ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রিফাত কান্তি সেন

ঘুরে আসুন আলুটিলা রিছাং গিরি খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ০৭:২৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

ঘুরে আসুন আলুটিলা রিছাং গিরি খাগড়াছড়ি

চলছে শীতের মৌসুম। ৬৮ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শীত অনুভব করছি আমরা। শীত মানেই আমাদের পর্যটন স্থানগুলোর জন্য বিশেষ কিছু। বছরের এ সময়টাতেই পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভিড় জমান দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। পর্যটকদের প্রথম পছন্দই থাকে পাহাড়ী অঞ্চলগুলো। পাহাড়-পর্বতের সৌন্দর্য উপভোগ করতেই মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ম-িত স্থানগুলোতে ভিড় জমান। প্রিয় পাঠক ৬৪ জেলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়ার নিমিত্তে আজ আমরা আপনাদের সামনে হাজির হয়েছে ‘খাগড়াছড়ি’ জেলাকে নিয়ে। বৈচিত্র্যময় এক পার্বত্য জেলা ‘খাগড়াছড়ি’। এ জেলার উত্তর ও পশ্চিমে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য, দক্ষিণে চট্টগ্রাম, পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলা অবস্থিত। কথিত আছে ‘খাগড়াছড়ি’ একটি নদীর নাম। নদী পাড়ে খাগড়া বন থাকায় নাকি এর নামকরণ করা হয়েছে খাগড়াছড়ি। ১৯৮৩ সালের ৭ নবেম্বর খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা গঠিত হয়। এখানে রয়েছে অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। রয়েছে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝর্ণা, রহস্যময় সুড়ঙ্গ, দেবতার পুকুর, শান্তিপুর অরণ্য কুটির। প্রিয় পাঠক আমরা আজ আপনাদের তিন পার্বত্য জেলার অন্যতম একটি জেলা ‘খাগড়াছড়ি জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আবাসস্থল খাগড়াছড়ি শহরের প্রবেশ করার পথেই দেখা মিলবে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের। বাংলাদেশের যতগুলো পর্যটন কেন্দ্র আছে তার মধ্যে ব্যতিক্রমী পর্যটন স্থান এটি। আলুটিলার সৌন্দর্য উপভোগে তাই প্রতিদিনই দেশী-বিদেশী হাজারো পর্যটকের পদচারণা লক্ষ্য করা যায়। এ পর্যটন কেন্দ্রে বসার সুব্যবস্থা, বিশ্রাম কক্ষ, পর্যবেক্ষণ টাওয়ারসহ গুহায় যাওয়ার সিঁড়ি করা হয়েছে। উক্ত টিলার চূড়ায় দাঁড়ালে শহরের ছোটখাটো বিল্ডিং, গাছ-গাছালি ঘেরা পাহাড়, চেঙ্গী নদীর প্রবাহ দর্শনার্থীদের বাড়তি মনের খোড়াক যোগায়। আকাশে মেঘের আলপনা মনে শান্তি পরশ এঁকে দেয়। প্রিয় পাঠক নৈসর্গিক এ স্থাপনার অপরূপ নিদর্শন দেখার জন্য প্রতিদিন দেশ-বিদেশের পর্যটকদের মিলন মেলায় পরিণত হয় আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রটি। রিছাং ঝর্ণা ঝর্ণা ভালবাসেন না এমন লোক দুনিয়াতে খুবই কম আছে। পাহাড়ের ওপর থেকে গড়িয়ে পড়া পানির চমৎকার নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদের হৃদয়ে প্রশান্তি যোগায়। বলছিলাম খাগড়াছড়ির রিছাং ঝর্ণার কথা। ২৫ থেকে ৩০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার জলরশি। যা দেখার জন্য বহু সংখ্যক পর্যটকের মিলন মেলা ঘটে অপূর্ব এ ঝর্ণার কাছে। রিছাং শব্দটি একটি মারমা শব্দ। ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি আর ‘ছাং’ শব্দের অর্থ গড়িয়ে পড়া। যারা কল্পনা করতে ভালবাসেন তাঁদের জন্য এ স্থানটি হতে পারে চমৎকার এক জায়গা। একে তো চারদিকে পাহাড়ী প্রকৃতি তার ওপর আবার ঝর্ণার পানি গড়িয়ে পড়ার শব্দ যেন হৃদয়ে দোলা দিয়ে যায়। মনই চাইবে না ঝর্ণার এ অপূর্ব সৌন্দর্যকে ফেলে রেখে বাড়ি চলে যেতে। রিছাং ঝর্ণার শীতল পানিতে অনেকেই গা ভিজান। প্রকৃতির এমন অপরূপ রূপে মুগ্ধ পর্যটকরা। তাই দেরি না করে এখনই বেড়িয়ে আসুন খাগড়াছড়ির রিছাং ঝর্ণায়। শান্তিপুর অরণ্য কুটির খাগড়াছড়ি জেলার সৌন্দর্যম-িত একটি উপজেলা পানছড়ি। উক্ত উপজেলার দৃষ্টি নন্দন স্থাপনাগুলোর মধ্যে অন্যতম শান্তিপুর নামক স্থান। সে স্থানটিতে ১৯৯৯ সালে শান্তিপুর অরণ্য কুটির স্থাপিত হয়েছিল। ধারণা করা হয় বিশাল এলাকাজুড়ে অরণ্য বা বন ঘেরা বলে হয়ত এ স্থানটির নামকরণ করা হয়েছে অরণ্য কুটির। প্রাকৃতিক পরিবেশে নিরিবিলি ধ্যান করার জন্য ভিক্ষুরা এই কুটিরটি ব্যবহার করেন। এটি মূলত একটি বৌদ্ধ মন্দির। এশিয়ার সবচেয়ে বড় বুদ্ধ মূর্তিটি রয়েছে এখানে। প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটক মূর্তিটি এক নজর দেখার জন্য সেখানে ভিড় জমান। এটি যেমন একটি তীর্থ স্থান অন্যদিকে দর্শনীয় স্থান হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের উপস্থিতি সেখানে লক্ষ্য করা যায়। এখানে ২৫টিরও বেশি পর্ণ কুটির রয়েছে, উপ-কুটিরও রয়েছে। কীভাবে যাবেন খাগড়াছড়ি রাজধানী ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশে ছেড়ে যায় অনেক গাড়ী। এস আলম, শ্যামলী, সৌদিয়া, হানিফ, হিমাচলসহ বেশকিছু গাড়ি গাবতলী, কমলাপুর, ফকিরাপুল থেকে প্রতিদিন ছেড়ে যায়।
×