ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাতে নীতি সংস্কার করতে হবে ॥ প্যাসকেল ল্যামি

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাতে নীতি সংস্কার করতে হবে ॥ প্যাসকেল ল্যামি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্বে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বা অসমতা বৃদ্ধি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অসমতা কমাতে স্থানীয় পর্যায়ে নীতি সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উদ্যোগই পারে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমাতে। কারণ, কোনও দেশের অসাম্য কমাতে আন্তর্জাতিক প্রভাব খুব কমই কাজ করে। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ উদ্যোগে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজস্ব আদায়সহ বিভিন্ন নীতি সংস্কারের মাধ্যমে এই ব্যবধান কমাতে হবে। এজন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকারও প্রয়োজন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর এক অভিজাত হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক পাবলিক লেকচারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সাবেক মহাপরিচালক প্যাসকেল ল্যামি এসব কথা বলেন। সিপিডি আয়োজিত ‘নলেজ শেয়ার, প্ল্যানেট টু কেয়ার’ শিরোনামে আয়োজিত এ লেকচার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। ফ্রান্স বংশোদ্ভূত প্যাসকেল ল্যামি ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে ডব্লিউটিওর ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শনিবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন তিনি। ওয়ার্ল্ড এক্সপো-২০২৫ এর আয়োজক দেশ হিসেবে ফ্রান্সের পক্ষে সমর্থন আদায়ে তিনি এই সফর করছেন। এই এক্সপোর আয়োজন করতে ফ্রান্স, জাপান, রাশিয়া এবং আজারবাইজান আবেদন করেছে। ১৭০ দেশের অংশগ্রহণে গঠিত ব্যুরো ইন্টারন্যাশনাল দ্য এক্সপোজিশনের (বিআইই) আগামী নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় সাধারণ পরিষদের সভায় চূড়ান্ত দেশের নাম ঘোষণা করা হবে। ফ্রান্সে এই প্রদর্শনী আয়োজনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্যাসকেল ল্যামি বলেন, ‘সর্বজনীন আয়োজনকে অবশ্যই সর্বজনীনভাবে আয়োজন করতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) বাস্তবায়নের পাঁচ বছর আগে ২০২৫ সালে এই বিশ্ব প্রদর্শনীর আয়োজন হতে যাচ্ছে। সেখানে এসডিজির অর্জনগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে। শুধু বাণিজ্য নয়, বিশ্বের সামনে এখন জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলাও চ্যালেঞ্জ। আমরা চাই নলেজ শেয়ারের মাধ্যমে এই বিশ্বের যতœ নিতে।’ সম্প্রতি ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ওয়ান প্ল্যানেট সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের বিষয় উল্লেখ করে প্যাসকেল ল্যামি জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘পরিবেশগত সমস্যার সমাধানগুলোর বেশিরভাগই অভ্যন্তরীণ নীতির সঙ্গে থাকে। যেমন- পরিবেশগত নীতি, সামাজিক কল্যাণ, সামাজিক নিরাপত্তা। যদি এ জিনিসগুলোর সমাধান না করা হয়, তবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করা কঠিন হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু সমস্যা মোকাবেলায় সুশীল সমাজ এবং জনসাধারণকেও এগিয়ে আসতে হবে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে উদ্ভাবনী ও রূপান্তরমূলক সমাধান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় ফ্রান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ জলবায়ু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভূমিকা প্যারিস ঘোষণা বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করবে কি না অধ্যাপক রেহমান সোবহানের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্যাসকেল ল্যামি বলেন, ‘এক ব্যক্তির ভূমিকার ওপর সবকিছু নির্ভর করবে না। প্যারিস ঘোষণা বাস্তবায়নে বিশ্বের বড় ৪০টি দেশ এগিয়ে এসেছে। তারা ইতোমধ্যে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় কাজও শুরু করেছে। তাছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল জনগোষ্ঠী, বহুজাতিক অনেক প্রতিষ্ঠানও এর পক্ষে কথা বলছে। এমডিজি ও এসডিজিতেও জলবায়ুর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ফলে এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
×