ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকদের চেয়ারম্যান

সরকারী দলের এমপিদের সম্পত্তির হিসাব নিয়েও কাজ করবে দুদক

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

সরকারী দলের এমপিদের সম্পত্তির হিসাব নিয়েও কাজ করবে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুধু বিরোধী দল নয়, সরকারী দলের সংসদ সদস্যদের সম্পত্তির হিসাব নিয়েও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। একইসঙ্গে ব্যাংকিং সেক্টরে কেলেঙ্কারি বাড়ছে না বরং কমছে এবং বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন শুরু হয়েছে বলে মতামত দেন তিনি। সোমবার দুপুরে রাজধানীর দুদক প্রধান কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যারা সরকারী দলের সংসদ সদস্য তাদের সম্পত্তির হিসাব নিয়েও দুদক কাজ করছে। তিনি বলেন, দুদকের ভূমিকা একটাই। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যারা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তারা হলফনামা সঠিকভাবে দেবেন সেটা আমরাও চাই। ইতোমধ্যে দু-একজন সংসদ সদস্যের ব্যাপারে আমরা ইলেকশন কমিশনে লিখেছি যে, তাদের সম্পদ বিবরণী সঠিক নয়। যারা জনগণের প্রতিনিধি হবেন, জনগণ জানুন তারা সঠিকভাবে নির্বাচন কমিশনে সম্পদের সঠিক হিসাব দেবেন। তাদের সম্পত্তির সঠিক হিসাব দিতে হবে। স্বপ্রণোদিত হয়ে দুদক কোন ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, না এমন কোনও ব্যবস্থা আমরা নেব না। আমাদের চোখের সামনে কোন অনিয়ম ধরা পড়লে তখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনে দুয়েকজন সংসদ সদস্যের বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সেটি নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের স্ত্রীরাও আসামি হয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ইকবাল মাহমুদ বলেন, এমন প্রায় ১০টি মামলা আছে যেখানে দুর্নীতিবাজদের পাশাপাশি তাদের স্ত্রীরাও আসামি। এটি একটি সামাজিক সমস্যা বলে মনে হচ্ছে। তবে স্ত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা দাবি করেন, তারা কিছুই জানেন না। এটি আসলে একটি সামাজিক ব্যাধি। এর প্রতিরোধে আমরা ক্যাম্পেইন করব, যেন স্ত্রীদের নামে কোনও অবৈধ সম্পত্তি রাখা না যায়। প্রাইভেট ব্যাংকিং সেক্টরে কেলেঙ্কারি বাড়ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অব্যাহত থাকবে ও ব্যাংকের বোর্ডগুলো ভালভাবে কাজ করছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। কারণ হচ্ছে প্রবৃদ্ধি, এ খাতে ১৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। যেখানে নিয়ম থাকে সেখানে কিছু অনিয়ম তো থাকেই। সেজন্যই তো আমাদের মত সংস্থা। বড় বড় প্রজেক্টে দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের সহযোগিতা প্রসঙ্গে ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরা সরকারকে বলেছিলাম বড় বড় প্রজেক্টে যদি তারা মনে করেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য আমাদের সাহায্য দরকার এবং ক্যাবিনেট ডিভিশনকেও বলেছিলাম যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আমাদের সাহায্যের জন্য। তবে আমরা আসলে এ বিষয়ে তেমন কোন রেসপন্স পাইনি। তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ স্বপ্রণোদিত হয়েই করছি। আমরা লক্ষ্য রাখছি। দুর্নীতি প্রতিরোধের বিষয়টা চলমান। সরকার চেষ্টা করছে। দুর্নীতি হওয়ার আগেই যাতে দুর্নীতি বন্ধ ও প্রতিরোধ করা যায়। এটা বুঝতেও সময় লাগে। ২০১৮ সালের দুদকের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারী প্রায় ২৫টি সেক্টরে অপচয়-দুর্নীতি বন্ধ করতে আমরা ব্যবস্থা নেব এবং দৃশ্যমান কিছু কাজ করার চেষ্টা করব যাতে সবাই বুঝতে পারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কিছু একটা হচ্ছে। তিনি বলেন, পাঁচ বছর কর্মপরিকল্পনার দ্বিতীয় বছর শুরু হয়েছে। আপনারা জানেন ২০৩০ সালের মধ্যে চীন-জাপানসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ২৭ কোটি জনশক্তি লাগবে। এজন্য জনশক্তি শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্নীতর কোন প্রভাব যাতে না পড়ে সেই ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করব। দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ বছর চেষ্টা করব প্রকৌশলী সংস্থাগুলোতে যাতে টেন্ডারেও ক্রয়-বিক্রয়ে অনিয়ম না হয় সেজন্য সরকারী অর্থ অপচয় না হয় সেই বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণে প্রকৌশলীদের সঙ্গে সভা করে বলব। কারণ সরকারের বাজেটের সিংহভাগই যায় প্রকৌশলীদের মাধ্যমে। আমরা চাচ্ছি যাতে জনগণের অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় হয়, যাতে কোন দুর্নীতি না হয়।
×