ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এখনও শঙ্কামুক্ত নন কথাসাহিত্যিক শওকত আলী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

এখনও শঙ্কামুক্ত নন কথাসাহিত্যিক শওকত আলী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একুশে পদকজয়ী বরেণ্য কথাসাহিত্যিক শওকত আলীর শারীরিক অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি। ল্যাব এইডের চিকিৎসকরা সোমবার সন্ধ্যায় জানান, এখনও শঙ্কামুক্ত নন শওকত আলী। সোমবার পরীক্ষামূলকভাবে একাধিক দফায় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রটি খুলে নেয়া হলেও তাকে এখনও আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রেখেছেন চিকিৎসকরা। এদিকে বাবার অসুস্থতার খবরে শওকত আলীর বড় ছেলে ডাঃ আরিফ শওকত পল্লব রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় তিনি জানান, কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রটি খুলে নেয়ার পর নিজে থেকে দুই-একবার শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়েছিলেন শওকত আলী। কিন্তু এখনও পুরোপুরি খুলে দেয়া হয়নি শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রটি। এখনও তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, মঙ্গলবার তিনি ‘আর্টিফিসিয়াল ভেন্টিলেশন’ ছাড়া নিজে থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারবেন। তবে এখনও তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। অন্যদিকে ল্যাব এইডের আইসিইউ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ‘টিপিস ট্রায়াল’ ভিত্তিতে সোমবার সকাল থেকে নানা দফায় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রটি খুলে নেয়া হয়েছিল। তখন মাঝেমধ্যে রেসপন্স করলেও চিকিৎসকরা কোন ঝুঁকিতে না গিয়ে তাকে এখনও লাইফ সাপোর্টেই রেখেছেন। ফুসফুসের সংক্রমণ, কিডনি জটিলতা ও হৃদরোগের সমস্যা নিয়ে গত ৪ জানুয়ারি এই হাসপাতালে ভর্তির পর ৮১ বছর বয়সী কথাসাহিত্যিককে প্রথমে আইসিইউতে, পরে অবস্থার অবনতি হলে ৬ জানুয়ারি তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। শওকত আলী ১৯৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। শওকত আলী সারাজীবন শিক্ষকতা করে পার করেছেন। চাকরি থেকে অবসর নেন সরকারী সঙ্গীত কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে। শিক্ষকতা থেকে অবসর শেষে রাজধানীর হাটখোলায় নিজ বাসভবনে নিভৃত জীবনযাপন করছেন। তার লেখা অন্যতম উপন্যাসের মধ্যে আছে প্রদোষে প্রাকৃতজন, ওয়ারিশ, অপেক্ষা, গন্তব্যে অতঃপর, পিঙ্গল আকাশ, উত্তরের খেপ, অবশেষে প্রপাত, জননী ও জাতিকা, জোড় বিজোড় ইত্যাদি। তার দক্ষিণায়নের দিন, কুলায় কালস্রোত এবং পূর্বরাত্রি পূর্বদিন- যেগুলোকে ত্রয়ী উপন্যাস বলা হয়, যার জন্য তিনি ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার পান। ছাত্র থাকাকালীন সাংবাদিকতাও করেছেন। কাজ করেছেন মিল্লাত, মাসিক সমকাল এবং সাপ্তাহিক মিঠেকড়ায়। কথাসাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য পেয়েছেন একুশে পদক। এছাড়া বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার, অজিত গুহ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার, লেখিকা সংঘ, স্বদেশ চিন্তা সংঘসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
×