ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

শিক্ষকরা অনশন করছেন, শিক্ষামন্ত্রীকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। মনের ভেতর খচখচ করছিল ব্যাপারটা। অজানা আশঙ্কাও ভর করছিল নিশ্চয়ই অনেকের মনে। শেষ পর্যন্ত শিক্ষকরা অনশন ভেঙেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে। যাক, স্বস্তি ফিরে এলো। এমপিওভুক্তির (মান্থলি পেমেন্ট-অর্ডার) দাবিতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। আমরণ অনশন ও অবস্থান ধর্মঘটের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন সময়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। তবু ২০১৬-১৭ আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে নন-এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি অথবা বাড়তি ভাতার ব্যবস্থা করতে কোনও বরাদ্দ রাখা হয়নি। এ কারণে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। তাদেরকে ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করে ৩১ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন করছিলেন তারা। শেষে শুক্রবার অনশন ভাঙার ঘোষণা আসে। গত সপ্তাহে ঢাকার বড় স্বস্তি ছিল এটি। চলাচলে বিঘ্নতা খবরের কাগজের পাতায় সড়ক বিভাজক বিপজ্জনকভাবে ডিঙিয়ে রাস্তা পারাপাররত নাগরিকের ছবি মাঝেমধ্যেই ছাপা হয়। এমন সংবাদের শিরোনাম হয়- এই আমাদের নাগরিক সচেতনতা, কিংবা কবে আমরা সভ্য হব। প্রায় কোমর সমান উঁচু বল্লমের সুচালো মুখসদৃশ বিভাজক-দ-ের ওপর দিয়ে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে মহিলারা পর্যন্ত রাস্তা পার হন। এমন দৃশ্য শুধু আতঙ্ক জাগায় না, তা শোভনতার ধারণাকে আঘাত করার মতোও। একটু পা হড়কালে ভদ্রমহিলা জখম হতে পারেন। তাছাড়া বিভাজক পেরিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে অপর পারে যাওয়ার সময় ধাবমান যানবাহন এড়ানোও বিপজ্জনক। ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তা পারাপারে নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যেই সড়ক ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ স্থায়ী ও কঠোর বিভাজক স্থাপন করেন। তবু মানুষ মানছে না, তার হুঁশ হচ্ছে না। মানুষ রাস্তা পারাপারের সময় এমন ঝুঁকি কেন নেন, সেটা বড় প্রশ্ন। একটু দূরেই নিরাপদে রাস্তা পেরুনোর জন্য ফুট ওভারব্রিজ কিংবা জেব্রাক্রসিং থাকে। নাগরিকরা ওই পথটুকু হাঁটতে চান না, তারা শর্টকাট খোঁজেন। আর ফুট ওভারব্রিজ ডিঙোনোকে তারা ইংলিশ চ্যানেল পেরুনোর মতোই কঠিন ও মহাকষ্টকর এক কাজ বলে মনে করেন। সিঁড়ি ভাঙতে তাদের বিরাট আপত্তি। বিদ্যুতের খুঁটির ওপর ভর দিয়ে আট-দশ ফিট উঁচু সড়ক-প্রতিবন্ধক ডিঙোয় স্কুল ছাত্ররাও। বড়রাই যখন কা-জ্ঞান খুইয়ে পশুর স্বভাব প্রকাশ করছে, সেক্ষেত্রে ছোটদের আর কিভাবে দোষ দেয়া যাবে! নাগরিক কা-জ্ঞান নিয়ে অনেক লেখা হলেও, ট্রাফিক পুলিশ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না। সড়ক ও ফুটপাথ চলাচলের জন্য। সেই চলাচল নির্বিঘœ রাখাই কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। নাগরিকেরও দায় রয়েছে। ঔচিত্যজ্ঞান থাকলে কোন নাগরিক চলার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন না। ঢাকা এখন দেশের সবচাইতে জনবহুল এলাকায় পরিণত হয়েছে। তাই দেশের অন্য যে কোন শহরের তুলনায় ঢাকা অনেক বেশি বিপদগ্রস্ত। লজ্জাজনক ব্যাপার হলো বহু পথচারী রাস্তার পাশে খোলা নর্দমা বা পাঁচিল পেলে সেই স্থানে প্রকাশ্যে জলবিয়োগ করে থাকেন। এটি যে কত দৃষ্টিকটু ও গর্হিত কাজ- অনেকেই তা বুঝতে চান না। এই অপকর্মও সড়ক চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি করে। নাগরিক সচেতনতা বাড়াতে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে গতি ও পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেÑ এমনটা ভাবার কারণ নেই। কোন বিষয়ে নাগরিক সচেতনতা তৈরির জন্য মিডিয়ার বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়া এক্ষেত্রে সক্রিয় হতে পারে। যিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে তুলে রাস্তা পাড়ি দিচ্ছেন তিনি যে এ বিষয়ে পুরোপুরি অজ্ঞান, বিষয়টি তা নয়। তাকে লজ্জা দেয়া হলে এবং সেটি মিডিয়ায় প্রচারিত হলে লাখ লাখ নাগরিক সতর্ক হয়ে যাবেনÑ এমনটা আশা করা যায়। সেইসঙ্গে শিশু-কিশোরদের ভেতর সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সক্রিয় হতে পারে। এক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলী হওয়াও বাঞ্ছনীয়। অভিভাবক তার সন্তানকে নিয়ে রাস্তা পারাপারে কা-জ্ঞানহীনতার পরিচয় রাখলে সন্তানই প্রতিরাধ করবে কিংবা বাবা-মাকে বিরত রাখবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনকেও বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য। বাণিজ্যমেলা এবং বিনোদন দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের পণ্যের মানোন্নয়নের পাশাপাশি বিশ্বে নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা বিশেষ ভূমিকা রেখে আসছে। দেশের রফতানি বাড়াতে পণ্যের বহুমুখীকরণের পাশাপাশি নতুন বাজার খোঁজার প্রতি বিশেষভাবে জোর দেয়া হচ্ছে। একবার বাণিজ্যমেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, পৃথিবীর কোন দেশে কী চাহিদা আছে, সেটা আমাদের জানতে হবে। সেই চাহিদা অনুযায়ী আমাদের দেশের কোন কোন পণ্য রফতানি বা উৎপাদন করা সম্ভব, প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব সে বিষয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। বছরের শুরুতে ঢাকায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রথম দিন থেকেই মেলা জমে উঠেছে। শুক্র ও শনিবার নাকি মেলায় দুই লাখ মানুষ এসেছেন! ঢাকা শহরে এখন দুই কোটি লোকের বাস। বাণিজ্যমেলার মতো আকর্ষণীয় একটি মেলায় ছুটির দিন এক- দেড় লাখ লোক হওয়া অস্বাভাবিক মনে হয় না। সবাই তো একই সময়ে যাচ্ছেন না! রাজধানীবাসীর বিনোদনকেন্দ্রের বড়ই অভাব। তাই যে কোন মেলাতেই প্রচুর লোক সমাগম হয়ে থাকে। বাণিজ্যমেলায় রকমারি পণ্য ছাড়কৃত মূল্যে পাওয়া যায়- এটা ক্রেতাদের টানে। বিশেষ করে মহিলা ক্রেতারা ঘর-গেরস্থালির পণ্য আর আসবাবপত্রের স্টলে বেশি ভিড় জমান। বাণিজ্যমেলায় বাণিজ্য হবে, সেটাই স্বাভাবিক; তবে এটি যে প্রাণোচ্ছল আনন্দময় এক মানব মিলনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে, সেটাও অনেক বড় বিষয়। ছুটির দিনগুলোয় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে থেকে শুরু হয় মেলামুখী মানুষের ঢল। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ থাকে তাতে। বেশির ভাগ দর্শনার্থীই আসেন আত্মীয়স্বজন, পরিবার-পরিজন নিয়ে। বলা দরকার, এবার পদ্মা সেতুর স্প্যানের আদলে বাণিজ্যমেলার মূল ফটক তৈরি করা হয়েছে। এ বছর মেলায় বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, চীন, জাপানসহ ২১টি দেশ অংশ নিচ্ছে। মেলায় এবার স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৫৮৯টি। বড় প্যাভিলিয়ন ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়ন ৭৭টি ও বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট স্টলের সংখ্যা ৪০০টি। এ ছাড়া মেলায় আছে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন, ফ্ল্যাওয়ার গার্ডেন, ই-শপ, শিশু পার্ক, প্রাইমারি হেলথ সেন্টার, মা ও শিশু কেন্দ্র, রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্রসহ ৩২ ধরনের অবকাঠামো। মেলায় বিদেশী অংশগ্রহণকারী হিসেবে ১৭টি দেশের ৪৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। বাণিজ্যমেলা আয়োজনের মাধ্যমে বিদেশী ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে পরিচয়ের সুযোগ সৃষ্টি বড় প্রাপ্তি। তাছাড়া এ আয়োজনে দেশীয় বাণিজ্যের বৃদ্ধিরও বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়। উৎপাদিত পণ্যের মান যাচাই করারও অবকাশ মেলে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের কৃষিজাত পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের প্রচলিত ও অপ্রচলিত কৃষি পণ্যের জন্য নতুন নতুন বাজার খোঁজার একটি প্লাটফরম হতে পারে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা, এমনটা আমরা ভাবতেই পারি। বিগত দুই বছরে বাণিজ্যমেলায় গড়ে ৮০ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পাওয়া গিয়েছিল। এবার তা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। মেলার ভিআইপি গেটের পাশে রয়েছে বেশ কিছু চমক। গাছের সঙ্গে ঝুলে আছে অজগর সাপ! কোন গাছের ডাল ধরে ঝুলছে বানর। তার নিচের জলাশয়ে পানি পান করছে হরিণ। পাশেই শিকার ধরতে ওত পেতে আছে বাঘ। শিশুরা দেখে মজা পাবে। বেশ খানিকটা জায়গাজুড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, গোলপাতা, সুন্দরী গাছের পাতা দিয়ে সাজানো হয়েছে সুন্দরবন ইকোপার্ক। ভিন্ন রকমের আয়োজন হওয়ায় বড়- ছোট সব বয়সের মানুষেরই ভিড় লেগে আছে সেখানে। মেলায় কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে সুন্দরবন ইকোপার্ক। দর্শনার্থীদের আকর্ষণও করছে এই পার্ক। শীতে ভিন্ন দাপট ঢাকার ধুলা শীত নামার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। ধুলোর দাপটে নাগরিকদের জীবন নাকাল। রাজধানীর প্রায় সব প্রধান সড়কের বেশিরভাগ সারা বছরই থাকে ধূলিধূসর। এতে যানবাহনের যাত্রীর পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়ছে এলাকাবাসী। রাস্তার ধুলা দূর করতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আছে তেরোটি পানির গাড়ি। তবে এগুলো কাজ করছে এমন দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না নগরবাসীর। দুই সিটির কর্মকর্তারা গণমাধ্যমে স্বীকার করেছিলেন শীতের সময় ছাড়া রাস্তায় নামে না গাড়িগুলো। দক্ষিণ ঢাকায় রাস্তায় পানি ছিটানোর গাড়ি আছে ৯টি, আর উত্তরে আছে চারটি। ঢাকাতে নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে। ধুলার রাজত্বে অসহায় হয়ে পড়েছেন রাজধানীবাসী। ধুলার কারণে একদিকে বেড়েছে ভোগান্তি, অন্যদিকে রোগবালাই। নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণ, রাস্তা সংস্কার কিংবা উন্নয়নের নামে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে উন্মুক্তভাবে। নিয়ম অনুযায়ী নির্মাণ এলাকা ঘেরাও করে কাজ করার কথা থাকলেও তা না করে মাটি, বালি, পাথর ইত্যাদি রাস্তার ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে দিনের পর দিন। গাড়ির চাকায় সেগুলো পিষ্ট হয়ে ধুলা ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। বিশেষজ্ঞ মতে, ঢাকার বাতাসে ধুলার দূষণ অতীতের সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানীবাসী। বিশেষ করে নির্মাণ এলাকার বাসিন্দা ও পথচারীদের দীর্ঘমেয়াদে ফুসফুসের ক্যান্সার, শ্বাসকষ্টসহ জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিশুরা রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে। এক ক্যান্সার গবেষক গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) এক গবেষণায় দূষিত বাতাসে ৯৭০টি সিনথেটিক কেমিক্যাল নিরূপণ করা সম্ভব হয়েছে- যেগুলোর মধ্যে ৪৬৪টি কেমিক্যালের কারণে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তিনি বলেন, রাজধানীর বাতাসে ধুলার পরিমাণ এখন ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। এই ধুলাযুক্ত বাতাস গ্রহণের ফলে প্রাথমিকভাবে শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এর ক্ষতি হবে অনেক বেশি। অনেক রাসায়নিক উপাদান ধুলার সঙ্গে বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে গিয়ে ধীরে ধীরে ফুসফুসে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। নতুন নক্ষত্র আলো ঢাবির বাংলা বিভাগ থেকে ডবল ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া শিক্ষার্থী কর্মজীবনেও সফল হবেন, এমন কোন কথা নেই। তবে আমাদের বন্ধু কবি মারুফুল ইসলাম হয়েছেন। পঞ্চাশ পেরুনোর আগেই কাস্টমসে কমিশনার, তারপর বায়ান্নোতে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ। কর্মজীবনে লেখার অবকাশ তেমন পাননি, এখন অফুরন্ত অবসর যেন। শুধু লেখা আর লেখা। প্রতি তিন মাসেই একটা করে পা-ুলিপি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। গত সপ্তাহে পরপর দুদিন ছিল তাঁর কবিতাকেন্দ্রিক বর্ণাঢ্য আয়োজন। কবিতার ব্যাকরণ মেনেই লিখতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন দীর্ঘদেহী সুদর্শন কবি, যদিও মাঝেমধ্যে ছন্দ ভাঙতেও তাঁর ভালো লাগে। তাঁর কবিতায় গীতলতা ও অন্তমিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। মারুফের নতুন কাব্য ‘নতুন করে পাব বলে’-র প্রকাশনা উৎসবের আদ্যোপান্ত সবিস্তারে এসেছে জনকণ্ঠের শেষ পাতায়, তাই সে বিষয়ে যাচ্ছি না। বলছি কবির কবিতা নিয়ে দেশের খ্যাতনামা সব আবৃত্তিশিল্পীদের আবৃত্তি পরিবেশনের প্রসঙ্গে। ‘নতুন নক্ষত্র আলো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটির আয়োজক ছিল স্বনন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনের এই আয়োজনে আমার যাওয়া হয়নি অসুস্থতার কারণে। তবে ঘরে বসে যেসব আমন্ত্রণ পেয়েছি, পরে অনুষ্ঠানের যে ফিডব্যাক পেয়েছি তাতে বলতে পারি আবৃত্তিকারদের মিলনমেলাই হয়ে উঠেছিল ওই বর্ণিল অনুষ্ঠান। ড. আনিসুজ্জামান, ড. রফিকুল ইসলামের মতো দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবীরাও আবৃত্তি করেছেন মারুফের কবিতা হাসান ইমাম, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি। সব মিলিয়ে একজন কবির জন্য নিঃসন্দেহে স্মরণীয় সুখময় অভিজ্ঞতা। ৭ জানুয়ারি ২০১৮ [email protected]
×