ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পিলখানা হত্যাকান্ড মামলা থেকে খালাস পাওয়া তোরাব আলীর মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

পিলখানা হত্যাকান্ড মামলা থেকে খালাস পাওয়া তোরাব আলীর মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পিলখানা হত্যাকান্ডের মামলা থেকে খালাস পাওয়া আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলী মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, গত ৩ জানুয়ারি তোরাব আলীকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাইকোর্ট থেকে খালাস পেলেও মুক্তির আগেই অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ দিকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে তোরাব আলীর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগে বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সোহেল মাহমুদ। পরে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বাচ্চু মিয়া জানান। হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হালিম সাজু জানান, তোরাব আলী ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৭ নবেম্বর বিচারপতি মোঃ শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার আপিলের রায়ে তাকে খালাস দেন। খালাস পেলেও কাগজপত্র কারাগারে না পৌঁছানোয় তার মুক্তি মেলেনি। এরপর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তোরাব আলীকে ৩ জানুয়ারি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়। তোরাব আলীর বাবার নাম মাইনুদ্দিন আকন্দ। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বদরপাশা গ্রামে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আলোচিত ওই মামলায় জজ আদালতে যে দুই রাজনৈতিক নেতার যাবজ্জীবন সাজার রায় হয়েছিল। তাদের মধ্যে তোরাব আলী একজন। এ ছাড়া তোরাব আলীকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও পাঁচ বছর কারাদ- দেয়া হয়েছিল। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। তার মতো বিএনপির সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুও এ মামলায় যাবজ্জীবন সাজার রায় পেয়েছিলেন। হাই কোর্টে আপিল শুনানির আগেই রাজশাহী কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০১৫ সালের ৩ মে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পিন্টু মৃত্যু হয়। সূত্রগুলো জানায়, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ প্রায় ৭৪ জন নিহত হন। ওই হত্যাকান্ডে সহায়তার অভিযোগে তোরাব আলীকে ৩০২ ধারায় সাজা দিয়েছিলেন জজ আদালতের বিচারক। রাজধানী হাজারীবাগ থানাধীন ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি তোরাব আলীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছিল, বিডিআরের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সুপরিকল্পিত এ বিদ্রোহের কথা আগেই জানতে পারেন। কিন্তু তিনি তা কর্তৃপক্ষকে জানাননি। পিলখানা হত্যা মামলায় হাই কোর্ট ১৩৯ জনের ফাঁসির রায় বহাল রেখে ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড- দিয়েছে। এ ছাড়া ২২৮ জনের তিন থেকে দশ বছরের সাজা হয়েছে। খালাস পেয়েছেন মোট ২৮৮ জন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, তোরাব আলীর ছেলে হারুনুর রশিদ লিটন ওরফে লেদার লিটন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগ উত্তরের সাবেক সহসভাপতি এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির কয়েক ডজন মামলার আসামি লিটন পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’ আছেন।
×