ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

৬০ হাজার মেও বিদ্যুত উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

৬০ হাজার মেও বিদ্যুত উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা

সংসদ রিপোর্টার ॥ নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুত, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি আরও জানান, ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন সম্ভব হবে। ওই সময়ের মধ্যে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুত’ ব্রান্ডিং বাস্তবায়ন হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান। সরকারী দলের সদস্য এম আব্দুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, বিদ্যুত উপাদনের মহাপরিকল্পনায় তরল জ্বালানী ভিত্তিক বর্তমান বিদ্যুত উৎপাদন ২৯ শতাংশ হতে ২০৪১ সালে এক শতাংশে নামিয়ে আনার কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুতায়নের জন্য সৌরশক্তি ভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ বান্ধব বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যে গ্যাস, এলএনজি, নবায়নযোগ্য জ্বালানী এবং নিউক্লিয়ার এনার্জি ভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। একই সংসদ সদস্যের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সঠিক সিদ্ধান্ত যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সিস্টেম লস সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ডিপিডিসি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য বিদ্যুত বিতরণ সংস্থা ও কোম্পানিতে বিদ্যুত চুরি বন্ধের লক্ষে সকল এনালগ মিটার অপসারণ করে ডিজিটাল প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। খনিজ সম্পদের সন্ধান ॥ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আওয়ালের প্রশ্নের জবাবে খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বেশ কিছু খনিজ সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি) এবং পেট্রোবাংলার অনুসন্ধান কার্যক্রমের ফলে দেশে এ পর্যন্ত উন্নতমানের বিটুমিনাস, পীট কয়লা, চুনাপাথর, সাদামাটি, কাঁচাবালি, কঠিনশীলা, নুড়িপাথর, নির্মাণ বালি ও ভারি খনিজ মানিক ইত্যাদি খনিজ সম্পদ আবিষ্কৃত হয়েছে। একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, খনিজ সম্পদ আহরণের ক্ষেত্র দেশে ভিন্ন ভিন্ন আইন ও বিধি-বিধান রয়েছে। দেশের আনশোর ও অফশোর এলাকায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন ও বিপণনের জন্য বাংলাদেশ গ্যাস আইন-২০১০, বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম আইন-২০১৬, ন্যাশনাল এনার্জি পলিসি-১৯৯৬ এবং এ সংক্রান্ত বিধি-বিধান রয়েছে। তেমনি অন্যান্য খনিজ সম্পদের ক্ষেত্র খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন আইন-১৯৯২ এবং খনিজ সম্পদ বিধিমালা-২০১২) রয়েছে বলে তিনি জানান। চলতি বছরেই গ্যাসের ঘাটতি দূর ॥ চলতি ২০১৮ সালের মধ্যেই গ্যাসের ঘাটতি দূর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সরকারী দলের সদস্য বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানিয়েছেন, গ্যাসের ঘাটতি দূর হলে সার কারখানাসহ সকল খাতে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে। একই প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, শিল্প কারখানা, বিদ্যুত ও আবাসিক খাতে গ্যাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং তার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় বর্তমানে বেশ কিছু বিদ্যুত কেন্দ্র ও ৫টি সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অধিক দক্ষতাসম্পন্ন ৩টি সার কারখানায় সরবরাহ (শাহজালাল, কাফকো ও যমুনা) চালু রয়েছে। গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রচেষ্টার পাশাপাশি গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটানোর জন্য এলএমজি আমদানির কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।
×