ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিরোপার আরও কাছে ঢাকা আবাহনী

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১ জানুয়ারি ২০১৮

শিরোপার আরও কাছে ঢাকা আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রথম লেগে তাও লড়াই করতে পেরেছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কিন্তু ফিরতি লেগে তার ছিটেফোঁটাও লক্ষ্য করা যায়নি। ফলস্বরূপ অসহায় আত্মসমর্পণ। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলের ২০তম রাউন্ডের ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীর কাছে ২-০ গোলে হেরেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ইংরেজী ২০১৭ সালের শেষ দিন রবিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আকাশী জার্সিধারীদের হয়ে গোল দু’টি করেন ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। দু’দলের প্রথম লেগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ঢাকা আবাহনী জিতেছিল ৩-২ গোলে। প্রত্যাশিত এই জয়ে শিরোপা ধরে রাখার পথে আরেকধাপ এগিয়ে গেছে ঢাকা আবাহনী। ২০ ম্যাচে শীর্ষে থাকা দলটির পয়েন্ট সর্বোচ্চ ৪৮। আর ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার নয় নম্বরে অবনমন হয়েছে ব্রাদার্সের। এই জয়ে রবিবার রাতে চট্টগ্রাম আবাহনী ও শেখ জামাল ধানম-ির মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচে যে দলই জিতুক না কেন শীর্ষস্থান অক্ষুণœ থাকবে পেশাদার লীগের রেকর্ড সর্বোচ্চ পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের। অবশ্য ট্রফি ধরে রাখতে শেষ দুই ম্যাচে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে সানডে, রুবেল, ওয়ালী ফয়সালদের। কেননা এই দু’টি ম্যাচে ঢাকা আবাহনীর প্রতিপক্ষ শিরোপা রেসে থাকা শেখ জামাল ধানম-ি ও চট্টগ্রাম আবাহনী। তবে ম্যাচ দু’টি জিতলে কোন হিসাব-নিকাশ ছাড়াই টানা শিরোপা জয়ের উল্লাসে মাতবে ভারপ্রাপ্ত কোচ আলী ইয়াকুবের দল আর গত রাতে চট্টগ্রাম আবাহনী-শেখ জামাল ম্যাচ যদি ড্র হয় তাহলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে আরও এগিয়ে যাবে ঢাকা আবাহনী। ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাদার্সের রক্ষণে চড়াও হয়ে খেলতে থাকে ঢাকা আবাহনী আর গোপীবাগের দলটি বেছে নেয় কাউন্টার এ্যাটাক পদ্ধতি। যে কারণে পুরো ম্যাচে বিক্ষিপ্ত কয়েকটি আক্রমণ ছাড়া বলার মতো কিছুই করতে পারেনি নিকোলো ভিটোরোভিচের দল। আক্রমণাত্মক খেলার সুবাদে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই দারুণ সুযোগ পায় ঢাকা আবাহনী। কিন্তু বামপ্রান্ত থেকে ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের ক্রসে হেড নিতে ব্যর্থ হন চ্যাম্পিয়ন দলের দুই ফরোয়ার্ড সাদ ও জীবন। এরপর অনেকটা সময় ঢিমেতালে খেলতে থাকে দু’দলই। ম্যাচের ২১ মিনিটে প্রথমবারের মতো আক্রমণে আসে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে প্রায় গোল পেয়েই গিয়েছিল গোপীবাগের দলটি। ডানপ্রান্ত থেকে আবাহনীর এক ডিফেন্ডারের ভুল পাসে বল পান প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার সালাউদ্দিন। তার ক্রসে দারুণ হেড করেন ব্রাদার্সের মিডফিল্ডার নুর রহমান জোসেপ। কিন্তু তার দারুণ হেড জালে প্রবেশের মুখে ফিরিয়ে দিয়ে আবাহনীকে রক্ষা করেন ডিফেন্ডার টুটুল হাসান বাদশা। ৩২ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোল আদায় করে নেয় ঢাকা আবাহনী। মিডফিল্ডার ইমন মাহমুদের কর্নার ব্রাদার্স গোলরক্ষক সুজন চৌধুরী ফেরাতে ব্যর্থ হন। তার হাত ফসকে বল আসে আবাহনী ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরীর কাছে। কোন ভুল করেননি তিনি, আলতো টোকায় পাঠিয়ে দেন জালে (১-০)। পরের মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ নষ্ট করেন ফরোয়ার্ড নাবিব নেওয়াজ জীবন। ৩৬ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে আবাহনীর সানডে চিজোবার দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য সাইডপোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ৪০ মিনিটে ভাল সুযোগ হাতছাড়া করেন আবাহনীর ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। ডানপ্রান্ত থেকে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে যেয়ে ডি বক্সের কোনা থেকে শট নেন তিনি। কিন্তু শটটি অল্পের জন্য সাইডপোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। বিরতির পর দ্বিতীয় মিনিটেই (৪৭ মিনিট) গোলের ভাল সুযোগ সৃষ্টি করে ঢাকা আবাহনী। বল আদান-প্রদান করে ব্রাদার্সের ডি বক্সে ঢুকে পড়েন আবাহনীর মিডফিল্ডার সোহেল রানা। এরপর তার নেয়া শট বারপোস্ট উঁচিয়ে বাইরে যায়। ম্যাচের ৬০ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় আবাহনী। দলটির অধিনায়ক ও গোলরক্ষক শহিদুল আলমের লম্বা শট ব্রাদার্সের ডি বক্সে মাথা ছুঁয়ে নিয়ন্ত্রণে নেন রুবেল মিয়া। এরপর প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ও ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে আলতো টোকায় বল জালে জড়ান ফরোয়ার্ড রুবেল (২-০)। এই গোলের পরই মূলত আবাহনীর জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। বাকি সময়ে আরও কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি আবাহনীর ফরোয়ার্ডরা। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে ব্যবধান কমানোর সুযোগ আসে ব্রাদার্সের। কিন্তু কাজে লাগাতে না পারায় আরেকটি হারের ক্ষত নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গোপীবাগের দলটিকে।
×