ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ইইউতে তুরস্কের যোগদান প্রশ্নে অগ্রগতি নেই ॥ ম্যাক্রোঁ

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

ইইউতে তুরস্কের যোগদান প্রশ্নে অগ্রগতি নেই ॥ ম্যাক্রোঁ

ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার তুর্কী প্রতিপক্ষ রিসেপ তাইপ এরদোগানকে বলেছেন, বর্তমানে ইউরেপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) তুরস্কের যোগদানের বিষয়ে কোন অগ্রগতি নেই। খবর বিবিসি অনলাইনের। ম্যাক্রোঁ প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০১৬ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থান পরবর্তী শুদ্ধি অভিযানের পর থেকে মানবাধিকার বিষয়ে বেশ মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। এরদোগান বলেন, তুরস্ক ইইউতে যোগ দেয়ার জন্য অবিরাম অনুরোধ জানিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। সিরিয়ায় তুরস্কের অস্ত্র পাঠানোর দাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের উদ্দেশ্য করে হঠাৎ করেই রূঢ় ভাষা ব্যবহার করতে উদ্যোগী হন। ২০১৫ সালের সংবাদপত্র কুমহুরিয়েতে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে তুর্কী গোয়েন্দা অস্ত্রগুলো সরবরাহ করেছে। সাংবাদিক ওই প্রতিবেদন সম্পর্কেই জিজ্ঞাসা করছিলেন। এরদোগান সাংবাদিককে অভিযুক্ত করে বলেন, তিনি গুলেনপন্থী আন্দোলনের একজন সদস্যের মতো কথা বলেছেন। এরদোগান ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের জন্য গুলেনপন্থীদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, আপনি আপনার প্রশ্নটি করার সময় বিষয়টিতে সতর্ক থাকবেন এবং অন্যের শব্দাবলী ব্যবহার করে বথা বলবেন না। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এখন ভান করারও ভ-ামি শেষ হওয়ার সময়। আসলে তুরস্কের ইইউতে সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়ে সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় কোন অগ্রগতি হয়নি। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক যতটুকু সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে তাতে স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে যে, সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রক্রিয়ায় কোন অগ্রগতি আসবে না। তুরস্কে অভ্যুত্থান পরবর্তী এরদোগান সরকারের অভিযানের পর আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ফরাসী প্রেসিডেন্ট একথাও বলেন যে, আঙ্কারার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ এবং পুরো ইইউ সদস্যপদ অর্জনের জন্য একটি বিকল্প উদ্যোগ গ্রহণের সম্ভবত এখনই সময়। দুই নেতা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এএফপি জানায়, বার্লিন ও আঙ্কারার মধ্যে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আলোচনার জন্য জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল শনিবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাভলুৎ কাভুসোগ্লুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সম্প্রতি ন্যাটোর অংশীদার এ দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে। বিশেষ করে ২০১৬ সালে তুরস্কের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান এবং এর পরবর্তীতে চালানো দমনপীড়নের পর থেকেই তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। কেননা, তুরস্কে সামরিক দমনপীড়ন চলার সময় দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে এমন অনেক জার্মান নাগরিকসহ হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় জার্মানি গত বছর তাদের দেশের বিনিয়োগকারী ও পর্যটকদের তুরস্ককে এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়। এদিকে আঙ্কারা সাম্প্রতিক সময়ে আকস্মিকভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জার্মানির সঙ্গে নতুন করে উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও উপসাগরীয় কিছু দেশের সঙ্গে তাদের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করার সময় তারা এমন ইঙ্গিত দেয়। গত মাসে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান ঘোষণা দেন যে তুরস্ক অবশ্যই তাদের শত্রুর সংখ্যা হ্রাস করে বন্ধুর সংখ্যা বাড়াবে। এ লক্ষ্যেই তিনি শুক্রবার প্যারিসে ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। শনিবারের একান্ত আলোচনার কথা উল্লেখ করে গাব্রিয়েল তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার নিজ শহর গসলারে আমন্ত্রণ জানান। এর আগে গত নবেম্বরে এ দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাভু সোগ্লুর নিজ অঞ্চল আন্তালিয়ায় সাক্ষাত করেছিলেন।
×