ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Taslima Afroz;###;Lecturer in Zoology, ;###;Arambagh High School & College, ;###;Arambagh, Motijheel, Dhaka -1000.;###;e-mail: [email protected]

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা ॥ বিষয় ॥ জীববিজ্ঞান

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

নবম-দশম শ্রেণির পড়াশোনা ॥ বিষয় ॥ জীববিজ্ঞান

পঞ্চম অধ্যায় ॥ খাদ্য, পুষ্টি এবং পরিপাক সুপ্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, প্রীতি ও শুভেচ্ছা রইল। ইতোপূর্বে তোমরা উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টি, উদ্ভিদের খনিজ পুষ্টির প্রকারভেদ, পুষ্টি উপাদানের উৎস ও উদ্ভিদের পুষ্টিতে বিভিন্ন খনিজ উপাদানের ভূমিকা, উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের গুরুত্ব ও পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত লক্ষণ, প্রাণির খাদ্য ও পুষ্টি ও খাদ্যের প্রধান উপাদান ও উৎস (আমিষ, শর্করা ও ¯েœহজাতীয় খাদ্য) সম্পর্কে জেনেছো। আজকের আলোচনা: খাদ্যের প্রধান উপাদান ও উৎস এর মধ্যে ভিটামিন ও খনিজ লবণ খাদ্য: যেসব বস্তু খাওয়ার পর দেহে শোষিত হয়ে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করে (যেমন- দেহের পুষ্টি সাধন, দেহের ক্ষয়পূরণ, দেহে রোগ প্রতিরোধক শক্তি উৎপাদন এবং কর্মশক্তি ও তাপ উৎপাদন) ইত্যাদি তাকে খাদ্য বলে। খাদ্যের প্রধান উপাদান ও উৎস : খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন (ঠরঃধসরহং): স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য ভিটামিনের পরিমাণ খুব সামান্য হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। দেহের বৃদ্ধির জন্য ও সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন অত্যাবশ্যক। সুষম খাদ্যে বিভিন্ন প্রকার খাদ্য উপাদান থাকে বলে সুষম খাদ্য থেকে প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যায়। তবে নিয়মিত ভিটামিনবিহীন খাবার খেলে কিছু দিনের মধ্যে দেহে ভিটামিনের অভাবজনিত সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীকালে তা মারাত্মক আকারে স্থায়ীভাবে দেহের ক্ষতি সাধন করে। এমনকি মৃত্যুও ঘটাতে পারে। ভিটামিনকে দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা- ১. চর্বির দ্রবণীয় ভিটামিন : ভিটামিন ‘এ’ ‘ডি’ ‘ই’ এবং ‘কে’ চর্বিতে দ্রবণীয়। এবং ২. পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন : ভিটামিন ‘বি কমপ্লেক্স’ ও ভিটামিন ‘সি’ পনিতে দ্রবণীয়। ভিটামিন ‘এ’ (ঠরঃধসরহ অ): দুধ, মাখন, চর্বি ডিম, গাজর, আম কাঁঠাল, রঙিন শাকসবজি, মলা মাছ ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। ভিটামিন ‘বি’ (ঠরঃধসরহ ই): ইস্ট, ঢেঁকিছাঁটা চাল, যাঁতায় ভাঙ্গা আটা বা লাল আটা, অঙ্কুরিত ছোলা, মুগডাল, মটর, ফুলকপি, চিনাবাদাম, শিমের বীচি, কলিজা বা যকৃত, হৃৎপিন্ড, দুধ, ডিম, মাংস, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদিতে ভিটামিন “বি’ থাকে। ভিটামিন ‘সি’ (ঠরঃধসরহ ঈ): পেয়ার, বাতাবী লেবু, কামরাঙা, কমলা, আমড়া, বাঁধাকপি ,টমেটো, আানারস, আনারাস, কাঁচামরিচ, তাজা শাকসবজি ইত্যাদি থেকে ভিটামিন ‘সি’ পাওয়া যায়। ভিটামিন ‘ডি’ (ঠরঃধসরহ উ): দুধ, ডিম , কলিাজ বাযকৃত, দুগ্ধজাত দ্রব্য, মাছের তেল, ভোজ্যতেল ইত্যাদিতে ভিটামিন ‘ডি’ থাকে। ভিটামিন ‘ই’ ও ‘কে’ (ঠরঃধসরহ ঊ ্ ক): উপরে উল্লেখিত সব খাবার থেকে ভিটামিন ‘ই’ ও ‘কে’ পাওয়া যায়। খনিজ লবণ (গরহবৎধষ ঝধষঃং): দেহকোষ ও দেহের তরল অংশের জন্য খনিজ লবণ অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। মানবদেহে ক্যালসিয়াম (ঈধ), লৌহ (ঋব) , সালফার (ঝ), দস্তা (তহ), সোডিয়াম (ঘধ), পটাসিয়াম (ক), আয়োডিন (ও) ইত্যাদি খনিজ লবণ থাকে। এ উপাদানগুলো কখনও মৌলিক উপাদানরুপে মানবদেহে অবস্থান করে না। এগুলো খাদ্য ও মানবদেহে বিভিন্ন পরিমাণ অন্য পদার্থের সাথে মিলিত হয়ে নানা জৈব ও অজৈব যৌগের লবণ তৈরি করে। ক্যালসিয়াম (ঈধ): দুধ, দই, ছানা, পনির, ছোট মাছ, মোলা-ঢেলা, নানা রকম ডাল, সবুজ শাকসবজি, ঢেঁড়স, লাল শাক, কচু শাক ইত্যাদি ক্যালসিয়ামের প্রধান উৎস। লৌহ (ঋব): কলিজা, সবুজ শাকসবজি, শাংস, ডিমের কুসুম, কচু শাক ইত্যাদিতে লৌহ থাকে। দুধ, মাছ, মাংস, বাদাম, ডাল থেকে ফসফরাস বা লৌহ পাওয়া যায়। সোডিয়াম (ঘধ) : খাবার লবণ, চিপস, নোনতা খাবার, পনির, বাদাম, আচার ইত্যাদিতে সোডিয়াম থাকে। পটাসিয়াম (ক) : মাছ, মাংস বাদাম, ডাল, কলা, আলু, গাজর, আপেল ইত্যাদিতে পটাসিয়াম থাকে। ক্লোরিনের উৎস হলো মাছ, মাংস ও খাবার লবণ। আয়োডিনের উৎস হলো মাসুদ্রিক উদ্ভিদ ও মাছ, মাংস এবং শেওলা। কাজ: খনিজ লবণ দেহ গঠন ও অভ্যন্তরীণ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। হাড়, দাঁত, পেশি, এনজাইম ও হরমোন গঠনের জন্য খনিজ লবণ একটি অপরিহার্য উপাদান। ¯স্নায়ুর উদ্দীপনা, পেশি সংকোচন, দেহকোষ পানির সাম্যতা বজায় রাখা, অম্ল ও ক্ষারের সমতাবিধান ইত্যাদি কাজে খনিজ লবণের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
×