ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এবার একুৃশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন ২৫, বাড়ছে পরিসর

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

এবার একুৃশে বইমেলায় প্যাভিলিয়ন  ২৫, বাড়ছে  পরিসর

মনোয়ার হোসেন ॥ চলছে নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি, আসছে চেতনায় কড়া নাড়া ফেব্রুয়ারি। আর ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভাষাশহীদের স্মৃতিতে নিবেদিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শুরু হয়েছে বাঙালীর মননের সুন্দরতম প্রকাশের সেই মেলার প্রস্তুতি। সেই সুবাদে তুমুল ব্যস্ত এখন মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। রবিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তুতি শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। রবিবার সন্ধ্যায় একাডেমি আঙ্গিনায় মেলায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রকাশকদের আবেদনপত্রের নোটিস টাঙ্গিয়ে দেয়া হয়। আজ সোমবার থেকে আবেদনপত্র জমা নেয়া শুরু হয়ে চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় প্যাভিলিয়নের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। বাংলা একাডেমি দুটি ও অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থার জন্য তেইশটিসহ মেলায় ঠাঁই পাবে ২৫ প্যাভিলিয়ন। গত বছরের তুলনায় এবার প্যাভিলিয়ন বাড়ছে ১০। গতবার প্যাভিলিয়ন পাওয়া দুটি প্রকাশনা সংস্থা এবারই প্রথম প্যাভিলিয়ন পাবে ১২ প্রকাশনা সংস্থা। সেই সঙ্গে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে বাড়ছে পরিসর। ৬৭৬ ইউনিটের স্টলে সাজানো এবারের মেলায় সব মিলিয়ে অংশ নেবে ৩৪০ প্রকাশনা সংস্থা। এবার প্রথমবারের মতো মেলায় স্টল পাবে ২১ প্রকাশনা সংস্থা। ২০১৮ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে রবিবার কথা হয় মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদের সঙ্গে। তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, এবারের বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে পরিসর বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে প্যাভিলিয়নের সংখ্যা। ২৩টি প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে বাংলা একাডেমির ২টি মিলে এবার প্যাভিলিয়নের সংখ্যা হবে ২৫টি। সেই সঙ্গে মেলার নান্দনিকতা বাড়ানোর বিষয়টিতে নজর দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রাথমিক আবেদনের ভিত্তিতে আমরা যাচাই-বাছাই করে মেলায় অংশ নেয়ার জন্য প্রকাশনা সংস্থাগুলোর নাম চূড়ান্ত করেছি। আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির নোটিস বোর্ডে আবেদনপত্র জমা দেয়ার বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গিয়ে দেয়া হবে। এবারের মেলায় ৬৭৬ ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবার ১৪ ইউনিট বেশি বাড়ছে মেলায়। এছাড়া প্রতিবন্ধীদের মেলায় মেলায় প্রবেশের সুবিধার্থে বাড়ানো হবে হুইল চেয়ারের সংখ্যা। বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, এবারের মেলায় নতুন ১২টি প্রকাশনা সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব প্রকাশনা সংস্থার মধ্যে রয়েছে অনিন্দ্য প্রকাশ, ঐতিহ্য, নালন্দা, পার্ল পাবলিকেশন্স, তাম্রলিপি, ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ, উৎস প্রকাশন, প্রথমা প্রকাশন, কথাপ্রকাশ, বাংলাপ্রকাশ, জার্নিম্যান বুকস ও শোভাপ্রকাশ। এর বাইরের গত বছর বরাদ্দপ্রাপ্ত সংস্থার মধ্যে এবারও ১১টি সংস্থাকে প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- আগামী প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ, মাওলা ব্রাদার্স, অবসর প্রকাশনা সংস্থা, কাকলী প্রকাশনী, অন্বেষা প্রকাশন, পাঞ্জেরি পাবলিকেশন্স, সময় প্রকাশন, অ্যার্ডন, অনন্যা ও পাঠক সমাবেশ। গতবার বরাদ্দ পাওয়া ইউপিএল ও সাহিত্য প্রকাশ এবার প্যাভিলিয়নের জন্য আবেদন করেনি। ২০ ফুট বাই ২০ জায়গার ওপর সুপরিসর কাঠামোয় নির্মিত হবে প্যাভিলিয়নগুলো। এছাড়া এবারের মেলায় চার ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১৮টি প্রকাশনা সংস্থা, তিন ইউনিটের স্টল পেয়েছে ৩২টি প্রকাশনা সংস্থা, দুই ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১১২টি প্রকাশনা সংস্থা এবং এক ইউনিটের স্টল পেয়েছে ১৫৫টি প্রকাশনা সংস্থা। এর পাশাপাশি শিশু কর্নারে থাকছে ৭১টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল। এবারের মেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জালাল আহমেদ বলেন, সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত মেলায় অংশ নেয়ার জন্য চূড়ান্ত আবেদন ফরম দেয়া হবে। ২১ জানুয়ারি গতবারের এবারও ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে। সে সঙ্গে এবার মেলায় প্রবেশের জন্য টিএসসি ও তিন নেতার মাজার সংলগ্ন দুইটি প্রবেশ পথকে দৃশ্যমান করা হবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমির আয়োজনে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন শুরু হবে ২২ ফেব্রুয়ারি। তিন দিনের এ সম্মেলন চলবে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১১টি দেশের শতাধিক সাহিত্যিক যোগ দেবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কবি, শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, লেখক, গবেষক, অনুবাদক ও সাহিত্য সমালোচক। এবার ১০টি দেশ থেকে ২৫ জন অতিথি লেখক যোগ দিচ্ছেন । সম্মেলন অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ এগিয়ে চলছে।
×