ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ হয়েও হল না শেষ ॥ রসিক নিয়ে রসিকতা-বিএনপি প্রার্থীর মামলা!

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ৭ জানুয়ারি ২০১৮

শেষ হয়েও হল না শেষ ॥ রসিক নিয়ে রসিকতা-বিএনপি প্রার্থীর মামলা!

এই লেখাটি যখন লিখছি তখন বহুল আলোচিত রসিক নির্বাচনের ফলাফল একদিকে যেমন পুরনো অন্যদিকে তেমনি আলোচনা-সমালোচনাগুলো এক রকম মলিন হয়ে যাবার কথা। কিন্তু রসিক নির্বাচন নিয়ে নতুন করে রঙ্গরসের সূচনায় বিএনপি প্রার্থী যাকে সবাই বাবলা নামে চেনেন তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ভোট, যেখানে বিজয়ী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল পেয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার এবং আওয়ামী লীগ ৬২ হাজার। এই মামলাটিকে তাই রসিকতা ছাড়া কিই বা বলা যায়! তারপরও নির্বাচনের দিন তিনি বলেছিলেন, ভোট ভাল হচ্ছে ও ফলাফল ঘোষণার পর বাবলা দলের নির্দেশে গতানুগতিক প্রতিবাদ ছাড়া জোরালো কোন আপত্তি জানাননি। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখার জন্য তার দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। অনেকটা ক্ষোভের সঙ্গে গণভবনে দলীয় সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর সভায় যে দুটো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন তার প্রথমটি হলো আওয়ামী লীগ সরকার প্রভূত উন্নয়ন করা সত্ত্বেও কেন এত বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে গেল এবং দ্বিতীয়টি আন্দোলনের নামে বাসে, ঘরবাড়িতে জ্বালাও-পোড়াও মানুষকে হত্যা করে বিএনপির ভোট বাড়ল কেন? এটিকে অবশ্য রসিকতা বলা যায় না। কারণ, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে জেতা-হারা জাতীয় রাজনীতিতে কোন প্রভাব ফেলবে না তথাপি শেখ হাসিনার হয়ত ধারণা সেখানে আওয়ামী লীগের যদি কোন ভুল থেকে থাকে সে বিষয়ে আগামী নির্বাচনে সংশোধনের কাজে লাগবে। এ কথা শুধু শেখ হাসিনা কেন বিএনপি নেতারাও জানেন নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভোটের বাজারে এরশাদকে ‘হামার ছাওয়াল’ ধুয়া তুলে তার পক্ষে যে জনজোয়ার সৃষ্টি করা হয়েছিল তাতে আজ পর্যন্ত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অবস্থান নড়বড়ে। মনে করিয়ে দেয়া ভাল, এরশাদ সাহেব রংপুরের ‘ছাওয়াল’ নন। তার পিতা ভারত বিভক্তির সময় পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা শহরের পূর্বপুরুষের ভিটাবাড়ি ত্যাগ করে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে রংপুরে আসেন। এরশাদ দিনহাটা থেকে ম্যাট্রিক পাসের পর রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন। তার স্কুলের সহপাঠী ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহ যিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সহায়তাকারী ছিলেন এবং পরবর্তীকালে হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী। জন্মস্থানের শৈশব ও কৈশোরের নস্টালজিয়া এরশাদকে তাড়িত করে বলে সেখানে অবস্থানকারী আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবদের দেখতে ভারতে যান আজও। ব্যাপারটির সঙ্গে কিছুটা মিল আছে খালেদা জিয়ার। তিনি ফেনীর মেয়ে হিসেবে সর্বজনবিদিত হয়েছেন অথচ তার জন্ম ভারতের জলপাইগুড়ি জেলায় এবং মাইগ্রেশন করে তিনি পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন দিনাজপুরে। তার লেখাপড়া এবং বিবাহের পূর্ব পর্যন্ত বসবাস ছিল সেখানেই। ভোলার কথা নয় জাতীয় নির্বাচনে জয়যুক্ত প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রংপুরে গিয়ে সদম্ভে ঘোষণা দিয়েছিলেন- এই রংপুরের মানুষ বিএনপিকে ভোট দেয়নি তাই আমাদের আমলে এই জেলার কোন রকম উন্নয়ন করা হবে না। বিএনপি নেত্রী তার কথা রেখেছিলেন এবং রংপুরের কোনরকম উন্নয়ন তার আমলে করা হয়নি। এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রংপুরের উন্নয়নে যেসব কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল বিএনপি সেসব উন্নয়নের বাক্সে পেরেক ঠুকে নিয়ে গেছে অন্য জেলায়। বহু আকাক্সিক্ষত ছিল রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি। শেখ হাসিনা কর্তৃক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার পরেও বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটিকে হঠিয়ে নিয়ে যায় অন্যত্র। এরপরও ধানের শীষ আগের বারের চেয়ে এবার ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছে। ঝন্টুর ভোট ৪০ হাজার কমেছে। অন্যদিকে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন পেয়েছে ২০ হাজার ভোট। যাই হোক, বলছিলাম এরশাদ সাহেবের কথা। রংপুরের ছাওয়াল হিসেবে বার বার ভোট পাওয়ার কারণে অন্যান্য জেলার মানুষদের কাছে আমি বহুবার শুনেছি তিনি নাকি রংপুরকে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছেন। তাই যখন নিউইয়র্কে এসে ‘ঠিকানা’ পত্রিকায় এসেছিলেন তখন একটি প্রশ্ন রেখেছিলাম- ‘অন্যান্য এলাকার লোকেরা বলে রংপুরকে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছেন অথচ আমি রংপুরের মানুষ হয়ে জানি আপনি সেখানকার জন্য কিছুই করেননি।’ তখন তিনি চোখ নিচু করে বলেছিলেন, ‘আল্লাহ যদি তৌফিক দেন পরবর্তীতে ক্ষমতা গেলে রংপুরের জন্য কাজ করার ইচ্ছা আছে।’ একটা কথা মনে এসে গেলÑ বিধাতা কাউকে কর্মের ভার দেন আবার কেউ হয়ত নিজ ইচ্ছায় বেছে নেন গলাবাজি করে মিথ্যাচারের ভার। এ কথা তাই বলতেই হবে ’৯৬ সালের নির্বাচন বিজয়ের পর শেখ হাসিনা সত্যিকার অর্থে যেন পেয়েছিলেন স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ। খবরের কাগজে মঙ্গা ও দুর্ভিক্ষপীড়িত জেলা বলে পরিচিত রংপুর প্রথম উন্নয়নের মুখ দেখল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। আশ্চর্যজনকভাবে গঙ্গাচড়া অঞ্চলের মঙ্গা যেন গল্পকথায় ঠাঁই পেয়েছে, চিলমারীর বাসন্তী নিয়ে গল্প ফাঁদা দুর্ভিক্ষ শুধু দূর হয়নি আজ সেখানে ফসলের মাঠ ভরা। তিস্তা ও ধরলা নদীতে নির্মিত হয়েছে একাধিক ব্রিজ, যোগাযোগ ব্যবস্থার কল্পনাতীত উন্নতি। এছাড়া রংপুরকে বিভাগে উন্নীত করা, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ রূপে চালু করা, রংপুর পৌরসভাকে সিটি কর্পোরেশনের মর্যাদা প্রদান, মেট্রোপলিটন পুলিশ স্থাপনসহ প্রভূত উন্নয়ন ঘটেছে। অথচ রসিক নির্বাচনী রায়ে যেটি প্রতিফলিত হওয়ার উচিত ছিল সেটি হয়নি। গত নবেম্বর মাসে দেশে বেড়াতে গিয়ে রংপুর শহরে দেখলাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণা হব হব করছে। রংপুরে কিশোর বয়স থেকেই সাংবাদিকতার নেশা কলমে ভর করেছিল আর তার থেকে আজীবনে মুক্তি পাওয়া হয়নি। শহরের রাজনৈতিক, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ, সংস্কৃতিসেবীসহ এমনকি আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজনদেরও জিজ্ঞেস করেছি এবার কে জিতবে বলে মনে হয়? হাতেগোনা দু-একজন ছাড়া কেউ কবুল করেননি যিনি শরফুদ্দিন আহমেদকে ভোট দেবেন। এই ওপেন সিক্রেটটি কি কেউ আওয়ামী লীগ দলনেতাকে জানাননি? না জানালে ব্যাপারটি দলের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। দেশে মেয়র পদের বাংলা করা হয়েছে নগর পিতা। নগরীর সড়কগুলো যান চলাচলের উপযোগী রাখা, ময়লা নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা আমাদের দেশে মূলত এসবই রয়েছে এই পিতার অভিভাবকত্বে। কিন্তু রংপুরে চলতে গিয়ে সড়কগুলোর দৈন্যদশায় আক্ষরিক অর্থেই হোঁচট খেতে হলো। ছোট ছোট গলি রাস্তার দুরবস্থার কথা বাদই দিলাম। নগরীর প্রধান সড়কটি জাইকার সহায়তায় প্রশস্ত হচ্ছে বটে কিন্তু তার এক বেহাল দশা। শহরের প্রধান সড়ক শাপলা চত্বর থেকে রেলস্টেশন, তাজহাট হয়ে মাহিগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তাটি প্রশস্ত করা ও ড্রেন নির্মাণের জন্য একযোগে খোঁড়াখুঁড়ি ও ইট সুরকি ফেলা হচ্ছে। প্রতিদিন লাখো মানুষ চলাচলকারী পথের এই এবড়ো থেবড়ো অবস্থা ও ধুলোবালিতে বয়স্ক মানুষদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা-শিশুদের কথা তো বলাইবাহুল্য। মাইলের পর মাইল ধরে এ অবস্থা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া ঝন্টুর দুর্ব্যবহার নগরীর মানুষের মুখে মুখে ফিরেছে। আজীবন আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে এ রকম ষাটোর্ধ একজন ভোটার বললেন, দল যদি মনোনয়নও দেয় তবু তিনি ঝন্টুকে ভোট দেবেন না। ভোটাররা শেষাবধি সিটিং মেয়রের ওপর ছিল এমনি ক্ষুব্ধ। তাই একটা কথা বলতে হয় ঝন্টুর প্রাপ্ত ভোটকে কোন অর্থেই আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তার মাপকাঠি বলা যাবে না। পাকিস্তান আমলে তৎকালীন জাতীয় স্তরের নেতা ন্যাপের মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মুসলিম লীগের কাজী কাদেরদের পরাজিত করে বঙ্গবন্ধুর সহচর আবদুল আউয়াল, আজিজুর রহমান, নুরুল হক, সিদ্দিক হোসেইন, শাহ আবদুর রাজ্জাক, গাজী রহমান প্রমুখদের হাতে গড়ে ওঠা রংপুর জেলা আওয়ামী লীগ ’৭০ ও ’৭৩-এর নির্বাচনে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরের সব ক’টি আসনই লাভ করে। সর্বশেষে দলের হাল ধরেছিলেন ষাটের দশকের ছাত্রনেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আবুল মনসুর আহমেদ। এবারে মেয়র পদে নৌকা পরাজিত হলেও সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর পদগুলোর বিজয়ী প্রার্থীদের সংখ্যার দিকে তাকালে স্পষ্ট হবে বিএনপি, জাপা ও অন্যান্য দল মিলিয়ে যত আসন লাভ করেছে তার চেয়েও বেশিসংখ্যক কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছে এককভাবে আওয়ামী লীগ থেকে। সবাই জানেন এর আগেরবারের নির্বাচনে ঝন্টু আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে ও নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বৈতরণী পার হয়েছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরদিন ঘোষণা দিলেন, তিনি আওয়ামী লীগের কারণে জেতেননি! আশ্চর্যের কথা নয়কি! তারপরও এমন ব্যক্তিকে বানানো হলো রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা। যার দল পরিচালনায় কোন অভিজ্ঞতা নেই। তিনি কি করে অতি পুরনো এই দলটির পরিচালনায় পরামর্শকের ভূমিকা নেবেন? তবে ভুললে চলবে না ঝন্টু একসময় জাতীয় পার্টির সমর্থনে পৌর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর ওপর দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বকারী দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত ও তথাকথিত কিছু ইসলামী লেবাসধারী দল সুপরিকল্পিতভাবে ধর্ম নিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে সেটা এবার নিজের কানেই শুনলাম। দুটো অভিজ্ঞতার কথা এক্ষেত্রে না লিখে পারছি না। আমার রংপুরে থাকাকালীন সময় ফেসবুককে কেন্দ্র করে ঠাকুরপাড়ার হিন্দুবসতি জ্বালানোর ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটে। আমরা যখন গাড়িতে বসে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিলাম তখন যুবক ড্রাইভারটি হঠাৎ করে বলে উঠল- শেখ হাসিনা সরকার আইন করে হিন্দুদের অনেক পাওয়ার দিছে। যখন জানতে চাইলাম সেটা কেমন? সে বলল, কোন হিন্দুকে যদি কোন কারণে চড়-থাপ্পড়ও কেউ দেয় তার পঞ্চাশ ষাট হাজার টাকা জরিমানা হবে। এ রকম কোন আইন হয়েছে শুনিনি বললে সে উত্তেজিত কণ্ঠে বলল- গ্রামের মসজিদে মুরব্বিরা এ বিষয়ে জানিয়েছে। ড্রাইভার যুবকটির বাড়ি গঙ্গাচড়া যে অঞ্চলটি পরিচিত ছিল দুর্ভিক্ষপীড়িত মঙ্গা অঞ্চল হিসেবে। এবার যে যুবকের কথা বলব সে ঢাকার একজন গাড়িচালক যার বাড়ি গোপালগঞ্জ। পদ্মা সেতু চালুর সুফল সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলল, সেতু চালু হলে ওই সকল এলাকার প্রভূত উন্নয়ন ঘটবে। অনেক কম সময়েও বাড়ি যেতে পারব। বর্তমানে গ্রামের সাধারণ বেকাররাও চাকরি পাচ্ছে কিন্তু মানুষ নৌকাকে ভোট দেবে না। বললাম, তুমি যে বললে সরকার অনেক উন্নতি করেছে তারপরও ভোট দেবে না কেন? তার উত্তর হলো, শেখ হাসিনা বহু আলেমদের মেরেছে তাই জনগণ ভোট দেবে না। বললাম, তারা কোন্ কোন্ আলেম? ছেলেটি“’৭১-এর যুদ্ধাপরাধী নিজামী, গোলাম আযম এ রকম কিছু পাকিস্তানী অনুচরের নাম বলল। সে আরও যুক্ত করল শেখ সাহেব উনাদের মাফ করছিলেন কিন্তু শেখ হাসিনা তাদের ফাঁসি দিল। ‘একটি মিথ্যাকে একশ’ বার বললে তা সত্যি হয়ে যায়’Ñ হিটলারের মন্ত্রী গোয়েবলসের সেই বিখ্যাত থিওরিকে ধর্মের মিথ্যে খোলসধারীরা সুকৌশলে সমাজের সাধারণ অর্ধশিক্ষিত মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে। গোয়েবলসের প্রেতাত্মা জার্মানি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশের বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের ওপর ভর করেছে। এদের সঙ্গে জোট বেঁধে সহায়তা করছে ধর্মান্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্র। সরকারবিরোধিতার নামে প্রগতিশীল নামধারী বাম ও অতিবাম গোষ্ঠীর সমালোচনাগুলোও পরোক্ষে ও প্রকারান্তরে বিএনপি-জামায়াত জোটের রাজনীতিকে সমর্থন করছে। নিঃসন্দেহে এর সঙ্গে আরও যুক্ত আছেন স্বঘোষিত সুশীল সমাজের আন্তর্জাতিক চক্র। যাদের কথাবার্তায় মনে হয় তারা বিএনপির অঙ্গ সংগঠন বা বি-টিম। নির্বাচন কমিশন যে রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন এ যাবতকালের অন্য যে কোন নির্বাচনের চেয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছে সেটি বিএনপির সহযোগীরাও মানতে নারাজ। নিঃসন্দেহে এদের সকলের টার্গেট শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি। এরা একাট্টা হয়ে প্রতিদিন মিথ্যা অপবাদ কুৎসা ছড়িয়ে যাচ্ছে। গোয়েবলস বলেছিলেন, একশ’ বারের কথা কিন্তু এরা হাজারও মিথ্যাচার করে সাধারণ ধর্মভীরু মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দিচ্ছে। শুধু উন্নয়ন করলে যদি বিজয় লাভ করা যেত তাহলে ২০০১ সালে বিজয়ী হতে পারতেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি তা পারেননি। ভোটের হিসেবে নয় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র তাকে সেবার পরাস্ত করেছিল। সে কথা শেখ হাসিনা ভালভাবেই জানেন। এবারে তার দল ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তির বিরুদ্ধে বহুমুখী অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সেই প্রস্তুতি কোথায়। লেখক : আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিক [email protected]
×