ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ধ্বংসস্তূপে একাই লড়লেন পাণ্ডিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

ধ্বংসস্তূপে একাই লড়লেন পাণ্ডিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হারদিক পাণ্ডিয়ার মাঝে অনেকে কপিল দেবের ছায়া দেখেন। দীর্ঘদিন পর দুর্দান্ত একজন ম্যাচ উইনার পেস বোলিং-অলরাউন্ডার পেয়েছে ভারতীয়রা। সাবেক বিশ্বজয়ী কিংবদন্তির ধারের কাছে যেতে পারবেন কি না, সময়েই তার উত্তর মিলবে। তবে মাত্র দুই বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তাক লাগানো পারফর্মেন্স প্রদর্শন করে চলেছেন পাণ্ডিয়া। কেপটাউন টেস্টে এবার ধ্বংস্তূপ থেকে দলকে টেনে তুললেন ২৪ বছর বয়সী গুজরাট প্রতিভা। প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ২৮৬ রানের জাবাবে এক পর্যায়ে ২৭ রানে ৩ ও ৯২ রানে ৭ উইকেট হারায় ভারত। সেখান থেকেই টেল-এন্ডার ভুবনেশ্বর কুমারকে (২৫) নিয়ে সফরকারীদের মান বাঁচান পাণ্ডিয়া। সাত নম্বরে নেমে ৯৫ বলে খেলেন ৯৩ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস। দলের নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে কাগিসো রাবাদার শিকারে পরিণত হওয়ার আগে হাঁকিয়েছেন ১৪ চার ও একটি বিশাল ছক্কা। শনিবার দ্বিতীয়দিনের তৃতীয় সেশনে ৭৩.৪ ওভারে ২০৯ রানে অলআউট ভারত। ভারনন ফিল্যান্ডার ও রাবাদা নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। দুটি করে শিকার ডেল স্টেইন ও মরনে মরকেলের। পেসারদের ত্রাস বোলিংয়ের আভাস ছিল শুক্রবার ম্যাচের প্রথমদিনেই। প্রোটিয়ারা অলআউট হওয়ার পর দিনের বাকি ১১ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারায় কোহলির দল। রান ওঠে মাত্র ২৮। ফিরে যান দুই ওপেনার মুরালি বিজয় (১), শিখর ধাওয়ান (১৬) এবং অধিনায়ক কোহলি (৫)। শনিবার দ্বিতীয়দিনেও রান তুলতে গিয়ে বেসামাল টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের ‘নাম্বার ওয়ান’ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। রাবাদার দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রোহিত শর্মাকে (১১) হারিয়ে শুরু করে ভারত। রান তোলা তো দূরের কথা, টিকে থাকাই তো মুশকিল। দুই প্রান্ত থেকে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন অভিজ্ঞ ডেল স্টেইন আর ভারনন ফিল্যান্ডার। তিন নম্বরে নেমে ৯২ বলে ২৬ রান করা হালের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পুজারাকে প্যাভিলিয়নে পাঠান ফিল্যান্ডার। অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিনও (১২) শিকার হন এই পেসারের। এরপর উইকেটরক্ষক ঋদ্ধিমান সাহাকে শূন্য (০) হাতে এলবিডব্লিউ করেন ইনজুরি কাটিয়ে দীর্ঘদিন পর ফেরা স্টেইন। দলীয় ৪২তম ওভারে ৯২ রানে সপ্তম উইকেট হারিয়ে ভারত তখন আক্ষরিকই ধ্বংস্তূপ। তখনই স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যান পা-িয়া। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন ভুবনেশ্বর। ইতিমধ্যেই ‘পেসারদের ম্যাচ’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া কেপটাউনে পেসাররাই রাজা-মহারাজা। ভুবনেশ্বর-মোহাম্মদ শামিদের তোপে স্বাগতিকদের ২৮৬ রানে অলআউট করে দিয়ে উল্টো বিপদে পড়ে ভারত। সুপার কোহলি-পুজারা-রোহিতদের নাড়িয়ে দেন স্টেইন-ফিল্যান্ডার-রাবাদা। প্রথমদিনের শেষ ঘণ্টায় ব্যাটিংয়ে নেমে তোপে পড়েন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরাও। পঞ্চম ওভারে ফিল্যান্ডারের বলে ডিন এলগারকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুরলি বিজয় (১)। পরের ওভারে স্টেইনের ফিরতি ক্যাচে বিদায় নেন আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ানও (১৬)। তবে সবচেয়ে বড় উইকেটটা নিয়েছেন মরনে মরকেল। গত বছর টেস্টে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো কোহলিকে ডানা মেলার আগেই সাজঘরে পাঠিয়ে দেন ডানহাতি এই পেসার। উইকেটকিপার ডি কককে ক্যাচ দিয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক (৫)। ভারতের স্কোর তখন ২৭/৩। ১শ’র নীচে ৭ উইকেট পতনের পর সফরকারীদের বড় লজ্জা থেকেই উদ্ধার করেন পাণ্ডিয়া।
×