ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেক কেটে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন, আজ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৫ জানুয়ারি ২০১৮

কেক কেটে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন, আজ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বর্ণাঢ্য আয়োজনে দেশব্যাপী ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার সারাদেশে ছাত্রলীগের প্রতিটি ইউনিটের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি বের করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ ও দেশরতœ শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কলম ধরি, জঙ্গীবাদ ও মাদকমুক্ত দেশ গড়ি’ স্লোাগানে এবার ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্রংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এদিকে, জনগণের ভোগান্তি এড়াতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে রাজধানীতে কোন শোভাযাত্রা বের করা হয়নি। আজ শুক্রবার ছুটির দিনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান অনেক নেতাকর্মী। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, প্রতিবছর ৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি বের করা হয়। রাজধানীবাসীর ভোগান্তি এড়াতে এবার আমরা সেই রেওয়াজ ভেঙ্গেছি। বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় রাজধানীবাসীর ভোগান্তি এড়াতে ৬ জানুয়ারি র‌্যালি করা হবে। রাজধানী ছাড়া দেশের অন্য সকল ইউনিটে আনন্দ র‌্যালি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কার্জন হল প্রাঙ্গণে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদযাপন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স। বুধবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্লোগান দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর মধ্যে দেখা গেছে উৎসবের আমেজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন একে অন্যকে। সকাল হতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড, কলেজের ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে আসতে থাকে। ‘শুভ শুভ শুভ দিন, ছাত্রলীগের জন্মদিন’ সেøাগানে মুখরিত হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এর আগে সকাল ৬ টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং সাড়ে ৬টায় ধানম-ির ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এদিকে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার সারাদেশে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালন করবে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ৫ জানুয়ারি দেশের মানুষের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। এই দিনে প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে আমরা বিএনপি-জামায়াতের জ্বালাও-পোড়াও নামক সন্ত্রাসবাদ থেকে পরিত্রাণ পেয়ে আজকে উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছি। তাই এই দিনটি আমাদের জন্য গুরুত্ববহ। ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৮ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ৯ জানুয়ারি স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী এবং ১১ জানুয়ারি অপরাজেয় বাংলায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা করা হবে। এসব কর্মসূচী সম্পাদনের জন্য করা হয়েছে নয়টি উপকমিটি। কমিটির প্রধান ইমতিয়াজ বুলবুল জনকণ্ঠকে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের জন্য নয়টি উপকমিটি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি কর্মসূচী সফলভাবে বাস্তবায়ন করব। এদিকে মতাদর্শিক কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অপর একটি অংশ (জাসদপন্থী) আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবন চত্বরে ‘এক দেশ এক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু কর’ এবং ‘ডাকসুসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দাও’ স্লোগানে সমাবেশ ও র‌্যালি বের করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার। এর আগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন। ১৯৪৮ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলে সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছিল। হাঁটি হাঁটি পা পা করে ৭১ বছরে পা দিল ছাত্রলীগ। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন এবং সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দাবি আদায়ের সংগ্রামে ঝরে গেছে বহু নেতাকর্মীর প্রাণ। রাজপথের আন্দোলনেও আওয়ামী লীগের ভ্যানগার্ড হয়ে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া এ ছাত্রসংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
×