ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশের নির্মম নির্যাতনে জীবন্মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নির্মাণ শ্রমিক

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

পুলিশের নির্মম নির্যাতনে জীবন্মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নির্মাণ শ্রমিক

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ পুলিশের নির্মম নির্যাতনে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এক নির্মাণ শ্রমিককে জেল কর্তৃপক্ষ বরিশাল সদর হাসপাতালে ভর্র্তি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই শ্রমিকের স্ত্রী এ্যামিলি বেগম। মঙ্গলবার সকালে এ্যামিলি বেগম বানারীপাড়া প্রেসক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, গত ৩ জানুয়ারি বানারীপাড়া পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের সুলতান হোসেন মোল্লার বাড়িতে দিনের বেলায় চুরি সংঘটিত হয়। ওইদিনই সুলতান হোসেন মোল্লা তার (এ্যামিলি) স্বামী নির্মাণ শ্রমিক শাহিন হাওলাদারকে আসামি করে স্বর্ণালঙ্কারসহ ২ লাখ টাকার মালামাল চুরি হওয়ার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করেন। বিকেল চারটার দিকে বানারীপাড়া থানার এসআই মোশারেফ হোসেন, মামলার বাদী সুলতান হোসেন মোল্লাসহ আরও দুই তিনজন এ্যামিলি বেগমের পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের নাহার ভিলার ভাড়াটিয়া বাসায় এসে তার স্বামীকে খুঁজতে থাকে। তাকে বাড়িতে না পেয়ে তার মোবাইল নাম্বার নিয়ে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই এসআই মোশারেফ হোসেন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শাহিন হাওলাদারকে গ্রেফতার করে। এ্যামিলি আরও জানান, রাতে তার স্বামী শাহিন হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে পুলিশ নির্মম নির্যাতন করে। পরদিন ৪ জানুয়ারি তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। জেল কর্তৃপক্ষ শাহিনকে গুরুতর অবস্থায় ওইদিনই বরিশাল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ্যামিলি বেগম জানান, ৪ জানুয়ারি এসআই মোশারেফ তার পিতা জাকির হোসেন ও মা মাহিনুর বেগমকে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সিনেমা হলের পূর্ব পাশের ভাড়া বাসা থেকে আটক করার সময় ঘর থেকে তিন লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুটপাট করে নিয়ে যায়। পরে তার পিতা-মাতাকে ছেড়ে দিয়ে তিন লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়। এ্যামিলি বেগম জানান, সুলতান মোল্লার ঘরে চুরি সংঘটিত হওয়ার সময় তার স্বামী সারাদিন বাড়িতেই ছিল। দুপুরের খাবার খেয়ে বাজারে বের হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চুরির ঘটনার সঙ্গে তার স্বামীর কোন সম্পৃক্ততা নেই। থানায় বসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোশারেফ হোসেন তার স্বামীকে নির্মম নির্যাতন করায় বর্তমানে সে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। দুটি হাত প্রচ-ভাবে ফুলে কালো দাগ হয়ে গেছে। এছাড়া পায়ের তলা থেকে রক্ত ঝড়ছে বলেও এ্যামিলি বেগম উল্লেখ করেন। তিনি (এ্যামিলি) প্রসাশনের উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে তার স্বামীকে অহেতুকভাবে থানায় আটকিয়ে এ নির্মম নির্যাতনের বিচার দাবি করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই মোশারেফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি থানায় বসে শাহিন হাওলাদারকে মারধরের বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তবে বাসা থেকে মালামাল লুটপাটের পর ফেরত দেয়ার বিষয়ে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
×