ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘আগামী নির্বাচন কেউ বানচালের চেষ্টা করলে জনগণই প্রতিহত করবে’ ‘পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য পাগলের প্রলাপ’

জিয়া পরিবারের দুর্নীতি ॥ সংসদে শ্বেতপত্র প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

জিয়া পরিবারের দুর্নীতি ॥ সংসদে শ্বেতপত্র প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বহুল আলোচিত প্যারাডাইস পেপারসে প্রকাশিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দুই পুত্রের দুর্নীতির চিত্র ও বিভিন্ন দেশে পাচার করা অর্থের বিস্তারিত শ্বেতপত্র সংসদে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার, দুবাইয়ে কয়েক মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি, সৌদি আরবে মার্কেটসহ বিশ্বের আরও দেশে খালেদা জিয়ার ছেলেদের পাচারকৃত টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে, যা এখনও তদন্তাধীন। প্রধানমন্ত্রী এসব তথ্য সংসদে তুলে ধরে দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এদেশের জনগণের সম্পদ আর লুটপাট, পাচার করতে দেয়া হবে না। এ ধরনের অপকর্ম তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের পয়সা জনগণকে ফেরত দেয়ার যেসব আইনী প্রক্রিয়া রয়েছে তার ব্যবস্থা করা হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিস্তারিত এ তথ্য তুলে ধরেন। এবারই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বে ২৫৬ পৃষ্ঠার প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে ১৫৩ পৃষ্ঠাতেই স্থান পেয়েছে খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের বিভিন্ন দেশে পাচার করা অর্থের বিবরণ। দেশী ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত রিপোর্ট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি বা অন্য কোন অপরাধ হতে অর্জিত অর্থ নিয়মবহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে সরকারের সকল সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে ২০১২ সালে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর পাচারকৃত ২০ লাখ ৪১ হাজার সিঙ্গাপুর ডলার সেদেশ হতে ফেরত আনা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর আরেক পুত্র তারেক রহমান দেশের বাইরে প্রচুর অর্থ পাচার করেছে। তারেক এবং তার ব্যবসায়িক পার্টনার গিয়াসউদ্দিন আল মামুন যৌথভাবে একটি বিদেশী কোম্পানিকে কাজ দেয়ার বিনিময়ে প্রায় ২১ কোটি টাকার মতো সিঙ্গাপুরে সিটিএনএ ব্যাংকে পাচার করেছে। এ ব্যাপারে শুধু বাংলাদেশ নয়, আমেরিকার এফবিআইও তদন্ত করেছে। এর সূত্র ধরে এফবিআইয়ের ফিল্ড এজেন্ট ডেবরা ল্যাপরিভোট ২০১২ সালে ঢাকায় বিশেষ আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। এ মামলায় হাইকোর্টে তারেক রহমানের ৭ বছরের সাজা হয়। একইভাবে লন্ডনের ব্যাংকেও প্রায় ৬ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া বিশ্বের আরও অনেক দেশে খালেদা জিয়ার ছেলেদের টাকার সন্ধ্যান পাওয়া গেছে যা এখনও তদন্তাধীন। এর মধ্যে অন্যতম হলো: বেলজিয়ামে ৭৫০ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়ায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার, দুবাইতে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের বাড়ি, সৌদি আরবে মার্কেটসহ অন্যান্য সম্পত্তি। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পানামা পেপারস কেলেঙ্কারীর রিপোর্ট তুলে ধরে সংসদ নেতা বলেন, পৃথিবীর দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকায় খালেদা জিয়া তিন নম্বর হিসেবে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন মিডিয়াতে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। খালেদা জিয়া প্রকাশিত এ সকল সংবাদের কোন প্রতিবাদ জানায় নাই। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই এদেশের জনগণের সম্পদ আর লুটপাট, পাচার করতে দেয়া হবে না। এ ধরনের অপকর্ম তদন্তের মাধ্যমে উদঘাটন এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনগণের পয়সা জনগণকে ফেরত দেয়ার যেসব আইনী প্রক্রিয়া রয়েছে তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারাডাইস পেপারে নতুন করে প্রকাশিত নামের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দুই পুত্র তারেক রহমান ও আরাফাত রহমানের নাম। প্রকাশিত এ নথিতে তালিকায় শীর্ষেই আছে খালেদা পুত্রদের নাম। এছাড়া নতুন প্রকাশিত ২৫ হাজার নথিতে বের হয়ে আসছে আরও রাঘব বোয়ালদের নাম ও তাদের অর্থ পাচারের নানান তথ্য। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের এ সংক্রান্ত অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়ায় দুর্নীতি সম্পর্কে যেসব প্রকাশ পেয়েছে সেগুলো আমরা তুলে ধরেছি। এসব তথ্যের কতটুকু সত্য বা মিথ্যা তা তারাই (খালেদা জিয়া) হয়ত জবাব দিতে পারবেন। তবে আমরা যেসব অভিযোগ বা তথ্য পেয়েছি সেগুলোর ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। আমাদের কাজ চলছে পাচারকৃত অর্থ কীভাবে ফেরত আনা যায়। আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগগুলো তুলে ধরেছি, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো এসেছে তারা যাচাই-বাছাই করুক, মিথ্যা হলে কনটেস্ট (মোকাবেলা) করুক। এ প্রসঙ্গে পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কথা তুলে ধরে বলেন, পদ্মা সেতু নিয়েও আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছিল। আমরা তো বসে থাকিনি। আমরা অভিযোগের বিরুদ্ধে কনটেস্ট করেছি, চ্যালেঞ্জ দিয়ে প্রমাণ করেছি পদ্মা সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন দুর্নীতি হয়নি। আদালতেও তা প্রমাণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, আমি বার বার বলেছি, আমি নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য রাজনীতি করি না। ক্ষমতাটা আমার কাছে নিজের ভোগ বিলাস বা ভাগ্য গড়ার জন্য না, জনগণের সেবার জন্য। জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্য, তাদের উন্নয়নের জন্য। ক্ষমতাটা আমি সেইভাবেই দেখি। বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলাই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। সংসদে উত্থাপিত প্যারাডাইস পেপারসের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে কেইম্যান আইসল্যান্ড এবং বারমুডায় ২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে। এছাড়াও তার বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ওয়ান গ্রুপের তিনটি কোম্পানি খোলা হয় ট্যাক্স হেভেনে। তারেক জিয়ার প্রয়াত ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো বারমুডার বিভিন্ন কোম্পানিতে ২০০৫ সালে প্রায় ১ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল। কোকোর মৃত্যুর পর এই বিনিয়োগ তার স্ত্রী শর্মিলা রহমানের নামে স্থানান্তরিত হয়। অর্থাৎ অবৈধভাবে ট্যাক্স হেভেনে জিয়া পরিবারের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। প্যারাইডাইস পেপারস বিশ্বের ২৫ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেন ও মালিকানা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ভান্ডার। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক পৃথিবীর ১৮০টি দেশের ধনী, সুপরিচিত এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি। বেশির ভাগ তথ্যই বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের, যারা কর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে বিনিয়োগ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশের আরও যাদের নাম রয়েছে ॥ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সংসদে উত্থাপিত প্যারাডাইস পেপারসে বাংলাদেশের আরও যাদের নাম রয়েছে তারা হলে- আবদুল আউয়াল মিন্টু ও তার পরিবার, কাফিল এইচ এস মুয়ীদ, মেহবুব চৌধুরী, ইউসুফ রায়হান রেজা, ইশরাক আহমেদ, নোভেরা চৌধুরী, ফরহাদ গনি মোহাম্মদ, বিলকিস ফাতেমা জেসমিন, রজার বার্গ, আবুল বাশার, জেইন ওমর, বেনজির আহমেদ, মোহাম্মদ মোকমেদুল ইসলাম, মোতাজ্জারুল ইসলাম, আফজালুর রহমান, সুধির মল্লিক, জীবন কুমার সরকার, নিজাম এম সেলিম, এস সেলিমুজ্জামান, সৈয়দ সিরাজুল হক, এফএম জোবায়দুল হক, সালমা হক, কাজী জাফরুল্লাহ, কাজী রায়হান জাফর, মোহাম্মদ আমিনুল হক, নাজিম আসাদুল হক, তারিক একরামুল হক, ক্যাপ্টেন এম এ জাউল, খাজা শাহাদাৎ উল্লাহ, দিলীপ কুমার মোদী, সৈয়দ সানিয়া মির্জা, মির্জা এম ইয়াহিয়া, মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান, জুলফিকার হায়দার, উম্মে রুবানা, আজমত মঈন, নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, জাফর উমীদ খান, বাংলা ট্রাক লিমিটেড, আসমা মোনেম, এএসএম মহিউদ্দিন মোনেম, এএফএম রহমতুল বারি, মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, ফয়সাল চৌধুরী ও আহমেদ সমীর। আগামী নির্বাচন বানচালের কেউ চেষ্টা করলে জনগণই প্রতিহত করবে ॥ সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোঃ তাজুল ইসলামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়কন্ঠে বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে একটি দল (বিএনপি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে দেশের শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার মতো বীভৎস্য কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। কিন্তু এসব নাশকতা চালিয়ে তারা জনগণের সমর্থন পায়নি বরং দেশবাসীই তা প্রতিরোধ করেছে। আগামী নির্বাচনও কেউ বানচালের চেষ্টা করলে দেশের জনগণই ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে সেই বিশ্বাস আমার রয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নির্বাচন বানচাল ও সরকার উৎখাতের নামে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল নাশকতা থেকে কেউ-ই রেহাই পায়নি। এরা লঞ্চ, ট্রেন, বাস, ট্রাক, সিএনজিতে আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ধর্মের কথা বলে শত শত কোরান শরিফ পুড়িয়েছে, মসজিদে পর্যন্ত আগুন দিয়েছে। হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পর্যন্ত হত্যা করেছে। বিদ্যুত কেন্দ্র শুধু পুড়িয়ে দেয়নি, বিদ্যুত কেন্দ্রের ইঞ্জিনিয়ারকে পর্যন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, এত ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ও নাশকতার পরও দেশের ৪০ ভাগেরও বেশি মানুষ ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছে। সরকারের ধারাবাহিকতা রয়েছে বলেই দেশের মানুষ তার সুফল পাচ্ছে। আগামীতেও সরকারের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে আমরা যেসব মেগা প্রকল্পগুলো নিয়েছি তা সম্পন্ন করতে পারবও, দেশ আরও উন্নত ও এগিয়ে যাবে। তবে দৃঢ়কণ্ঠে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনও কেউ যদি বানচালের চেষ্টা করে জনগণই তা প্রতিরোধ করবে, সেই বিশ্বাস আমার রয়েছে। পদ্মা সেতু নিয়ে খালেদা জিয়ার বক্তব্য ‘পাগলের প্রলাপ’ ॥ ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য ‘পাগলের প্রলাপ’ হিসেবে ধরে নেয়াই ভাল। কারণ প্রবাদ আছে পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়। তিনি বলেন, সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী বলেছেন পদ্মা সেতু নাকি জোড়াতালি দিয়ে বানানো হচ্ছে এবং তাঁর দলের নেতাদের ওই সেতু না উঠতে বলেছেন। এর আমি কী জবাব দেব? ’৯৬ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসার পর তখনই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেই। জাপান সফরের সময় পদ্মা ও রূপসা সেতু দুটি সেতু নির্মাণে অর্থায়নের জন্য দেশটির সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই। জাপান সরকার সমীক্ষা করে যে জায়গা নির্ধারণ করে, সেইস্থানে পদ্মা সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনও করি। কিন্তু বিএনপি সরকার ক্ষমতা এসে এই সেতু নির্মাণ বন্ধ করে দেয়। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর পদ্মা সেতু পুনরায় নির্মাণ করার যখন উদ্যোগ নেই, তখন শুরুতেই হোঁচট খাই। সেখানে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ আনলে আমি চ্যালেঞ্জ করি। আমরা প্রমাণ করেছি সেখানে কোন দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী যেটা বলেছেন তার কী জবাব দেব। একটা সেতু কীভাবে নির্মাণ কর হয়, একেকটা পার্ট জোড়া দিয়েই সেতু নির্মাণ হয়। কিন্তু বিএনপি নেত্রী কী বললেন! কাজেই পাগলের কথায় বেশি মনোযোগ না দেয়াই ভাল। কারণ কোন সুস্থ মানুষ একথা বলতে পারেন না। কাজেই খালেদা জিয়ার বক্তব্য পাগলের প্রলাপ হিসেবে ধরে নেয়াই ভাল। আর পদ্মা সেতু নির্মাণের পর ওই এলাকার লোকজনই নজরদার করবে যে বিএনপির নেতাকর্মীর পদ্মা সেতুতে ওঠেন কি না। চরজানাজায় বিমানবন্দর না হওয়াই ভাল ॥ পদ্মাসেতুর ওই পাড়ে জাজিরায় বিমানবন্দর না হওয়াই ভাল বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওই এলাকা এতো ঘন বসতিপূর্ণ এলাকা যে, তা সরিয়ে বিমানবন্দর করা সমীচীন বলে মনে করছি না। জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মাসেতু যেখানে হচ্ছে, ওই পাড়ে চর জাজিরাসহ ওই এলাকায় বিমানবন্দর করার সমীক্ষা চালাচ্ছি। তবে সেখানে আমাদের অসুবিধা হলো এটা চর। কাজেই ওই চরে বিমানবন্দরটা চাপ নিতে পারবে কিনা? মাটির সেই শক্তি আছে কিনা এটার একটা সমীক্ষা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত এটা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। আর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নতুন একটা কিছু করতে গেলে সমস্যা হয়ে যায়। সেখান থেকে বসতি সরিয়ে বিমানবন্দর করা সমীচীন বলে আমি মনে করি না। কাজেই আরও সমীক্ষা চালাচ্ছি ফাঁকা জায়গা এবং যেখানে মজবুত সেখানে বিমানবন্দর হতে পারে। যেখানে বিমান উঠানামা করলে সমস্যা হবে না। সমীক্ষা সফল হলে সেখানে আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করব।
×