ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাউবোর সঙ্গে মৌখিক চুক্তি

রাজশাহীতে পদ্মার টি বাঁধে গ্যারেজ ॥ ক্ষুব্ধ দর্শনার্থী

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

রাজশাহীতে পদ্মার টি বাঁধে গ্যারেজ ॥ ক্ষুব্ধ দর্শনার্থী

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ মহানগরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বিশাল জায়গা দখল করে সাইকেল ও মোটরসাইকেলের গ্যারেজ করা হয়েছে। নগরীর শ্রীরামপুরে পদ্মা নদীর টি-গ্রোয়েনের পাশের ওই এলাকাটি দর্শনার্থীদের খুব প্রিয়। সেখানে আসা দর্শনার্থীদের জিম্মি করতেই খোলা হয়েছে গ্যারেজ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় দর্শনার্থীরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জায়গাটি দখলমুক্ত রাখতে পাউবোর পক্ষ থেকে কাঁটাতারের বেড়াও দেয়া হয়েছে। কিন্তু পাউবোর সেই কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরেই সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে চলছে গ্যারেজের কার্যক্রম। দখলকারীদের দাবি, পাউবোর সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করে তারা জায়গাটিতে গ্যারেজ করেছেন। এ জন্য কিছু টাকাও দিতে হয়। তবে পাউবো বলছে, অবৈধ এই গ্যারেজের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, সাজানো-গোছানো সুন্দর ওই জায়গাটিতে থাকা কয়েকটি গাছে ‘গাড়ি পার্কিং’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙ্গানো। ‘সাইকেল ও মোটরসাইকেলের গ্যারেজ’ নামে টাঙ্গানো হয়েছে আরেকটি সাইনবোর্ড। সেই গ্যারেজে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে প্রতি মোটরসাইকেলের জন্য আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা। স্থানীয়রা জানান, দেড় মাস আগে রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে পদ্মাপাড়ের শ্রীরামপুরের ওই এলাকাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। রাষ্ট্রপতির ভ্রমণের একদিন পরই সেখানে গ্যারেজটি করা হয়। শ্রীরামপুরের মাবুদ হোসেন, জিবলু শেখ ও ইয়াসিন আলী নামে তিন যুবক গ্যারেজটি চালাচ্ছেন। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে সু-সম্পর্ক থাকায় কেউ তাদের উচ্ছেদ করে না। টি-বাঁধ এলাকায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, গ্যারেজের আশপাশে খোলা জায়গায় মোটরসাইকেল পার্কিং করতে গেলে তাতে বাধা দেন কথিত গ্যারেজ মালিকরা। তাদের কথা, টি-বাঁধ ও সড়কের পাশে সাইকেল ও মোটরসাইকেল রাখায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে পুলিশ ও পাউবোর। গ্যারেজ মালিকদের এ বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাই সব মোটরসাইকেল তাদের গ্যারেজেই রাখতে হবে। এভাবে তারা নিজেদের গ্যারেজে দর্শনার্থীদের মোটরসাইকেল রাখতে বাধ্য করেন। কেউ গ্যারেজে মোটরসাইকেল না রাখতে চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ দর্শনার্থীদের। গ্যারেজ মালিকদের একজন ইয়াসিন আলী। তিনি বলেন, গ্যারেজের পাশেই পুলিশ লাইন। এ এলাকা দিয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা হাঁটাহাঁটি করেন। তাই তারা যেখানে সেখানে মোটরসাইকেল পার্ক না করার জন্য দর্শনার্থীদের বলে থাকেন। এসব মোটরসাইকেল তাদের গ্যারেজেই রাখা হয়। ইয়াসিন বলেন, গ্যারেজ খুলতে পাউবোর কাছ থেকে জায়গা ইজারা নেয়া হয়নি। তবে মৌখিকভাবে পাউবোর অনুমতি নেয়া আছে। মৌখিক ওই চুক্তি অনুযায়ী প্রতিমাসে পাউবোকে টাকা দিতে হয় বলেও দাবি করেন ইয়াসিন আলী। তবে টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পাউবোর রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, এলাকাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সেখানে গ্যারেজ করা হলে অবশ্যই সেটা অবৈধ। মোখলেসুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগেই তিনি এলাকাটি ঘুরে এসেছেন। তখন গ্যারেজটি চোখে পড়েনি। কেউ গ্যারেজ ব্যবসা চালালে তা উচ্ছেদ করা হবে বলে জানান তিনি।
×