ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

একনেকে ১৩ প্রকল্প অনুমোদন ॥ ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৪১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা

যানজট নিরসনে কালশীতে আরেকটি ফ্লাইওভার নির্মিত হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

যানজট নিরসনে কালশীতে আরেকটি ফ্লাইওভার নির্মিত হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর যানজট নিরসনে গত সাড়ে আট বছরে নির্মাণ করা হয়েছে ছয়টি ফ্লাইওভার। এবার নতুন আরও একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রাজধানীর মিরপুর ইসিবি চত্বর হতে সহজে যাতায়াতের জন্য কালশী মোড়ে নির্মিতব্য এ ফ্লাইওভারের দৈর্ঘ্য হবে ৮৪৪ মিটার। সেই সঙ্গে বিদ্যমান প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়কও সম্প্রসারণ করা হবে। এ সংক্রান্ত ‘ইসিবি চত্বর হতে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশী মোড়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পেয়েছে। জমি অধিগ্রহণ, সড়ক প্রশস্তকরণ ও ফ্লাইওভারে নির্মাণের এ প্রকল্পে ব্যয় হবে প্রায় ৬১৩ কোটি টাকা। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এটিসহ মোট ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব প্রকল্পে অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৪১৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভাশেষে প্রকল্পগুলো সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রী জানান, ঢাকার যানজটপ্রবণ অনেক জায়গায় ফ্লাইওভার থাকলেও মিরপুরে কোন ফ্লাইওভার নেই। তাই মিরপুরে ফ্লাইওভার নির্মাণের প্রকল্পটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সুখবর। ফ্লাইওভার নির্মাণ ও সড়ক প্রশস্ত হলে মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা, মহাখালী ও রামপুরার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। তাছাড়া সড়কে যানবাহন ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজট কমে আসবে। জানা গেছে, ২০১৯ সালে জুনের মধ্যে ফ্লাইওভার নির্মাণ ও সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শেষ করা হবে। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এসডব্লিউও ও পশ্চিম বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে মিরপুরসহ ঢাকা সিটির পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে, টঙ্গী, বিমানবন্দর, গুলশান, বনানী ও অন্যান্য এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে। এছাড়া মিরপুর ডিওএইচএসের কাছাকাছি এলাকায় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ চলছে। তাই ফ্ল্যাট হস্তান্তরের পরে ভবিষ্যতে যানজট কমানোও সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ১১ দশমিক ১৬ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান, তিন লাখ ৮৮ হাজার ২৪৪ দশমিক ৬১ ঘনমিটার মাটি কাটা, মাটি ভরাট করা, তিন হাজার ৭০০ মিটার পেভমেন্ট নির্মাণ, তিন হাজার ৭০০ মিটার ভিত্তি নির্মাণ, পরামর্শক নিয়োগ, ৬০৯ বর্গমিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ সম্প্রসারণ, ৫০০ মিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল, ৭ হাজার ৪০০ মিটার ফুটপাথ নির্মাণ এবং ৩ হাজার ৭০০ মিটার মিডিয়ান নির্মাণ। মন্ত্রী জানান, অনুমোদিত ১৩ প্রকল্পের সবই নতুন। মোট ব্যয়ের মধ্যে সরকারী অর্থায়ন ১১হাজার ৮০৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৫৯২ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা। অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ২২৭টি উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প-প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ৯২৫ কোটি টাকা; সিরাজগঞ্জ জেলার যমুনা নদী হতে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমির উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল রক্ষা প্রকল্প- ব্যয় ৫০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা; চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় সাঙ্গু এবং ডলু নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প- ব্যয় ৩৩৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা; পানি সরবরাহে আর্সেনিক ঝুঁকি নিরসন প্রকল্প- ব্যয় এক হাজার ৯৯০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, ঢাকাস্থ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প- ব্যয় ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা; রাজশাহীর তালাইমারী চত্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্কয়ার নির্মাণ প্রকল্প- ব্যয় ৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা; খুলনা শহরে এডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প- ১২৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা; ১৬০টি উপজেলায় শিক্ষার জন্য আইসিটি ট্রেনিং এবং রিসার্স সেন্টার নির্মাণ (২য় পর্যায়)- ব্যয় ৮৪৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা; মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৫ম পর্যায়)- ব্যয় ২১৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা; লালমনিরহাট টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প- ব্যয় ১০০ কোটি ১৩ লাখ টাকা; ঢাকা-সিলেট-তামাবিল-জাফলং জাতীয় মহাসড়কের জৈন্তা থেকে জাফলং পর্যন্ত (তামাবিল ল্যান্ডপোর্ট কানেকটিং ও বাল্লাঘাট সংযোগ সড়কসহ) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প- ১৯০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা এবং নির্বাচিত বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের সম্প্রসারণ (উর্ধমুখী) প্রকল্প- ব্যয় পাঁচ হাজার ২৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
×