্ধবী। অনেকের সঙ্গে দেখা হয় না বহুদিন, বহুকাল। সুতরাং এমন সুযোগ হাতছাড়া হবে কেন? হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সমাগম ঘটে খাস্তগীরে। তারা স্মৃতিকাতর হন পুরনো ভবন এবং হোস্টেলের আঙিনা ঘুরে। সকলেই যেন স্মৃতির ঝাঁপি খুলে দিয়ে বসেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলে আড্ডা। অনেকেই এখন চট্টগ্রাম শহর থেকে বহুদূরে, তারাও ছুটে আসেন বর্ষপূর্তির উৎসবে। অনেকেই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন নিজেদের মেয়েকে। আঙ্গুল দিয়ে চিনিয়ে দিচ্ছেন কোথায় তারা ক্লাস করেছেন, কোথায় থেকেছেন, কোন জায়গায় খেলতে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিলেন- এমন অনেক স্মৃতিচিহ্ন।