ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভোজসভায় ভাষণ

হয়রানিমুক্ত সেবা দিন ॥ পুলিশকে রাষ্ট্রপতি

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

হয়রানিমুক্ত সেবা দিন ॥ পুলিশকে রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সেবা প্রার্থীদের হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদানে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হয়রানিমুক্ত সেবা পাওয়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। এ কথা বিবেচনায় রেখে জনগণের জন্য হয়রানিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সোমবার পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে রাজারবাগ পুলিশলাইনে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক নৈশ ভোজসভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন। বাসস জানায়, রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেন, দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ সাধারণত থানা অথবা পুলিশের কাছে যেতে চায় না। তারা খুব অসহায় হয়ে পড়লেই তখন বাধ্য হয়ে পুলিশের সাহায্য নেয়। সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশের ওপর যখন জনগণের পূর্ণ আস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তাদের দুঃসময়ে কাক্সিক্ষত সেবা পাবে, তখনই তারা মনে করবে পুলিশ তাদের বন্ধু। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, পুলিশ সন্ত্রাসী ও জঙ্গী তৎপরতা দমনে, অপরাধীদের আটক করতে এবং স্পর্শকাতর মামলার দ্রুত চার্জশীট দেয়ার পাশাপাশি সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রেখে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ক্রমান্বয়ে সাইবার অপরাধ বাড়ছে এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বেশিরভাগই কিশোর ও তরুণ প্রজন্ম। মাদকাসক্তি ও মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার তরুণদের অপরাধের দিকে ধাবিত করছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, দেশ ও দেশের মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। বক্তব্যের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ দেশপ্রেমিক সৈনিকগণ বিশেষ করে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে নৃশংসভাবে নিহত পুলিশ সদস্য এবং বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মরত অবস্থায় নিহত পুলিশকে পেনশন দেয়ার দাবি বিশেষ দরবারে ॥ স্টাফ রিপোর্টার জানান, কর্মরত অবস্থায় নিহত পুলিশ সদস্যদের পেনশন সুবিধা প্রদান, পুলিশ হাসপাতালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ, পুলিশে আউটসোর্সিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরসহ নানা বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে এক বিশেষ দরবারে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানা গেছে, কনস্টেবল, এএসআই, এসআই ও পরিদর্শকদের তরফ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে; যাতে সেই ঋণে পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল কিনতে পারেন। ঋণের টাকা বেতন থেকে মাসিক হারে বা সুবিধাজনকভাবে কেটে নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে মোটরসাইকেলটি পুলিশ সদস্যের মালিকানাধীন হবে। পুলিশ হেফাজতে বিশেষ করে রিমান্ডে বা কোন কারণে আটকের পর পুলিশ হেফাজতে থাকার মেয়াদসহ অন্যান্য আইন আরও শিথিল করার প্রস্তুাব দেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী কাউকে আটক বা গ্রেফতারের সময়ের পর থেকে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে আটক বা গ্রেফতারকৃতকে যথাযথ আদালতে হাজির করতে হয়। পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক ছাড়াও বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×