ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল ॥ ঢাকা আবাহনী ০-০ চট্টগ্রাম আবাহনী

ঢাকা আবাহনীর লীগ শিরোপা উৎসব

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকা আবাহনীর লীগ শিরোপা উৎসব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শিরোপা নিশ্চিত হয়েছিল আগেই এক ম্যাচ হাতে রেখেই। কিন্তু তখন শিরোপা জয়ের কাক্সিক্ষত ট্রফিটা বুঝে পায়নি ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান হলো বৃহস্পতিবার। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের সঙ্গে ম্যাচ শেষেই তারা বুঝে পেল সুদৃশ্য ট্রফিটি। যেমনটি পেয়েছিল ঠিক আগের লীগেও। তবে বৃহস্পতিবার ট্রফি নিয়ে উল্লাসের দিনে অবশ্য ‘দ্য স্কাই ব্লু ব্রিগেড’রা জিততে পারেনি। আবার হারেওনি। করেছে গোলশূন্য ড্র। ম্যাচে দুই দলই খেলেছে জয়ের জন্য আক্রমণাত্মক ফুটবল। গোলের সুযোগ সৃষ্টি করার পরও কোন দলই সেই সুযোগগুলোর একটিও কাজে লাগাতে পারেনি। তবে দুই দলের খেলা উপভোগ করে দর্শকরা। নিজেদের ২২তম ম্যাচে এটা আবাহনীর চতুর্থ ড্র। ৫২ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে থেকে লীগ অভিযান শেষ করলো সফলভাবে। পক্ষান্তরে বন্দরনগরীর দল চট্টগ্রাম আবাহনীর এটা সমান ম্যাচে পঞ্চম ড্র। ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হলো তারা। গত লীগে রানার্সআপ হয়েছিল দলটি। এবার রানার্সআপ হয়েছে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব (৪৭ পয়েন্ট)। দ্রাগো মামিচ লীগের মাঝপথে দল ত্যাগ করায় এবং সহকারী কোচ অমলেশ সেনের আকস্মিক মৃত্যুর পরও আবাহনীর এভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে লীগ চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা নিশ্চয়ই কৃতিত্বপূর্ণ। খেলা চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ প্রমুখ। চ্যাম্পিয়ন আবাহনীকে এক বিবৃতিতে অভিনন্দন জানিয়েছে আবাহনী সমর্থকগোষ্ঠী। পেশাদার লীগ নাম হওয়ার পর থেকে এবারের আসর নিয়ে বিপিএলে দশবারের মধ্যে ছয়বারই ট্রফি ওঠেছে আবাহনীর ঘরে। আর পেশাদার পূর্ব-যুগ মিলিয়ে এটা তাদের অষ্টাদশ শিরোপা। শেখ জামাল পেশাদার লীগে শিরোপা জিতেছে তিনবার এবং শেখ রাসেল জিতেছে একবার। চট্টগ্রাম আবাহনী একবারও জেতেনি। টানা দু’বার লীগ শিরোপা জিতলো আবাহনী। এ মৌসুমে দুটি ট্রফি জিতলো তারা। এর আগে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে (৩-১ গোলে) মৌসুমের শুরুতে ফেডারেশন কাপ জিতেছিল তারা। বৃহস্পতিবার ঢাক-ডোল বাজিয়ে ‘আবাহনী, আবাহনী’ স্লোগানে স্টেডিয়ামের গ্যালারি মাতিয়ে রাখে ঢাকা আবাহনীর হাজার তিনেক সমর্থক। চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচের বিরতিতে আতশবাজিও ফাটায় তারা। নব্বই মিনিটের লড়াই শেষে ট্রফি নিয়ে উৎসবে মেতে ওঠেন আকাশী-নীল শিবির। গত ৫ জানুয়ারি শেখ জামালকে হারিয়ে বিপিএলে টানা দু’বার শিরোপা জেতে আবাহনী। এই লীগে সপ্তদশ রাউন্ড পর্যন্ত পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ছিল চট্টগ্রাম আবাহনী। কিন্তু শেষ তিন ম্যাচে আট পয়েন্ট নষ্ট করার কপাল খুলে যায় ঢাকা আবাহনীর। শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করে তারাই। আবাহনীর সমর্থকরা স্টেডিয়ামে আসে ব্যান্ডপার্টি এবং ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে। সবার পরনে ছিল আকাশী-নীল রংয়ের টি-শার্ট। তাতে লেখা ছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’ শব্দটি। উৎসব করার প্রস্তুতি নিয়েই আসে তারা। তবে চট্টগ্রাম আবাহনীকে প্রথম লেগের মতো হারাতে (১-০) পারলে আনন্দটা নিশ্চয়ই দ্বিগুণ হতো। তবে যা হয়েছে, সেটিও নিশ্চয়ই কম নয় তাদের জন্য। বাংলাদেশ আমলে প্রথম লীগ শুরু হয় ১৯৭২ সাল থেকে। ১৯৯৩ সালে নাম বদলে প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগ এবং ২০০৭ সালে নাম বদলে ‘বি’ লীগ ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ লীগ’ এবং ২০১২ সালে নতুন নামকরণ হয় ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ’ (বিপিএল) নামে। এসব লীগে অংশ নিয়ে আবাহনী শিরোপা জেতে ১৯৭৪, ৭৭, ৮১, ৮৩, ৮৪, ৮৫, ৮৯, ৯২, ৯৪, ৯৫, ২০০১, ০৭, ০৮, ০৯, ১২ ও ১৬ সালে। এর মধ্যে তারা জেতে দুটি হ্যাটট্রিক শিরোপা। এখন তাদের লক্ষ্য আসন্ন স্বাধীনতা কাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১৯৮২ সালের মোহামেডান ও ২০১২ সালের শেখ রাসেলের মতো ‘ট্রেবল’ শিরোপা জেতা। পারবে কি তারা?
×