ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘মাঠের বাইরের সব কিছু ঠিক রাখা আমাদের দায়িত্ব’

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩ জানুয়ারি ২০১৮

‘মাঠের বাইরের সব কিছু ঠিক রাখা আমাদের দায়িত্ব’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলের অনুশীলন শুরু হলেও এতদিন অনুশীলনে ছিলেন না ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ছুটি নিয়ে দেশের বাইরে গিয়েছিলেন। এবার অনুশীলনে যোগ দিলেন। যোগ দেয়ার আগেই সাব্বির রহমান রুম্মনের শাস্তির কথা জেনে যান। এ ইস্যুতে সবাইকে শিক্ষা নেয়ার কথাও জানান। বলেন, ‘মাঠের বাইরের সব কিছু ঠিক রাখা আমাদের দায়িত্ব।’ জাতীয় লীগের ষষ্ঠ রাউন্ডের খেলায় রাজশাহীতে এক দর্শককে লাঞ্ছিত করেন সাব্বির। সেই সঙ্গে ম্যাচ অফিসিয়ালদেরও হুমকি দেন। ম্যাচ চলাকালে মোবাইল ফোনেও কথা বলেন। বিসিবি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দেয় সাব্বিরকে। কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেয়ার সঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় সাব্বিরকে। আবার ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়। তাতে বিপদেই পড়ে গেছেন সাব্বির। কোটি টাকার মতো হাতছাড়া হয়ে যাবে। গতবছর নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। সেই সঙ্গে ম্যাচ ফি কাটা গেছে। এবার ২০ লাখ টাকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে খেলতে পারবেন না। মোটা অংকের টাকা হাতছাড়া হবে। বিসিএলও খেলতে পারবেন না। সেই সঙ্গে জাতীয় দলের চুক্তি থেকে বাদ পড়ায় প্রতিমাসে ২ লাখ টাকা করে হাতছাড়া হবে। চরম ক্ষতির মুখেই পড়লেন সাব্বির। নতুন বছরের প্রথমদিনেই বিসিবির নেয়া এমন পদক্ষেপ কাঁপিয়ে দিয়েছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গনকে। খেলোয়াড়রা যেন আরও বেশি সাবধান হয়ে যেতে শুরু করেছেন। আবার বিসিবি ক্রিকেটার, কর্মকর্তাদের ওপর কড়াকড়ি নির্দেশও জারি করেছে। মিডিয়া এড়াতেই এ কড়াকড়ি নির্দেশনা। সিইও, মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজারের অনুমতি ব্যতীত মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে বোর্ডের সকল স্টাফ, জাতীয় দলের ক্রিকেটার, টিম ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচক প্যানেলের প্রতিটি সদস্যের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এই মর্মে সোমবার (১ জানুয়ারি) সংশ্লিষ্টদের বরাবর একটি অফিস আদেশ পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। আদেশ অনুযায়ী বিসিবির কোন স্টাফ, জাতীয় ক্রিকেট দলের প্লেয়ার, ম্যানেজমেন্ট এবং নির্বাচক কমিটির সদস্যরা রেডিও, টিভি, প্রিন্ট এবং ওয়েবসাইট, ওয়েব পোর্টাল এবং বার্তা সংস্থাকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার দিতে পারবেন না। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও), মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ম্যানেজারের অনুমতি বাধ্যতামূলক। ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে এমন কোন স্ট্যাটাস ও কমেন্টস পোস্ট করা যাবে না, যাতে বিসিবির নীতিনির্ধারণে ব্যত্যয় ঘটে। বোর্ডের স্টাফ থেকে শুরু করে জাতীয় দলের নির্বাচক প্যানেল, খেলোয়াড় এবং টিম ম্যানেজমেন্ট কোন দৈনিক পত্রিকা, ওয়েবসাইট, ওয়েব পোর্টাল এবং বার্তা সংস্থায় এক্সক্লুসিভ কলাম লিখতে পারবেন না। এমনকি টিভি টকশো এবং ক্রীড়াভিত্তিক অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না। তবে জাতীয় দলের ক্রিকেটার এবং টিম ম্যানেজমেন্টকে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে মিডিয়াকে সহায়তার কথা এই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন; বিসিবি ও আইসিসির লাইসেন্সধারী এবং স্বত্বাধিকারী সম্প্রচার মাধ্যমগুলোকে এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট, সাক্ষাতকার দিতে পারবেন। বিসিবি ও আইসিসির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও টুইটার এবং ইউটিউব চ্যানেলে তারা এক্সক্লুসিভ কন্টেন্ট, সাক্ষাতকার দিতে পারবেন আর ম্যাচ পূর্ব ও পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন এবং নন ম্যাচ’ডে সাক্ষাতকার দিতে পারবেন। আদেশগুলো বাংলাদেশ ক্রিকেটের চুক্তির বাইরে থাকা প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পাওয়া ক্রিকেটারদের জন্যও প্রযোজ্য। আদেশগুলো পালনে ব্যর্থ হবেন ধরে নেয়া হবে তারা বিসিবির নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে শৃঙ্খলা কমিটি। সাব্বির যে ভুল করেছেন ভবিষ্যতে দলের আর কেউ যেন তা না করে সে বিষয়ে সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন মাশরাফি। বলেছেন, ‘সামনে যেন আমরা কোন ভুল না করি। সাব্বিরের সঙ্গে হয়েছে; কিন্তু আর কারও সঙ্গে যাতে না হয়। এমনকি আমার সঙ্গেও। আমাদের কাজ হলো ভাল পারফর্ম করা। সুতরাং আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, মাঠের বাইরে আমরা যাতে আমাদের কাজগুলো ঠিক করি।’ মাশরাফি আরও জানান, ‘প্রথম কথা হচ্ছে যে, বিসিবির অধীনে আমরা সবাই। এটা মেনে নেয়াটাও দায়িত্ব। একই সঙ্গে আমাদের সবাই ফলো করে। তরুণরা যারা উঠে আসছে, অনুর্ধ-১৫, অ-১৬, অ-১৯; তারাও আমাদের ফলো করে। সুতরাং মাঠের বাইরের সব কিছু ঠিক রাখা আমাদের দায়িত্ব। যেটা হয়েছে, সেটা মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই।’
×