ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ॥ ফিরলেন বিজয়, মিঠুন, রাজু ও সানজামুল

প্রথম দুই ওয়ানডেতে নেই সৌম্য-তাসকিন

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

প্রথম দুই ওয়ানডেতে নেই সৌম্য-তাসকিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ১৫ জানুয়ারি সিরিজটি শুরু হবে। এ সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডের জন্য দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঘোষিত দলে নেই সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ ও লিটন কুমার দাস। সেই সঙ্গে শফিউল ইসলাম, মুমিনুল হকও একই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। দল থেকে বাদ পড়েছেন তারা। দলে ফিরেছেন এনামুল হক বিজয়, মোহাম্মদ মিঠুন ও আবুল হাসান রাজু। স্পিনার সানজামুল ইসলামও আবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়ানডে দলে থাকলেও ইনজুরির জন্য মুস্তাফিজুুর রহমান কোন ম্যাচ খেলতে পারেননি। এরপর ইনজুরি কাটিয়ে বিপিএল খেলেছেন। দেশের মাটিতে যখন আবারও ওয়ানডে হবে, তখন মুস্তাফিজ ঠিকই দলে সুযোগ করে নিয়েছেন। বিসিবি ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে। প্রাথমিক দলের বাকিরা বিসিএল খেলবে। তবে দুই ওয়ানডের জন্য দল ঘোষণা করা হয়েছে। পরের ওয়ানডেগুলোতে ঘোষিত দলের ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্স বিবেচনা করে আবার বাদ পড়া ক্রিকেটারদের সুযোগও মিলতে পারে। ঘোষিত দলে আছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোঃ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবুল হাসান রাজু, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সানজামুল ইসলাম। এ ক্রিকেটারদের মধ্যে বিজয় ২০১৫ সালের মার্চের পর জাতীয় দলের জার্সি পরে আর ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাননি। প্রায় তিন বছর পর তিনি আবার ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেন। মোহাম্মদ মিঠুন এখন পর্যন্ত খেলেছিলেনই দুইটি ওয়ানডে। সেই ২০১৪ সালে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর আর খেলেননি মিঠুন। আবুল হাসান রাজুও ২০১৫ সালের এপ্রিলের পর আর কোন ওয়ানডে খেলার সুযোগ পাননি। এ তিন ক্রিকেটারের সঙ্গে দলে ফিরেছেন স্পিনার সানজামুল ইসলামও। তিনি গত বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে হওয়া আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে একটি ম্যাচ খেলেছিলেন। এরপর আর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারেননি। এ চার ক্রিকেটার নতুন করে ওয়ানডে দলে সুযোগ পেলেও দল থেকে বাদ পড়েছেন সৌম্য, তাসকিন, লিটন। সেই সঙ্গে বাদ পড়েছেন শফিউল ইসলাম, মুমিনুল হকও। গত বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। সেই সিরিজে সৌম্য, তাসকিন, লিটন, শফিউল ও মুমিনুল ছিলেন। প্রথম তিনজন প্রথমেই চূড়ান্ত দলে ছিলেন। ওপেনার তামিম ইনজুরিতে পড়াতে মুমিনুলকে পরে দলে যুক্ত করা হয়েছিল। আর ইনজুরির জন্য মুস্তাফিজের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষ হয়ে যাওয়ায় শফিউলও যুক্ত হন। সাবেক কোচ চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে থাকার সময়ই সৌম্যের ধারাবাহিক দলে সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। সৌম্য ব্যর্থ হলেও দলে থাকা এবং একাদশে নিয়মিত খেলে যাওয়া নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। যেই হাতুরাসিংহে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, সৌম্যও বাদ পড়ে গেলেন। হাতুরাসিংহে চলে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দল ঘোষণা হলো। তাতে সৌম্যের সঙ্গে বাদ পড়লেন তাসকিনও। লিটন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে সুযোগ করে নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সুযোগ বেশিদিন টিকে থাকল না। মুমিনুলকে তো ওয়ানডের ব্যাটসম্যানই ভাবা হয় না। তাকে টেস্ট ‘স্প্যাশালিস্ট’ হিসেবেই ধরে নেয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলন করেই দল ঘোষণা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সৌম্যকে নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেছেন, ‘সৌম্য সব ফরম্যাটেই কিছুদিন ধরে খেলে যাচ্ছে। ওর ট্যালেন্ট নিয়ে কোন রকম কোন প্রশ্ন নেই। যেহেতু একটু ধারাবাহিকতার মধ্যে নেই, এইজন্য আমরা একটু ব্রেক দিয়েছি। সৌম্য আমাদের পরিকল্পনার মধ্যেই আছে। যেহেতু আমাদের পুলভুক্ত খেলোয়াড়। আমরা আশা করি ও আবার ফর্মে ফিরে আসবে। সবকিছু মিলিয়েই তাকে একটা ব্রেক দেয়ার চিন্তা ভাবনা করেছি। মানসিকভাবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ম্যাচে সৌম্যর কিছুটা ব্রেক প্রয়োজন। ধারাবাহিকতা রক্ষা করা খুব কঠিন জিনিস। একবার যদি ব্রেক ডাউন হয় তাহলে এটা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন। ও যথেষ্ট ট্যালেন্ট খেলোয়াড়। ও বেশ কিছু ভাল ইনিংস দেশের জন্য খেলেছে। আমি আশা করি খুব দ্রুত সে ক্যামবেক করতে পারবে।’ তাসকিনের অবস্থাও নাকি একই। তাই জানালে প্রধান নির্বাচক, ‘তাসকিন আহমেদেরই একই অবস্থা। শেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রত্যাশিত ফর্মে ছিল না। সেই হিসেবে আমরা মনে করি ওর ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলার প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেট। এই কারণেই তাকে ব্রেক দেয়া হয়েছে।’ লিটনকে সবসময় টেস্টের জন্য বিবেচনা করার কথা জানিয়ে নান্নু বলেন, ‘লিটন দাসকে সব সময় আমরা টেস্ট ম্যাচের জন্য বিবেচনা করেছিলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ ভাল খেলার কারণে আমরা ওকে রেখে দিয়েছিলাম। কারণ এখানে আসা যাওয়ার ঝামেলা ছিল, সেই সঙ্গে কন্ডিশনের সঙ্গে থেকে আরও কিছু শেখার বিষয়ে ছিল এইজন্য রেখে দিয়েছিলাম। সে সব সময় আমাদের লঙ্গার ভার্সন চিন্তায় আছে। এই কারণে ওকে ব্রেক দেয়া।’ মুমিনুলের বিষয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরেই মুমিনুল আমাদের ওয়ানডে-টি২০ দলে সে নেই। তামিমের ইনজুরির কারণে মুমিনুলকে আমরা তখন (দক্ষিণ আফ্রিকায়) রেখে দিয়েছিলাম। হুট করে লাগলে আমরা তাকে ব্যবহার করব।’ দেশের মাটিতে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে চোখের ইনজুরির জন্য বাদ পড়ার পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর দলেই নেই। প্রধান নির্বাচক বললেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই দলের সঙ্গে নেই মোসাদ্দেক। ওর চোখের সমস্যার কাটিয়ে বিপিএল খেলেছে। সেখানে আপ টু দ্য মার্ক ছিল না। ও সবারই পছন্দের খেলোয়াড়। আশা করি বিসিএলে নিজেকে মেলে ধরে আবারও কামবেক করতে পারবে।’ এই সময় বিজয়, রাজু, মিঠুন ও সানজামুলের ফেরা নিয়ে এবং মুশফিকের উইকেটকিপিং নিয়েও কথা বলেন প্রধান নির্বাচক। ঘরোয়া ক্রিকেট খুব ভাল খেলার জন্য বিজয় ও মিঠুনকে নেয়া হয়েছে। সানজামুল সিস্টেমের মধ্যেই ছিলেন। ১৬ সদস্যের দল দেয়া হয়েছে। কারণ, ইমরুলের খানিক ইনজুরি রয়েছে। কন্ডিশনে দল গঠন প্রক্রিয়ায় একজন বেশি পেসার নেয়া হয়েছে। এনামুল হকের কথা বলতে পারি। যথেষ্ট ভাল খেলেই সুযোগ করে নিয়েছে। দুই বছর ধরেই পারফর্মেন্স করছে। আশা করি সে এখানে ভাল করতে পারবে। ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম দুই ওয়ানডের দল ॥ মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ইমরুল কায়েস, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান রুম্মন, মোঃ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, আবুল হাসান রাজু, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সানজামুল ইসলাম।
×