বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নতুন তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে দফতর বণ্টনের পাশাপাশি পুরনো চারজনের দায়িত্ব বদল করা হয়েছে। সরকারের মেয়াদের চার বছরের মাথায় এসে মন্ত্রিসভার এই রদবদল করা হলো। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এদিকে বুধবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম দফতর বণ্টন এবং রদবদলের তথ্য সাংবাদিকদের জানান।
বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে পাঠিয়ে বিমান ও পর্যটনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে নতুন মন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামালকে। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি এ সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের সময় জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে পরিবেশ ও বন এবং জাতীয় পার্টির (এরশাদের) প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবার তাদের দু’জনের দায়িত্ব পাল্টে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ পরিবেশে এবং মঞ্জু পানিসম্পদের দায়িত্বে এসেছেন।
মন্ত্রী হিসেবে নতুন শপথ নেয়া মোস্তাফা জব্বার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। হজ নিয়ে মন্তব্যের কারণে ২০১৪ সালের অক্টোবরে আবদুল লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রিত্ব হারানোর পর খালিই ছিল এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদটি। সরকারের দেড় বছরের মাথায় ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তারানা হালিম। তাকে এবার পাঠানো হয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়ে। আর নতুন প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী পেয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের দায়িত্ব।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা নারায়ন চন্দ্র চন্দ পদোন্নতি পাওয়ার পর ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসা মুহাম্মদ ছায়েদুল হক মারা গেলে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদটি শূন্য হয়। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এবং প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন পরের বছর মারা গেলে ২০১৬ সালের ১৯ জুন প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে সমাজকল্যাণে পাঠানো হয়। এবার তিনি মন্ত্রী হিসেবে পেলেন রাশেদ খান মেননকে।
নারায়ন চন্দ্র চন্দ, মোস্তাফা জব্বার, শাহজাহান কামাল ও কেরামত আলী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে শপথ নেন।
সফল হয়েছিÑ মেনন ॥ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হয়েছেন বলে দাবি করেছেন রাশেদ খান মেনন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর আগের মন্ত্রণালয়ে নিজের কাজ ও সাফল্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের কাছে বুধবার বিকালে তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সদ্য বিদায়ী এই মন্ত্রী বলেন, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যে চ্যালেঞ্জ তা আমি ভালভাবে ম্যানেজ করেছি। এখানে আমি সফল বলে মনে করি।
মঙ্গলবার নতুন তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের পরদিনই বুধবার মন্ত্রিসভার দফতর পুনর্বণ্টন করা হয়েছে। এদিন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা রাশেদ খান মেননকে দেয়া হয়েছে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব। নতুন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, সমাজকল্যাণ এমন একটি মন্ত্রণালয় যেখানে একদম সাধারণ মানুষ, প্রান্তিক মানুষ, প্রতিবন্ধী ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষকে নিয়ে কাজ করতে পারব। তাই আমি মনে করি এখানে আরও বেশি কাজ করার সুযোগ আছে। বিশেষ করে মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করার সুযোগ হলো। আশা করি এই মন্ত্রণালয়েও সফলভাবে কাজ করতে পারব।