ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা উত্তর নির্বাচন

১৩ জানুয়ারি প্রার্থী ঘোষণা করবে ২০ দলীয় জোট ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

১৩ জানুয়ারি প্রার্থী ঘোষণা করবে ২০ দলীয় জোট ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উপ-নির্বাচনে (ডিএনসিসি) ২০ দলীয় জোট ১৩ জানুয়ারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে প্রার্থী ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান। ডিএনসিসি নির্বাচনে জামায়াতের এক প্রার্থী ঘোষণা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা নিয়ে কোন সমস্যা হবে না। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এটা সমাধান করব। এ নির্বাচনে ২০ দল একক প্রার্থী ঘোষণা করবে। তিনি বলেন, আমরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও সেনা নিয়োগ করা হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে হলে এ নির্বাচনের সাতদিন আগে সেনা মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনা করার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে আমাদের আগের বক্তব্য সঠিক। কারণ নির্বাচন কমিশন যে পদ্ধতিতে গঠন করা হয়েছে, সেই পদ্ধতি সঠিক ছিল না। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার দল নিরপেক্ষ নন। তবে ডিএনসিসি নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পারবে কিনা এবং ওই নির্বাচনটি কেমন হবে। আমরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন ডিএনসিসি নির্বাচন সুষ্ঠু করার চেষ্টা করবেন এবং যে আইনগুলো রয়েছে, সেগুলো প্রয়োগ করবেন। সম্পূর্ণ দল নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন করার ব্যবস্থা করবেন। এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সোমবার রাতে ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে জোটের শীর্ষ নেতারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন যাকে মনোনয়ন দেবেন, জোট তাকেই সমর্থন দেবে। ডিএনসিসিতে বিএনপি জোটের একক প্রার্থী থাকবে- রিজভী ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের একক ও অভিন্ন প্রার্থী থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তবে এ নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হতে পারে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সবাই একত্রে লড়াই করে শেখ হাসিনার সিংহাসন ধুলায় লুটিয়ে দেব। মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে নরসিংদী জেলা বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ কথা জানান। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, নরসিংদী জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মহসিন হোসাইন বিদ্যুৎ ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিদ্দিকুর রহমান নাহিদের মুক্তির দাবিতে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রিজভী বলেন, বানোয়াট ও ভুয়া নথি বানিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সপ্তাহে দু’দিন আদালতে হাজির করানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে অসত্য ও বানোয়াট কথা বলবেন না। তিনি বলেন, মিথ্যাচার করে কেউ ইতিহাসে টিকে থাকেনি, থাকতে পারবে না। জঙ্গীবাদ নিয়ে বিএনপিকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এর সঙ্গে সরকারী দল জড়িত থাকতে পারে। প্রতিবাদ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকারের সময় সংক্ষিপ্ত হয়ে এসেছে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সময় নেই তাই বক্তব্য নয়, আন্দোলনের মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বর্তমান সরকারকে বাধ্য করতে হবে। মঈন খান বলেন, পৃথিবীতে কেউ ক্ষমতা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেয় না। যতক্ষণ না জনগণ তাদের বাধ্য করেছে। তাই এই সংক্ষিপ্ত সময়ে মানুষ গুম ও গ্রেফতার করে এবং বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ক্ষমতাকে দীর্ঘ করা যাবে না। তিনি বলেন, আজকের স্বাধীনতা, স্বাধীনতা নয়, এটা স্বাধীনতার খোলস মাত্র। স্বাধীনতার নামে দেশের মানুষকে আজ পরাধীন করে রাখা হয়েছে। যে দেশের মানুষ কথা বলতে পারে না, যে দেশে গণতন্ত্র নেই, সেই দেশ কখনও স্বাধীন হতে পারে না। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ৪র্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী করে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বারের মতো বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করা হবে। আমরা ২০১৮ সালের মধ্যেই খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সেই অর্জন করব। মঈন খান বলেন, ১০ বছরে বর্তমান সরকার ৪’শ জনকে গুম করেছে। এটা আমাদের হিসেব নয়, অধিকারের হিসেব। সুতরাং এদেরকে আমরা ফেরত চাই। কারণ তাদের বাবা-মাকে আমরা জবাব দিতে চাই। এ ছাড়া গত ১০ বছরে বিরোধীদলের ৪ হাজার নেতাকর্মী খুন করা হয়েছে। এর বিচার করতে হবে এবং হিসেব দিতে হবে। বর্তমান সরকার বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নামে ৪০ হাজার মামলা দিয়েছে। বিএনপি শান্তিপ্রিয় দল। তাই আমরা আইনের মাধ্যমে এসবের বিচার করব। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খাইরুল কবির খোকনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারি বাবু, ওলামা দলের সভাপতি আব্দুল মালেক প্রমুখ।
×