ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেধাবী প্রতিবন্ধীর আলোকিত পথ গড়ার অন্তরায় এখন দারিদ্র্য

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

মেধাবী প্রতিবন্ধীর আলোকিত পথ গড়ার অন্তরায় এখন দারিদ্র্য

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ৯ জানুয়ারি ॥ প্রতিবন্ধিতা দমাতে পারেনি জাকারিয়াকে। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভাল ফল অর্জন করেও হাসি নেই পরিবারে। সামনে আলোকিত পথ গড়ার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্রতা। এছাড়া জাকারিয়ার পরিবারে রয়েছে আরও তিনজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। জানা গেছে, সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বড় ছেলে এ. কে. এস. ডি. আদেল উদ্দিন হাওলাদার স্কুল এ্যান্ড কলেজের ছাত্র জাকারিয়া হাওলাদার শারীরিক প্রতিবন্ধী। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় সে জিপিএ-৩.৩৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে পড়াশোনা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছে। জাকিরয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাঁটতে না পারায় তার স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হয়। কিন্তু পড়াশোনার প্রতি প্রবল ইচ্ছে ও আগ্রহ। নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও পড়াশোনা করে ভাল কোন কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হতে চায়। তারা ৩ ভাই-বোনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমনকি তার বাবাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে খাবারটুকুই যোগার করা কষ্টকর। তবুও শারীরিক প্রতিবন্ধী তিন ভাই- বোনই পড়াশোনা করছে। জানা গেছে, গৃহকর্তা বাবুল হাওলাদার ও তার তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামে তাদের বসবাস। বাবুল হাওলাদার সংসারের খরচ চালাতে ঢাকা শহরে ভিক্ষা করে যে আয় করে তা দিয়েই কোন রকম খেয়ে না খেয়ে চলে পরিবারটি। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এদের হাত-পা কোমর চিকন হয়ে বাঁকা হয়ে গেছে। ফলে হাঁটাচলা করতে পারে না। এর মধ্যে বড় সন্তান জাকারিয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় ভাল ফল করেছে। বাকি দু’জন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাদের মা হুইল চেয়ারে করে বিদ্যালয়ে নেয়া-আনা করেন। আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় এদের শিক্ষাসহ জীবন ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
×