ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিডনি টেস্টে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

সিডনি টেস্টে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সিডনিতে এ্যাশেজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টে চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের ৩৪৬ রানের জবাবে তৃতীয়দিন শেষে প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪৭৯। উসমান খাজা আউট হয়েছেন ১৭১ রান করে। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে শন মার্শ। ৯৮ রানে অপরাজিত তিনি। ছোট ভাই মিচেল মার্শ সঙ্গে আছেন ব্যক্তিগত ৬৩ রান নিয়ে। সবমিলিয়ে ১৩৩ রানে এগিয়ে আগেই ‘৩-০’তে সিরিজ নিশ্চিত করা স্টিভেন স্মিথের অস্ট্রেলিয়া। ট্রফি খোয়ানোর পর শেষ ম্যাচে সান্ত¡নার জয় পেতে মরিয়া জো রুটের ইংল্যান্ড এখন কার্যত চাপের মুখে। আজ চতুর্থদিনে বোলারদের পারফর্মেন্সের ওপর সফরকারীদের অনেক কিছু নির্ভর করবে। ব্যাটসম্যানদের এই পারফর্মেন্সে চতুর্থদিনেও সিডনির ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচন্ড গরমে অস্ট্রেলিয়া কোথায় গিয়ে থামে সেটাও দেখার বিষয়। তৃতীয়দিন শেষে দুই ভাই শন মার্শ ও মিচেল মার্শের অবিচ্ছিন্ন ১০৪ রানের পার্টনারশিপে অস্ট্রেলিয়া ৪ উইকেটে ৪৭৯ রান করে আরও বড় স্কোরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। মিচেল মঈন আলীর তিন বলে দুটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাত্র ৮৭ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত। শেষ ওভারে অবশ্য তিনি এলবিডব্লিউ’র আবেদন থেকে বেঁচে যান। এ্যাশেজ সিরিজে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিসহ ১৭১ রানের ইনিংসে খাজা ৫১৫ মিনিটে ৩৮১টি বল খেলেছেন। এর মধ্যে ছিল ১৮টি বাউন্ডারি ও ৬টি ছক্কার মার। তবে পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত খাজার এটি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ও সিডনিতে প্রথম সেঞ্চুরি। এই সিরিজে আগের ম্যাচগুলোতে মাত্র দুটি হাফ-সেঞ্চুরির পর সাবেক অনেক খেলোয়াড়ই খাজাকে বাদ দেয়ার ব্যাপারে মত দিয়েছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালে ব্রিসবেনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ১৭৪ রানের টেস্ট ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন তিনি। অভিষিক্ত ইংলিশ স্পিনার ম্যানস ক্রেনের বলে খাজার ক্যারিয়ারসেরা দুর্দান্ত ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে। জনি বেয়ারস্টোর স্টাম্পিংয়ের সহায়তায় ক্রেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট উইকেটের দেখা পান। এর আগে দিনের শুরুতে খাজা যখন ১৩২ রানে ক্রিজে ছিলেন তখন হ্যাম্পশায়ারের এই লেগ স্পিনারের বলে স্পষ্ট এলবিডব্লিউ হলেও ‘নো’ বলের কারণে তা বাতিল হয়ে যায়। ৯০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে ক্রেন (২০ বছর) ইংল্যান্ড টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছেন। চ্যালেঞ্জিং দিনটি ক্রেন ৩৯ ওভারে ১৩৫ রানের বিনিময়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ করেছেন। সিরিজের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন শন মার্শ। জো রুটের বলে তিনি ২২ রানে রিভিউর সহায়তায় জীবন ফিরে পান। এর আগে মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ৮৩ রান করা প্রতিপক্ষ স্মিথের উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড দিনের একমাত্র সফলতা দেখিয়েছেন মঈন আলি। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে মঈন নিজের বলে নিজেই ক্যাচে পরিণত করেছেন। সকালের পুরো সেশনটাই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে খেলেছেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা স্মিথ। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তিনি ২৫৩ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৫৮ বল মোকাবেলা করেন। মারেন ৫টি চার। স্মিথ ও খাজা মিলে ১৮৮ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। এই রানেই মূলত অস্ট্রেলিয়ার বড় স্কোরের ভিত রচিত হয়। পুরো সিরিজেই স্মিথ সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মূলত তার ব্যাটিংই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। চার ম্যাচে ৬৮৭ ১৩৭.৪০ গড়ে ৬৮৭ রান সংগ্রহ করেছেন স্মিথ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রান ছিল ২৩৯ যা তার ক্যারিয়রসেরা। ইনিংসে এ্যান্ডারসন ১ উইকেট পেলেও ৩০ ওভারে মাত্র ৫২ রান দিয়েছেন ইংল্যান্ড পেসার। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৩৪৬/১০ (১১২.৩ ওভার; কুক ৩৯, স্টোনম্যান ২৪, ভিঞ্চ ২৫, রুট ৮৩, মালান ৬২, বেয়ারস্টো ৫, মঈন ৩০, কুরান ৩৯, ব্রড ৩১, ক্রেন ৪, এ্যান্ডারসন ০*; স্টার্ক ২/৮০, হ্যাজলউড ২/৬৫, কামিন্স ৪/৮০, লেয়ন ১/৮৬)। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস : ৪৭৯/৪ (১৫৭ ওভার; ওয়ার্নার ৫৬, খাজা ১৭১, স্মিথ ৮৩, শন মার্শ ৯৮*, মিচেল মার্শ ৬৩*; এ্যান্ডারসন ১/৫২, ব্রড ১/৭০, মঈন ১/১২৫, কুরান ০/৭১, ক্রেন ১/১৩৫, রুট ০/২১)। ** তৃতীয়দিন শেষে
×