ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উপযুক্ত সময়ে আন্দোলন কর্মসূচী ॥ মওদুদ

আজ রাজধানীর থানায় থানায় বিএনপির বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

আজ রাজধানীর থানায় থানায় বিএনপির বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৫ জানুয়ারি সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজধানীর থানায় থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে এ ঘোষণা দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ যে গণতন্ত্র হত্যাকারী দল তার আরেকটি প্রমাণ হলো বিএনপিকে সমাবেশ করতে বাধা দেয়া। তারা যদি গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে ন্যূনতম বিশ্বাসী হতো তাহলে বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে বাধা দিত না। বিএনপির প্রতি এ আচরণের মাধ্যমে সরকারের দুর্বৃত্তমূলক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। মূলত : বর্তমান সরকার গণতন্ত্রের নিষ্ঠুর প্রতিপক্ষ। তাদের বাকশালী প্রেতাত্মা আরও বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ আগামীতে আবারও ক্ষমতায় এসে দখল আর লুটপাট চিরস্থায়ী রূপ দিতে চাচ্ছে। তারা বিরোধী দলশূন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েম করতে চাচ্ছে। আমরা ৫ জানুয়ারি ঢাকায় একটি সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ আওয়ামী লীগ ঢাকায় দুটি সমাবেশ করেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচনকে আড়াল করার জন্যই বিএনপির কর্মসূচী পালনে বাধা দিতে পোড়া মাটি নীতি অবলম্বন করা হয়েছে। ভোটারবিহীন সে দিনের নির্বাচন দেশে-বিদেশে বিতর্কিত ও কলঙ্কিত নির্বাচন হিসেবে গণ্য হয়েছে, কেউ তাদের সেই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয়নি। রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন মহানগর, জেলা ও উপজেলায় পূর্বঘোষিত কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ ও ক্ষমতাসীনরা বাধা দিয়েছে। গাজীপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্নস্থানে দলের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। ময়মনসিংহ জেলায় যেন এক অঘোষিত কার্ফু চালিয়েছে। বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দিলেও সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও পাশপাশের অলিগলিতে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া বিএনপি কার্যালয়ের কাছাকাছি জলকামান ও প্রিজন ভ্যানও রাখা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমউদ্দিন আলম, শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সানাউল্লাহ মিয়া, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ। উপযুক্ত সময়ে আন্দোলন কর্মসূচী আসবে-মওদুদ: নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা না হলে উপযুক্ত সময়ে রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচী আসবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। মওদুদ বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তাই তারা সমঝোতায় বিশ্বাস করে না। তারা চায় সংঘর্ষ-সংঘাত। তবে আমরা অনেক ধৈর্য ধরেছি, সহ্য করেছি, সমঝোতার কথা বলেছি। তিনি বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ এক নয়। এবার আমরা নির্বাচন করব। তবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না। মওদুদ বলেন, সরকার মামলাকে হাতিয়ার করে বিরোধী রাজনৈতিক দল দমনে কাজ করছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগের অবদান থাকলেও স্বাধীনতার পর তাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এখন অবলীলায় মিথ্যা কথা বলছে। মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে বিরোধীদলকে দমন করছে। এ অবস্থা আর বেশি দিন চলতে দেয়া যায় না। মওদুদ বলেন, আমরা উপযুক্ত সময়ে কর্মসূচী দেব। গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকার বাধ্য হবে বিদায় নিতে। এ সরকার সমঝোতার পথে যাবে না। তাই আমাদের একমাত্র বিকল্প হলো রাজপথ। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে সংবিধান রক্ষার নির্বাচন বলে। কিন্তু ওই নির্বাচন সংবিধান মোতাবেক হয়নি। আমরা বিচার বিভাগের দুর্বলতার কারণে আইনের মাধ্যমে তা মোকাবেলা করতে পারিনি। ৫ জানুয়ারি দেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন। আয়োজক সংগঠনের সহ-সভাপতি আলহাজ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মোহাম্ম রহমতউল্লাহ প্রমুখ।
×