ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দু’কোটি টাকার বাঁধাকপি রফতানি

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৮ জানুয়ারি ২০১৮

দু’কোটি টাকার বাঁধাকপি রফতানি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ কন্ট্রাক ফার্মিংয়ের মাধ্যমে কৃষি বিভাগের তদারকিতে যশোরে আন্তর্জাতিকমানের সবজি উৎপাদন হচ্ছে। গোটা দেশের মধ্যে যশোর থেকে এবার দু’কোটি টাকার বাঁধাকপি (পাতাকপি) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে রফতানি করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে বাঁধাকপির দাম কমে যাওয়ার মুহূর্তে এই রফতানি শুরু হচ্ছে। আর এর সুফল পাচ্ছেন যশোর সদর উপজেলার ১৬২ জন কৃষক। ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেড যশোরের চুড়ামনকাটি এলাকায় ওয়ার হাউজ ও ফ্যাক্টরি স্থাপন করে কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে। একই সঙ্গে গুণগতমান নিরুপণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষিবিভাগ। এ মৌসুমে ৪৮শ’ মেট্রিকটন বাঁধাকপি পাঠানো হচ্ছে। চট্টগ্রামের মতো মংলা বন্দরে জাহাজের ট্রিপ বাড়ানো হলে আরও বেশি বেশি রফতানি করা যাবে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি দু’মাসে যশোর থেকে বাঁধাকপির অনেকগুলো চালানো যাবে মালায়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে। ওই তিন দেশের সবজি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেড যশোর কৃষি বিভাগের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। আগামী দু’মাসে ২৫ লাখ পিস বাঁধাকপি রফতানি করা হবে। কৃষকদের পরিবহন ও প্রসেসিং খরচ কমিয়ে সরাসরি মাঠে চলে যাবে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের গাড়ি। যশোর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহায়তায় যশোরের চারটি ইউনিয়নের তৃনমূল পর্যায়ের কৃষককে এই কন্ট্রাক ফার্মিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে। হৈবৎপুর, চুড়ামনকাটি, লেবুতলা ও কাশিমনগরের ১শ’ ৬২ কৃষককে এই সুবিধাভোগীর আওতায় আনা হয়েছে। উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল নানা সাপোর্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বাঁধাকপি তৈরি করা হয়েছে। এক একটি কপির ওজন কমপক্ষে দেড় কেজি, যা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মাফিক ওজন। আন্তর্জাতিকমানের কপি উৎপাদন হয়েছে এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবেন যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেডসহ আটটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওই প্রত্যয়নের আলোকে কপি সংগ্রহ করবে। বাঁধাকপি ছাড়াও বেগুন ও ফুলকপির চালান এবার রফতানি করা হতে পারে। এরপর একে একে টমেটো, সিম, করলা, উচ্ছে, পেঁপে, মাশরুম, মরিচ বীজ, কলা, লিচু, কুল, পেয়ারা, ভুট্টা, আমলকি, চুইঝাল, গাছ আলু, নারকেলসহ ২০ প্রকার উচ্চ মূল্যের ফসলও রফতানিতে প্রাধান্য পাবে। তবে কৃষি বিভাগের নানা সাফল্যকে ছাপিয়ে বড় সুখবর এনে দিয়েছে বাঁধাকপিতে। কৃষকের ভাগ্যোন্নয়নের উচ্চ মূল্যের ফসলের মধ্যে বাঁধাকপিতে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছে গোটা কৃষি সেক্টরে। যশোরে কৃষকের ক্ষেতে উৎপাদিত বাঁধাকপি পৌঁছে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও তাইওয়ান বাজারে। প্যাকেজিংয়ের আগে আব্দুলপুরের কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপনন কেন্দ্রসহ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের ফ্যাক্টরিতে নিয়ে বাছাই ও প্যাকেটজাত করা হবে। এ বিষয়ে যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খালিদ সাইফুল্লা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক মানসম্মত সবজি, তথা বাঁধাকপি উৎপাদন সরাসরি মনিটরিং করছে উপজেলা কৃষি অফিস। অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ এগিয়েছে। উত্তম ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট শতভাগ সফল হয়েছে। আর তাতে ভিন্নমাত্রা যুগিয়েছে বিদেশে কপি রফতানি। তাও আবার যশোর থেকেই। দেশের মধ্যে যশোর থেকেই বাণিজ্যিকভাবে কপি রফতানি গৌরবের বিষয়। এ ধারা অব্যাহত থাকলে যশোর তথা সারাদেশের বাঁধাকপি নিঃসন্দেহে উচ্চমূল্যের সবজি হিসেবে সমধিক পরিচিতি পাবে। যশোরাঞ্চলে বাঁধাকপি চাষীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনকারী ঢাকার রিফাত এগ্রোবেজ প্রসেসিং লিমিটেডের স্বত্ব¡াধিকারী কাজী মুন্নি জানান, তার প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ থেকে এবং তা যশোর থেকেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি রফতানি শুরু করেছে।
×