ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে খেজুর গুড় বিক্রির ধুম

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

যশোরে খেজুর গুড় বিক্রির ধুম

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ খেজুরের গুড় আর পাটালির জন্য বিখ্যাত যশোর। দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু বদলে গেলেও বদলায়নি যশোরের গুড় ও পাটালি তৈরির রেওয়াজ। অতীত এই ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বৃহত্তর খাজুরা অঞ্চলের গাছিরা। খাজুরা নামকরণের সঙ্গে খেজুর গাছ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ অঞ্চলে খেজুর গাছের আধিক্য থাকার কারণে এখানকার নামকরণ করা হয়েছে খাজুরা। সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন, বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর ও বন্দবিলা এই তিন ইউনিয়নের ব্যবসার মূল কেন্দ্র হলো খাজুরা বাজার। খাজুরা কালীবাড়ী মন্দিরের পশ্চিমে অবস্থিত একমাত্র খেজুর গুড়ের হাটটিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সারিবদ্ধভাবে গুড় পাটালি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবার শীতেও জমে উঠেছে খাজুরার এই গুড়ের হাট। খুচরা গুড় কেজি প্রতি ১০০ টাকা, পাটালি কেজি ১৩০ টাকা, বিশেষভাবে তৈরি খেজুর গুড়ের ভেতরে নারিকেল ও বাদামের দেয়া পাটালি কেজি ১৫০ টাকা। অন্যদিকে ঐহিত্যবাহী বাওনডাঙ্গার পাটালি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫ থেকে ৭ কেজির গুড় ভর্তি ভাড় বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা। সপ্তাহে দুই দিন বৃহস্পতিবার ও রবিবার খাজুরার হাট থেকে কয়েক ট্রাক গুড় ভর্তি হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়। এদিকে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী জেলা শহরের বাজার থেকে গুড় নামীয় এক ধরনের মালার পাটালি কিনে চিনির সঙ্গে জ্বালিয়ে ভেজাল পাটালি তৈরি করে খেজুরের গুড় পাটালি হিসেবেই আবার বাজারজাত করছে। তারা এলাকার মানুষকে বোকা বানাতে না পেরে শহরের মানুষকে প্রতিনিয়ত বোকা বানাচ্ছে। শীতের মৌসুম ছাড়াও তারা বছরে বার মাসই এই ভেজাল পাটালি যশোরসহ পার্শ্ববতী ঝিনাইদহ, নড়াইল ও মাগুরা শহরের বাজারগুলোতে বিক্রি করছে। অনেকে এই ভেজালের বিষয় মাথায় রেখে খাঁটি গুড় পাটালি সরাসরি গ্রামে গাছির বাড়ি থেকে সংগ্রহ করছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, অনেক গাছি গুড়ের মুখ সাদা করে বেশি দামে বিক্রি করার জন্য গুড়ের সঙ্গে চিনি ও ফিটকারি মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করতে আসছে। এক পাটালি ব্যবসায়ী বলেন, এখন খেজুর গাছ আগের থেকে অনেক কম। গাছে রসও তেমন বেশি হয় না। চিনি দেয়া পাটালি ও চিনি ছাড়া পাটালির ভিতরে কোন পার্থক্য নেই। দেখতে খেতে একই রকম সুস্বাদু। একটু চিনি ব্যবহার করলে পাটালি শক্ত হয়, দূর দূরান্তে বহন করা যায় এবং অনেক দিন রেখে খাওয়া যায়। আর চিনি ছাড়া পাটালি বেশি দিন রাখা সম্ভব না, নরম হয়ে গলে যায়।
×