ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিসিএলে হারের মুখে মধ্যাঞ্চল

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

বিসিএলে হারের মুখে মধ্যাঞ্চল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) ষষ্ঠ আসরের প্রথম রাউন্ডের খেলা চলছে। আজ রাউন্ডের চতুর্থ ও শেষদিন। চার দলের চারদিনের ম্যাচের এ লীগের প্রথম রাউন্ডেই বিসিবি উত্তরাঞ্চলের কাছে হারের মুখে পড়ে গেছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। তবে ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিশাল রানের সামনে কুলিয়ে উঠতে পারবে কিনা প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল এমন শঙ্কা ছিল। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত (১১০) ও তুষার ইমরানের (১০৫*) জোড়া সেঞ্চুরিতে সেই শঙ্কা দূর করে দিয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। এখন এ দুই দলের ম্যাচ ড্র’র পথে আছে। বিকেএসপিতে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক ও সেঞ্চুরিয়ান জাকির হাসান যে ব্যাটিং ঝলক দেখিয়েছেন তাতে পূর্বাঞ্চল শুরুতেই উজ্জ্বল নৈপুণ্য দেখিয়ে দেয়। মুমিনুলের ২৫৮ রান ও জাকিরের ১১৯ রানে ৫৪৬ রান করে। এরপর দ্বিতীয়দিন শেষ হওয়ার আগে ৩ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণাঞ্চল যখন ১২৮ রান করে, তাদের বিপদ আছে; ভেবে নেওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয়দিন শেষে অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক ও তুষারই চমকটি দেখিয়ে দেন। মোসাদ্দেক হোসেন (৪২*) ও তুষার ইমরান (২২*) তৃতীয়দিন ব্যাট হাতে নেমে বড় ইনিংস খেলেন। দুইজনই সেঞ্চুরি করেন। মোসাদ্দেক ২২৬ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় ১১০ রান করে আউট হন। আর তুষার ইমরান ১৬৩ বলে ১৮ চারে ১০৫ রান করেন। দুইজন মিলে চতুর্থ উইকেটে ২১৮ রানের জুটি গড়েন। এ জুটিই দক্ষিণাঞ্চলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যায়। ২৭৭ রানে তুষার বোল্ড হওয়ার পর ২৮৮ রানে গিয়ে মোসাদ্দেকও সাজঘরে ফিরেন। তবে তৃতীয়দিন শেষ হওয়ার আগে আর কোন উইকেট পড়েনি। দক্ষিণাঞ্চল ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান করে দিন শেষ করে। এখনও পূর্বাঞ্চল থেকে ২২৮ রানে পিছিয়ে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। কিন্তু ম্যাচ যে ড্র হবে তা নিশ্চিতই। আজ চতুর্থ ও শেষদিন। দুই দলেরই আরও একটি করে ইনিংস বাকি আছে। সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম ইনিংসের আরও ৫ উইকেট হাতে আছে। এখনও ফলোঅন এড়ায়নি দক্ষিণাঞ্চল। তবে ফলোঅন এড়ানোর সঙ্গে যে আরও বহুদূর যেতে পারে দক্ষিণাঞ্চল তা বোঝাই যাচ্ছে। তাতে করে একদিনে দুই দলেরই দুই ইনিংস শেষ হয়ে ম্যাচেরও রেজাল্ট হবে তা বলা মুশকিল। সিলেটে হারের শঙ্কাতেই পড়ে গেছে মধ্যাঞ্চল। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও মধ্যাঞ্চল ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে ব্যর্থতা দেখাচ্ছেন। চার উইকেট নেয়া আরিফুল হকের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। এরপর জহুরুল ইসলাম অমির (১৫২*) সেঞ্চুরি ও ধীমান ঘোষের ৯৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে দ্বিতীয়দিন শেষে ৪৩৩ রান করে উত্তরাঞ্চল। মধ্যাঞ্চল থেকে অনেকদূর এগিয়ে যায়। তৃতীয়দিনে জহুরুল আর ৬ রান যোগ করে আউট হতেই ৯ উইকেটে ৪৫৭ রান করা উত্তরাঞ্চল ইনিংস ঘোষণা করে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে মধ্যাঞ্চল ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করতে পারে। রকিবুল হাসানের (১০৫) সেঞ্চুরিতেই তা সম্ভব হয়। কিন্তু হারের শঙ্কাতেই আছে দলটি। এখনও উত্তরাঞ্চল থেকে ৩৫ রানে পিছিয়ে আছে। হাতে আছে ৩ উইকেট। আজ ম্যাচের চতুর্থ ও শেষদিন। মধ্যাঞ্চলের তিন উইকেট দ্রুত নিতে পারলেই খেলা উত্তরাঞ্চলের মুঠোয় চলে আসবে। জয়ের সম্ভাবনাও উত্তরাঞ্চলের দিকেই ঝুঁকে আছে। স্কোর ॥ তৃতীয়দিন শেষে পূর্বাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৫৪৬/১০; ১২৯.৫ ওভার (মুমিনুল ২৫৮, জাকির ১১৯; রাজ্জাক ৬/১৭৮, সাকলায়েন ৩/৯৩)। দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস দ্বিতীয় দিন শেষে ১২৮/৩; ৪১ ওভার (মোসাদ্দেক ৪২*, তুষার ২২*, শাহরিয়ার ২৯; সোহাগ ২/৩৯) এবং তৃতীয়দিন শেষে ৩১৮/৫; ৮৯ ওভার (মোসাদ্দেক ১১০, তুষার ১০৫, আল-আমিন ১৭*, সোহান ১৩*; সোহাগ ৩/৬৫)। উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল ম্যাচ মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ১৮৮/১০; ৫৬ ওভার (ইরফান ৫৭*, মেহরাব ২৭, তাসকিন ৩৪; আরিফুল ৪/৫৫) এবং দ্বিতীয় ইনিংস ২৩৪/৭; ৭৭ ওভার (রকিবুল ১০৫, তানভির ৩৮, ইরফান ২৪, মোশাররফ ১৪*, মেহরাব জুনিয়র ৭*; আরিফুল ২/৩১)। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস দ্বিতীয়দিন ৪৩৩/৭; ১১৬ ওভার (জহুরুল ১৫২*, ধীমান ৯৩, মিজানুর ৬৪; তাসকিন ৩/১১৬) ও তৃতীয়দিন ৪৫৭/৯; (ইনিংস ঘোষণা); ১১৯.৪ ওভার (জহুরুল ১৫৮; তাসকিন ৪/১২২)।
×