ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি সিনেটে প্রতিনিধি নির্বাচন

ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে সংঘর্ষ ভাংচুর, আহত ১৬

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

ভোলায় ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে সংঘর্ষ ভাংচুর, আহত ১৬

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভোলা, ৬ জানুয়ারি ॥ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচন শুরু হলেও শেষ সময়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর কয়েকজনকে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এ ছাড়া সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা করা হয়। প্রথম আলোর সাংবাদিক নেয়ামতউল্যাকে লাঞ্ছিত করে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুরে ভোলা সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে। এদিকে ভোলা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর পারভিন আকতার জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। সংর্ঘষের ঘটনা বাইরে ঘটেছে। এতে কলেজের কিছু আসবাবপত্র, বেঞ্চ, চেয়ার টেবিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটে রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোলা সরকারী কলেজ কেন্দ্রে শনিবার সকাল ১০ টায় ভোট শুরু হয়। চলে একটানা দুপুর ১ টা পর্যন্ত। সারা দেশের ২৯ কেন্দ্রের মধ্যে ভোলা সরকারী কলেজ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ছিল ২৬৮। নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী পরিষদের পক্ষে সকাল ১০ টা থেকে ভোলা সরকারী কলেজ কেন্দ্রে বিএনপির নেতাকর্মীরা ব্যাপক তৎপরতা চালান। জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুমেন, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হায়দার আলী লেলিনসহ সিনিয়র একাধিক নেতৃবৃন্দ ভোট কেন্দ্রে গেলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ভোট শেষ হওয়ার ৩০ মিনিট আগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক কর্মীর সঙ্গে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংর্ঘষ বাধে। এ সময় চেয়ার টেবিল ভাংচুর করা হয়। মোবাইলে ভিডিও করায় কয়েকজন ছাত্রসহ রূপালী ব্যাংকের ড্রাইভার হাসনাতকে মারধর করা হয়। এ ছাড়া প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি নেয়ামতউল্যাহকে লাঞ্ছিত করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হায়দার আলী লেলিন ও জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ট্রুম্যানসহ বিএনপি নেতারা বলেন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করেছে। এতে ট্রুম্যান পায়ে আঘাত পান। এছাড়া ছাত্রদলের নুর মোহাম্মদ, এমরান, তালহা, আদনান, জুবায়েরসহ ৮ জন আহত হন। অপর দিকে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইউনুস বলেন, প্রভাব বিস্তার করতে সকাল থেকে ভোলা সরকারী কলেজ কেন্দ্রে বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। তাদের মহড়া আর স্লোগান ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপি ছাত্রদল রাজনৈতিক রং লাগানোর জন্য এ ঘটনা ঘটিয়ে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করেছে। সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৮ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় তারা তীব্র নিন্দা জানান। ভোলা মডেল থানার ওসি মীর খায়রুল কবির জানান, তারা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই সংঘর্ষ থেমে যায়। বিএনপি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের মধ্যে হাতাহাতিতে হয়। কয়েকজন আহত হয়। তবে কেউ থানায় মামলা দেয়নি। পটুয়াখালীতে হামলা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট প্রতিনিধি নির্বাচনে পটুয়াখালীতে ভোট গ্রহণের সময় বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ক্যাম্পে থাকা চেয়ার টেবিলসহ নির্বাচনী প্রচারপত্র ও ব্যানার নিয়ে যাওয়া হয়। লাঞ্ছিত করা হয় জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীকে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টায় পটুয়াখালী সরকারী কলেজে এ ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়। আওয়ামী লীগের দাবি এটি বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফল। তবে কেন্দ্রের বাইরে হামলা এবং মারধরের ঘটনা ঘটলেও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সরকারী কলেজের প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
×