ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম মেডিক্যালের আইসিইউতে ভর্তি মোহাম্মদ ইউসুফ

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

চট্টগ্রাম মেডিক্যালের আইসিইউতে ভর্তি মোহাম্মদ ইউসুফ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে চিকিৎসা চলছে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউসুফের। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রবিবার তাঁকে রাঙ্গুনিয়া থেকে এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখন তাঁর শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সোমবার তাঁকে দেখতে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য আজকালের মধ্যে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের দফতর ও চমেক হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মোহাম্মদ ইউসুফের শারীরিক চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাঁর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন। বর্ষীয়ান এ নেতার কিডনিসহ নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় তাঁর অবস্থার উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা চলছে। কিডনি রোগের জন্য ডায়ালাইসিস করতে হবে। অবস্থার একটু উন্নতি হলেই তাঁকে ঢাকার এ্যাপোলো অথবা ইউনাইটেড হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হবে। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত মর্মস্পর্শী এ খবর জনমনে এতটাই রেখাপাত করেছে যে, সোমবার অনেকেই সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফকে হাসপাতালে দেখতে যান। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ জনপ্রতিনিধিরা হাসপাতালে গিয়ে তাঁর চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসায় যেন কোন ধরনের ত্রুটি না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হবে মোহাম্মদ ইউসুফকে। এর জন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে। ফেসবুকে মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণকারী সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস বলেন, মোহাম্মদ ইউসুফকে যে কোন সময়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর চিকিৎসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। এজন্য এয়ার এ্যাম্বুলেন্স বা হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শারীরিক অবস্থা ঢাকায় স্থানান্তরযোগ্য হলেই নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা থাকায় এখন আর চিকিৎসায় অবহেলা হবে না বলে জানা গেছে প্রশাসন সূত্রে। উল্লেখ্য, আন্দোলন সংগ্রামে এক সময়কার তুখোড় কমিউনিস্ট নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ ১৯৯১ সালে সিপিবি থেকে আটদলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর পরবর্তী সময়ে সাকা চৌধুরী সা¤্রাজ্যে প্রথম আঘাত। মুক্তিযুদ্ধের সম্মুখসারির এই যোদ্ধা এতটাই নির্লোভ যে, এমপি হয়েও কোন বৈষয়িক অর্জনের চিন্তা করেননি। নির্মোহ মোহাম্মদ ইউসুফ ঘর-সংসারও করেননি। জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য পরে সিপিবির অন্য নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তাঁর আয়ের তেমন কোন উৎস ছিল না। রাঙ্গুনিয়াতে ছোট ভাইয়ের আশ্রয়ে জীবন কাটছিল। আর পরিবারটির আয়ের উৎস ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। মোহাম্মদ ইউসুফ এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, তার শরীরে পচন ধরে। সুচিকিৎসার কোন ব্যবস্থা ছিল না। অবশেষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন সাংবাদিক মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাস প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাঁরই নির্দেশনায় চিকিৎসা শুরু হয়।
×