ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে বিএনপি নির্বাচনে যাবে॥ ড. মোশাররফ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

 নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করে বিএনপি নির্বাচনে যাবে॥ ড. মোশাররফ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নিরপেক্ষ সরকারের সরকারের দাবি আদায় করেই বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের এগ্রিকালচারিস্টস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বার বার জনগণকে ধোঁকা দেয়া যাবে না, জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করা যাবে না। আগামী নির্বাচন হতে হবে সংসদ ভেঙ্গে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওয়ান-ইলভেনের সেনা সমর্থিত সরকারের প্রেক্ষাপট ছিল মাইনাস খালেদা জিয়া। তারা বিএনপিকে দুর্বল করতে চেয়েছে। আর এখন আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে দুর্বল করতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের দমন করে রাখতে ভিত্তিহীন মামলায় নাজেহাল করছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ কোন কিছুতেই ছাড় দিচ্ছেন না। তারা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে দেশকে গভীর অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের ‘জেনেটিক প্রোবলেম’ হচ্ছে তারা যখনই ক্ষমতায় থাকবে তখনই জোর করে ক্ষমতায় বহাল থাকতে চায়। খন্দকার মোশাররফ বলেন, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না। যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবি আদায় করেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভোট দিয়েছে বলেই আমরা ক্ষমতার ৪ বছর অতিক্রম করতে পেরেছি।’ প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কোন জনগণের কথা বলেছেন, কোন নির্বাচনের কথা বলেছেন। যে নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, যে নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সেই নির্বাচন? মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার নির্বাহী বিভাগকে দলীয়করণ করে ধ্বংস করেছে, অনির্বাচিত সংসদ করে আইন বিভাগকে ধ্বংস করেছে এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সরকার যে আচরণ করেছে, তার মাধ্যমে বিচার বিভাগকেও ধ্বংস করেছে। তাই আজ দেশ অনিশ্চয়তা ও অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে শেখ হাসিনা দেশের রাজনীতিকে সঙ্কটের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল না হলে ৫ জানুয়ারির মতো একটি ভোটারবিহীন নির্বাচনের হতো না। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল না হতো তাহলে আগামী নির্বাচন নিয়ে এতো উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ হতে হতো না। অলিখিত বাকশাল সৃষ্টি করে শেখ হাসিনা ক্ষমতাকে দীর্ঘ করতে চান। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো ভোটারবিহীন নির্বাচন আর করতে দেয়া হবে না। এদেশের জনগণ তা করতে দেবে না। বারবার আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে প্রতারণা করা যাবে না। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করা এত সহজে হবে না। এজন্য আমাদেরকে অবশ্যই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার ভয় দেখাচ্ছেন, আমাদের গুলি করবেন? এগুলো কোনটাতেই কাজ হবে না। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এক দেশে দুই আইন চলতে পারে না মন্তব্য করে ড. মোশাররফ বলেন, আমরা সভা-সমাবেশ করতে অনুমতি পাই না। আমাদেরকে বলা হয় সভা-সমাবেশে যানজট সৃষ্টি হবে। অথচ আওয়ামী লীগ বেশ কয়েক জায়গায় সভা-সমাবেশ করে যানজট সৃষ্টি করেছে। যা চলতে পারে না, বেশি দিন চলতে দেয়া যায় না। গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃখ প্রকাশ করা উচিত প্রতিবাদ সভায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সেই আওয়ামী লীগ যারা বাকশালের খাঁচায় বন্দী ছিল। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক কৃষিবিদ আনোয়ারুন নবী মজুমদার বাবলার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সভাপতি কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
×