স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ ॥ ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে বাচ্চা বদল বিতর্কের অবসান ঘটেছে। বিতর্কের এক মাস পর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রকৃত বাবা-মায়ের কাছে তুলে দেয়া হয়েছে আলোচিত কন্যাশিশুকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে পুলিশ, কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের উপস্থিতিতে বাবা-মায়ের কাছে কন্যা শিশুটিকে তুলে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকলেও পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে এক মাস পর কন্যাশিশুকে কোলে পেয়ে খুশি তার মা। এ নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধানসহ স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তারাও। হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ লক্ষ্মী নারায়ণ ও কন্যা শিশুর মা পাপিয়া জানান, গাইনী লেবার ওয়ার্ডে প্রসবের সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকের লেখায় ভুল ও গাফিলতির কারণেই এমনটি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ সদরের বাদেকল্পা গ্রামের মনোয়ার হোসেন মনুর স্ত্রী পাপিয়া আক্তার গত ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনী লেবার ওয়ার্ডে নরম্যাল সন্তান প্রসব করে। এসময় বলা হয় শিশুটি ছেলে। পাপিয়ার ভর্তি ও টিকেটেও শিশুর পরিচয় লেখা হয় ছেলেশিশু। শ্বাসকষ্টসহ কান্না না করায় ওইদিনই নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় শিশুটিকে। গত ১৮ ডিসেম্বর বিকেলে ছুটি দেয়ার সময় মেয়ে শিশুকে তুলে দেয়ায় মা পাপিয়া আক্তার ছেলে শিশুর দাবি করলে এই বিপত্তি দেখা দিয়েছিল। পরে আদালতের মাধ্যমে ডিএনএ টেস্টের উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। ডিএনএ টেস্টে নিশ্চিত হওয়ার পরই পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আদালতের নির্দেশে মা পাপিয়ার কাছে তুলে দেয় কন্যাশিশুকে। কন্যাশিশুকে কোলে পেয়ে আবেগে আপ্লুত মা পাপিয়া জানায়, গাইনী ওয়ার্ডে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ভুলের কারণেই এমনটি হয়েছে। তারপরও তিনি সন্তানকে ফিরে পেয়ে আনন্দিত। হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডের প্রধান ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ার হোসেন জানান, হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে কোন কারসাজি ছিল না এটি প্রমাণিত হওয়ায় তিনিও গর্ববোধ করছেন।
অপরিণত শিশুদের চিকিৎসায় ভরসার বাতিঘর বলে খ্যাত এই ওয়ার্ডের প্রতি আস্থা ধরে রাখতে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের জটিলতা এড়াতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। হাপসাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ লক্ষী নারায়ণ মজুমদার জানান, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমেই আর অবসান ঘটানো সম্ভব হয়েছে।