ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল

খালেদা জিয়ার সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে মিথ্যাচার করেছেন

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

খালেদা জিয়ার সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে মিথ্যাচার করেছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে সম্পদ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দেয়া বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, মানুষকে বিভ্রান্ত করতে প্রধানমন্ত্রী সংসদে মিথ্যাচার করেছেন। তাঁর বক্তব্য যেন গণতন্ত্রের ওপর বিষাক্ত তীর নিক্ষেপ। এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে তীর্যক ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন তা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, বুধবার জাতীয় সংসদে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও সংশয় দানা বাঁধবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য রাজনৈতিক বিভেদ-বিভাজনকে আরও প্রসারিত করবে ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনাকে বাধা দেয়ার শামিল বলে গণ্য হবে। সরকার প্রধানের এ ধরনের প্রতিহিংসামূলক বক্তব্য এক ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহিতাও বটে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খালেদা জিয়াকে বিরাট চ্যালেঞ্জ মনে করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কেন এখন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এত তীব্র মিথ্যাচারে লিপ্ত হলেন? তার প্রধান কারণ হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের অনাচার-অপকর্মের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। খালেদা-ভীতির কারণেই ক্ষমতাসীনদের মস্তিষ্কে গোলযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যাচার ও অরুচিকর বক্তব্য দিয়ে সরকার খালেদা জিয়াকে হেয় করতে পারেনি। অজ¯্র উস্কানি সত্ত্বেও খালেদা জিয়া ধৈর্য, সংযম ও সম্ভ্রমের সঙ্গে সবকিছু মোকাবিলা করছেন। হিংসামূলক কুৎসা রটানোর জবাবেও তিনি নিজেকে সংযত রেখেছেন। এটাই হচ্ছে খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রনায়কোচিত ভূমিকা, বিএনপির সাফল্যের চাবিকাঠি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্রিজ, কালভার্ট, ফ্লাইওভার, সড়ক-মহাসড়ক, শেয়ারবাজার সবকিছুই লাগামহীন দুর্নীতির এক একটি মাইলফলক। আর এসব দুর্নীতির সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের শীর্ষ ব্যক্তিরাই জড়িত। সুতরাং দেশের বাইরে খালেদা জিয়ার সম্পদের কাল্পনিক ও মনগড়া কাহিনী রচনা করে কোন ফায়দা হবে না। সরকারপ্রধান যে নির্বাচনের আগে জনগণের দৃষ্টির সামনে মিথ্যার ফানুস ওড়াতে চাচ্ছেন সেটি দেশবাসীর অজানা নয়। ফখরুল বলেন, বিএনপি ‘ইনক্লুসিভ পলিটিক্স’ এ বিশ্বাসী। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে বিএনপি বদ্ধপরিকর। এটা দেশবাসীরও আকাক্সক্ষা। তিনি বলেন, দেশের মানুষ আগামী দিনের স্বচ্ছ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশাকে তিনি দুঃস্বপ্নে পরিণত করছেন। তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ভ্রান্ত-অবাঞ্ছিত তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী জনগণকে বিশ্বাস করাতে পারবেন না। মিথ্যাকে কখনোই সত্য বলে চালানো যাবে না। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।
×