ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

টানা দুদিন আশ্রয় ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে ওআইসি প্রতিনিধি দলের বিবৃতি

রাখাইনে রোহিঙ্গারা গণহত্যা ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের শিকার

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

রাখাইনে রোহিঙ্গারা গণহত্যা ধর্ষণসহ বর্বর নির্যাতনের শিকার

মোয়াজ্জেমুল হক/ এইচএম এরশাদ ॥ বাংলাদেশ সফররত ওআইসির ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের বৃহস্পতি ও শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালি ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, ধর্ষণসহ বর্বর নানা নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আশ্রিত বহু রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে ওআইসি প্রতিনিধি দল নিশ্চিত হয়েছেন, পূর্বের বসতভিটা, সহায় সম্পত্তি, নিরাপদ চলাচলসহ নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা দিলে রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবে। সফররত ওআইসি প্রতিনিধিদলে রয়েছেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান মেড এসকে কাগুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ড. রাই হানাহা, এডামা নানা, নির্বাহী পরিচালক মার্গোব সেলিম বাট, হাফিদ এল হাসমি, আকমেদ আল গামদি, হাসান আবেদিন, ড. রশিদ আল বালুচি, মাহা আকিল, আবদুল্লাহ কাবি ও মোহাম্মদ গালাবা। প্রতিনিধিদল গত বৃহস্পতিবার উখিয়ার কুতুপালং এবং শুক্রবার বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে। এ সময় তাদের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারে পৌঁছার পর দুপুরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ আলী হোসেন উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। শুক্রবার প্রতিনিধি দলের পক্ষে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, রাখাইনে সংঘটিত বর্বরতার ঘটনা নিয়ে তারা ওআইসির কাছে একটি প্রতিবেদন পেশ করবে। শুক্রবার প্রতিনিধি দলের সদস্য ড. রশিদ আল বালুচি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আমরা দু’দিন ধরে উখিয়া, কুতুপালং ও বালুখালি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছি। রাখাইন রাজ্যে তাদের ওপর যে ঘটনা ঘটেছে তা শুনে আমরা বিস্মিত। তিনি আরও বলেন, আমরা আগেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ বর্বরতার কথা শুনেছি। কিন্তু ক্যাম্পে এসে স্বজনহারা এসব রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে যা শুনেছি তা আমাদের বিস্মিত করেছে। রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্য গণহত্যার শিকার হয়েছে। বহু নারী ও যুবতী ধর্ষিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রাণ রক্ষার্থে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। রশিদ বালুচি আরও বলেন, আমরা দু’দিনের সফরকালে যতটুকু জেনেছি তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন ওআইসির সদর দফতরে পেশ করা হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে এবং মিয়ানমারে তাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য ওআইসি চাপ প্রয়োগ করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশ্বের একাধিক ফোরামে ওআইসির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুটি তুলে ধরা হবে। ড. রশিদ আল বালুচি রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। নতুন এসেছে শতাধিক ॥ এদিকে, শুক্রবার টেকনাফ সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে নতুন করে শতাধিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু অনুপ্রবেশ করেছে। উপকূলে আসার পর এদের নিবন্ধিত করে আশ্রয় ক্যাম্পে প্রেরণ করা হয়েছে।
×