ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আর্মি স্টেডিয়ামে কাল অনুষ্ঠান

সরকারের চার বছর পূর্তির বর্ণাঢ্য আয়োজন

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

সরকারের চার বছর পূর্তির বর্ণাঢ্য আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেয়াদের ৪ বছর পূর্ণ করছে আওয়ামী লীগ সরকার। দিন মাস বা বছরের হিসাবে এগিয়ে যাওয়া নয় শুধু, এ সময়ের মধ্যে বহু দূর এগিয়ে গেছে দেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণে কাজ করে চলেছেন জনগণের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নেতৃত্বের গুণে গণতন্ত্র যেমন রক্ষা পেয়েছে, তেমনি উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাসড়কে এখন ‘আমার সোনার বাংলা।’ আনন্দঘন মুহূর্তটি তাই ব্যাপক আয়োজনে উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে ‘পিতার স্বপ্নে কন্যার আহ্বানে কোটি মানুষের মিছিল চলেছে মুক্তির অভিযানে’ স্লোগানে আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হচ্ছে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার। মেয়াদ পূর্তির দিন শুক্রবার থাকবে দিনব্যাপী আয়োজন। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সরকারের অর্জনের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে। সে লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠানের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ সময় সংস্কৃতি সচিব ইব্রাহীম হোসেন, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা আমাদের সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল, আমরা সেগুলো একে একে পূরণ করে চলেছি। এসবের বাইরেও রাজনৈতিক অর্থনৈতিক অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল, যেগুলো আমরা সফলভাবে মোকাবেলা করেছি। এসব কারণে সরকারের ৪ বছর পূর্তি যথেষ্ট তাৎপর্য বহন করে। এই সময়টি দেশের জন্যও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সব বিষয় বিবেচনায় রেখে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের পুরো ছবি এক অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে না। তাই উল্লেখযোগ্য কর্মকা- সম্পর্কে জনগণকে জানানোর চেষ্টা করা হবে। অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল ৪টায়। চলবে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। আয়োজনে থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে গান নৃত্যসহ বিভিন্ন পরিবেশনা নিয়ে থাকবেন কয়েকশ’ শিল্পী। মুক্তিযুদ্ধের সময় গাওয়া গানগুলো গাইবেন স্বাধীন বাংলার শিল্পীরা। বিভিন্ন গণ আন্দোলনে গাওয়া গান শোনাবেন গণসঙ্গীত শিল্পীরা। শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের অংশগ্রহণে থাকবে একাধিক পরিবেশনা। তারুণ্যের প্রিয় ব্যান্ড সোলস, দলছুট, চিরকুট অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। গাইবেন জেমস, মমতাজের মতো জনপ্রিয় শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- ঠিক কীভাবে তুলে ধরা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মেয়াদ পূর্তির দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টেলিভিশন বেতারের পাশাপাশি তাঁর ভাষণটি একইসময় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রচার করা হবে। ভাষণে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান মন্ত্রী। বলেন, এর বাইরে প্রামাণ্যচিত্রের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ দফতর অধিদফতর ও সংস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরা হবে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমেও উন্নয়নচিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে ৩০ হাজার দর্শকের অংশগ্রহণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে সংখ্যা আরও বাড়ানো হতে পারে। সকলের জন্য উন্মুক্ত হলেও, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। এজন্য ভড়ঁৎঃযুবধৎপবষবনৎধঃরড়হ.পড়স এ লগইন করে বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। অনুষ্ঠানের গেট খুলে দেয়া হবে দুপুর ২টায়। বন্ধ করা হবে সন্ধ্যা ৭টায়। অনুষ্ঠানটি উপভোগ করা যাবে ঘরে বসেও। সরাসরি সম্প্রচার করবে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি ও বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভি। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১ যথাসময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক উন্নয়ন জরুরী মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় গত ৪ বছরে গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো কাজ সুসম্পন্ন করেছে। গত চার বছর দেশের সকল জেলায় শিল্পকলা একাডেমি নির্মাণ, দেশবরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের নামে স্মৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে শিল্পকলা একাডেমির শাখা চালু, মুক্তমঞ্চ স্থাপন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানটিকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক বলয় প্রতিষ্ঠা ও প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে হাতিরঝিলে ঢাকা অপেরা হাউজ নির্মাণের পরিকল্পনাসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আরও বেশকিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এসব কাজ সম্পন করে দেশকে এগিয়ে নিতে জনগণের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
×