ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সংসদে সাধারণ আলোচনা শুরু

প্রকাশিত: ০৮:০২, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সংসদে সাধারণ আলোচনা শুরু

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ধন্যবাদ প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং প্রস্তাবটি সমর্থন করেন হুইপ মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে রাতে শুরু হওয়া সাধারণ আলোচনায় সূচনা দিনে বক্তব্য রাখেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। আলোচনা শেষে স্পীকার রাত সোয়া ৯টায় সংসদ অধিবেশন আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মুলতবি ঘোষণা করেন। ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সব দিক থেকে দেশ এগিয়ে চলেছে। নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ আজ প্রায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের অর্থনীতি অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় শক্তিশালী। তিনি বলেন, ১০ লক্ষাধিক মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ায় আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও প্রাজ্ঞ কূটনৈতিক তৎপরতায় অচিরেই রোহিঙ্গা সমস্যারও সমাধান হবে। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পরাজিত পাকিস্তানের থেকে বর্তমানে বাংলাদেশ সব সূচকে এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করে অনেক বিশ্ব নেতাই বিস্ময় প্রকাশ করছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ৯ বছরে প্রবৃদ্ধি কোনভাবেই ৬ ভাগের নিচে নামেনি, এখন তা ৭ ভাগ পেরিয়ে গেছে। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে এখন সম্মানের চোখে দেখে। বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশ সবদিক থেকে এগিয়ে গেলেও বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দলের কারণে বাংলাদেশকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছোট ছেলের পাচারকৃত দুর্নীতির টাকা শনাক্ত করে ফেরত দেয়ার সময় শর্ত দেয় যে, এই টাকা যেন দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে ব্যয় করা হয়। এটা কত বড় লজ্জা আমাদের জন্য। প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রীর আরেক পুত্র তারেক রহমানকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে না দিতে দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা রিপোর্ট দিয়েছে। এটাও আমাদের জন্য লজ্জার। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আজ বৈশ্বিক সাহসের নাম। শেখ হাসিনা যেভাবে মানবতার পক্ষে হাত বাড়িয়েছেন, গুটিকয়েক দেশ ছাড়া সারা বিশ্ববাসীই তার পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যদি ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট হত্যা করা না হতো তবে বাংলাদেশ ১৯৯০ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতো। বিদায়ী বছরে অনেক সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, এটা পুরো জাতির গর্ব। আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে একদিকে দেশকে উন্নয়ন দিচ্ছেন, অন্যদিকে মানুষের কল্যাণ ও আত্মমর্যাদা দিয়ে বেঁচে থাকার মর্যাদা দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা এদেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলেই এদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি তাঁদের এতো মমত্ববোধ। জেনারেল জিয়া ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া দু’জনই জন্ম নিয়েছেন ভারতে। তারেক রহমানের জন্মও পাকিস্তানের করাচিতে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জেনারেল এরশাদেরও জন্ম ভারতে। তাই বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে এদের কোন সম্পর্ক নেই, কোন মমত্ববোধ নেই।
×