ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বগুড়া সৈয়দ আহমেদ কলেজ

পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েও নিয়োগপত্র পাননি ৩৫ শিক্ষক

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৮

পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েও নিয়োগপত্র পাননি ৩৫ শিক্ষক

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার সুখানপুকুর সৈয়দ আহমেদ কলেজে ৭টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করে প্রতিটি বিষয়ের জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রভাষকে (মোট ৩৫ জন) ছয় মাস আগে নির্বাচিত করার পরও যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। তাদের মধ্যে অনার্সের বিষয়গুলোর জন্য একজন করে প্রভাষককে প্রায় দুই মাস আগে মৌখিকভাবে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তাদেরও নিয়োগপত্র ও বেতন দেয়া হয়নি। নিয়োগপত্র বঞ্চিতরা কলেজের অধ্যক্ষ ও গবর্নিং বোর্ডের সভাপতির কাছে দফায় দফায় যোগাযোগ করেছেন। কবে তাদের নিয়োগপত্র দেয়া হবে এর কোন সদুত্তর তারা পাচ্ছেন না। গাবতলি উপজেলায় সৈয়দ আহমেদ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয় গত শতকের ষাটের দশকে। কলেজটি বেসরকারী। বর্তমানে এই কলেজে কয়েকটি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাত হাজারেরও বেশি। গত বছর ৬ ফেব্রুয়ারি এই কলেজে আরও ৮টি বিষয়ে অনার্স কোর্স খোলার নিমিত্তে স্থানীয় দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে বলা হয় ইংরেজী বিষয়ে ৪জন, উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে ৬ জন এবং অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলাম শিক্ষা, দর্শন, পরিসংখ্যান ও মনোবিজ্ঞান প্রতিটি বিষয়ে ৫ জন করে প্রভাষক নিয়োগ করা হবে। প্রকাশের দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতি প্রার্থীকে এক হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট/ পে-অর্ডারের মাধ্যমে অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করতে বলা হয়। শতাধিক প্রার্থী নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আবেদন করেন। পরে মনোবিজ্ঞান বিষয় বাদ দিয়ে বাকি বিষয়গুলোর জন্য প্রভাষক নিয়োগে গত বছর জুন মাসে প্রার্থীদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। প্রতিটি বিষয়ে সাক্ষাতকার গ্রহণের জন্য গবর্নিং বোর্ডের সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারী কলেজের একজন শিক্ষক ও অধ্যক্ষসহ ৪ সদস্য করে কমিটি গঠিত হয়। পদাধিকার বলে ওই কলেজের সভাপতি গাবতলি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এন ও)। উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগের সাক্ষাতকার নেয়া হয় গত বছর ১৪ জুন। বোর্ডে ছিলেন সভাপতি গাবতলি ইউএনও মোঃ মনিরুজ্জামান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলী হায়দার, বগুড়া সরকারী আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শামস্ উল আলম (সদ্য অবসরপ্রাপ্ত) ও কলেজ অধ্যক্ষ মোঃ সাইদুজ্জামান। গত বছর জুন মাসে ৩৫ জনকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত করে মৌখিকভাবে নিয়োগ দেয়া হয়। তাদের সাত দিনের মধ্যে কলেজ থেকে নিয়োগপত্র নিয়ে যোগদান করতে বলা হয়। কথা ছিল এই ৩৫ জনই নিয়োগপত্র পেয়ে যোগদান করে ক্লাস নেবেন। তারপর গত বছর ১৪ নবেম্বর ক্লাস শুরু হলে উল্লিখিত বিষয়গুলোর জন্য মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে থেকে একজন করে বেছে নিয়ে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। তবে কোন নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। যোগদানের কাগজও নেয়া হয়নি। বাকিদেরও কোন নিয়োগপত্র, যোগদান ও ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হয় না। নিয়োগপত্রবিহীন মৌখিক নিয়োগপ্রাপ্তরা (নাম প্রকাশ করতে চাননি) বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন নিয়েই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। তারপরও নিয়োগপত্রও দেয়া হয়নি। বগুড়ার সৈয়দ আহমেদ কলেজে প্রভাষক পদে নির্বাচিত হয়ে নিয়োগ পেয়েও তারা নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না। যোগদানও করতে পারছেন না। যা তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছে। এই বিষয়ে মঙ্গলবার সকালে কলেজ অধ্যক্ষ সাইদুজ্জমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিটি বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে একজন করে প্রভাষককে যোগদান করে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি তাদের নিয়োগপত্র এনেছেন। এখনও হস্তান্তর করা হয়নি। নিয়োগপ্রাপ্ত বাকিদের চার বছর অনার্স ক্লাসে পর্যায়ক্রমে প্রতি বছর নিয়োগপত্র দিয়ে যোগদান করিয়ে ক্লাস নেয়ার অনুমতি দেয়া হবে। এখন ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম তাই তাদের নিয়োগপত্র হাতে দেয়া হয়নি। যোগদান করতে বলা হয়নি। এই বিষয়ে কলেজের সভাপতি ইউএনও মনিরুজ্জামানের সঙ্গে মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে তিনিও একই কথা বলেন। বাড়তি জানান, মেধাক্রম অনুযায়ী তাদের প্রতিবছর নিয়োগপত্র দেয়া হবে।
×