ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য আদান প্রদান ও ডেরার তালিকা হস্তান্তর করা হবে, ফেব্রুয়ারিতে অভিযান

জঙ্গী পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত বিশেষ বৈঠক

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

জঙ্গী পরিস্থিতি বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত বিশেষ বৈঠক

গাফফার খান চৌধুরী ॥ বাংলাদেশ ও ভারতে জঙ্গী পরিস্থিতির বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চলতি মাসেই প্রথম দফার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর সেটি হচ্ছে ভারতে। দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধতন কর্মকর্তারা তাতে অংশ নিচ্ছেন। বৈঠকে বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের দেয়া আরও তথ্য আদানপ্রদান হবে। দুই দেশের কোন কোন জায়গায় জঙ্গীদের ডেরা রয়েছে সে সংক্রান্ত একটি তালিকা হস্তান্তরিত হতে যাচ্ছে। আর সুনির্দিষ্টভাবে কারা জঙ্গীদের মদদ দিচ্ছে তারও একটি তালিকা হস্তান্তরের কথা রয়েছে। এরপর আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দুই দেশের সীমান্তবর্তী স্থানগুলোতে সাঁড়াশি অভিযান চালাবে দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সময়ের এবং নির্বাচন পরবর্তী সহিসংতা রোধে চলবে কম্বিং অপারেশন। পুলিশ সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্স বিভাগ সূত্রে আরও জানা গেছে, বাংলাদেশের আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই দেশের মধ্যে এমন একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এমন বৈঠকে আগ্রহী দুই দেশই। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভারতে পালিয়ে থাকা জঙ্গী, বাংলাদেশের জঙ্গী, ভারতের বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ও পাকিস্তানের অনেক জঙ্গী গোষ্ঠী এবং দেশটির কোন কোন সরকারী সংস্থা বড় ধরনের ফ্যাক্টর। নানাভাবেই পাকিস্তানের জঙ্গী গোষ্ঠী ছাড়াও কোন কোন সরকারী সংস্থা বাংলাদেশের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এজন্য তারা তৎপরতা চালাচ্ছে। আর এদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে ভারতের কিছু বিচ্ছন্নতাবাদী সংগঠনের। তারা ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশী জঙ্গীদের সহযোগিতা করতে যোগাযোগের চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোন কোন সংগঠনের সঙ্গে জঙ্গীদের যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে। জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের অর্থ ও অস্ত্রের যোগান দিয়ে থাকে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্স এ্যান্ড স্পেশাল এ্যাফেয়ার্স বিভাগের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জনকণ্ঠকে জানান, বাংলাদেশ ও ভারতে জঙ্গীবাদ সর্ম্পকে জানতে দুই দেশের মধ্যে একটি বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেটি হচ্ছে ভারতে। বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ ও ভারতে জঙ্গীবাদ সর্ম্পকে তথ্য আদানপ্রদান এবং জঙ্গীদের গ্রেফতার করা। সামনে নির্বাচন রয়েছে। জঙ্গী, সন্ত্রাসী, তাদের মদদদাতা একটি দেশ এবং বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলো যাতে নির্বাচনে কোন প্রকার প্রভাব বিস্তার বা নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটাতে না পারে সে লক্ষ্যেই এই বৈঠক। চলতি মাসেই ভারতে সেই বিশেষ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে ভারতে গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশী জঙ্গীদের বিষয়টিও আসবে। জঙ্গীদের দেয়া তথ্য মোতাবেক বাংলাদেশের কোথায় কোথায় জঙ্গী আস্তানা রয়েছে বা তাদের তৎপরতা রয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হবে। সেই সঙ্গে চলবে সাঁড়াশি অভিযান। বিশেষ অভিযান চলবে চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকেই। পুরো ফেব্রুয়ারি জুড়ে দুই দেশই এমন অভিযান চালাবে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর নির্বাচনের সামনে সীমান্তে বা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করে কেউ যাতে বাংলাদেশের নির্বাচনে নাশকতামূলক কর্মকা- চালাতে না পারে এজন্য দুই দেশের তরফ থেকেই কম্বিং অপারেশন চালানো হবে। তিনি আরও জানান, ভারতে গ্রেফতারকৃত জঙ্গীদের কাছ থেকে বাংলাদেশে দেশী-বিদেশীদের জঙ্গীদের তৎপরতা, তাদের সদস্য সংখ্যা, অর্থায়নকারী ব্যক্তি বা দল, ঢাকায় তাদের কি ধরনের কোথায় কোথায় নাশকতা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে, সেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কারা কিভাবে সহযোগিতা করছে, হুন্ডির মাধ্যমে কাদের মাধ্যমে জঙ্গীদের কাছে অর্থ লেনদেন হয়, বিস্ফোরকের মজুদ, কলকাতা থেকে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গীদের নাম ঠিকানা, পলাতক মেজর জিয়া সর্ম্পকে তথ্য পাওয়া, জঙ্গী নেতা হাতকাটা মাহফুজসহ এদেশে গ্রেফতার হওয়া ও পলাতক থাকা জঙ্গীদের সর্ম্পকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করা হবে।
×