ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে জিসান

আব্বু নিজেই আম্মুকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলে

প্রকাশিত: ০৫:২২, ১ জানুয়ারি ২০১৮

আব্বু নিজেই আম্মুকে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ আমার আব্বু জাহিদুল ইসলাম বালিশ চাপা দিয়ে আম্মু রুপনা আক্তার দুলালীকে মেরে ফেলে। এ সময় খাটে জোরে শব্দ হয়। আমি দেখতে পেয়ে ভয়ে কম্বলের নিচে মাথা ঢুকিয়ে ফাঁক করে দেখি আম্মুর লাশটা আব্বু বাথরুমে ঢুকিয়ে অনেকক্ষণ পর বাহির হয়ে আসে। সকালে জানতে পারি আমার আম্মুর লাশ বাথরুমে ঝুলছে। আমার আব্বুই আমার আম্মুকে মেরে ফেলেছে। আমি আব্বুর বিচার চাই। কিন্তু পুলিশ এখনও আমার আব্বুতে গ্রেফতার করেনি। রবিবার সকাল ১১টায় নীলফামারী সদরের পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের জামতলী গ্রামে নানা নানীর বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে ঠিক এভাবেই কথাগুলো বলছিল আট বছরের শিশু রওনাকুল ইসলাম ওরফে জিসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জিসানের ১৩ মাস বয়সের ছোট ভাই রাফিউল ইসলাম রাফি, নানা মোখলেছার রহমান, নানি রূপালী বেগমসহ তাদের নিকট আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী। এ সময় নানা মোখলেছার রহমান জানান ২০০১ সালে তার মেয়ে রুপনা আক্তার ওরফে দুলালীর সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের বাজিতপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। মেয়ে ও জামাই নীলফামারী শহরের প্রগতিপাড়ায় ক্রয়করা জমিতে বাসা বানিয়ে বসবাস করতো। জামাই শহরের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের গণিত শিক্ষক। তার মেয়ে ২০১৩ সালের অক্টোবর মাস হতে পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত ছিল। মেয়ের সুখের জন্য তাদের সংসারে অনেক কিছুই দিয়েছি। তার পরেও যৌতুকলোভী জামাই দফায় দফায় টাকার জন্য আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। সর্বশেষ আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করে। এই টাকা না পেয়ে চলতি বছরের ৯ নবেম্বর সন্ধ্যায় শহরে প্রগতিপাড়ার বাসায় জামাই ও তার মা বাবা এবং ভাই আমার মেয়েকে মারপিট করে। এরপর জামাইয়ের বাবা মা ও ভাই গ্রামের বাড়িতে ফিরে যায়। পরের দিন ১০ নবেম্বর সকালে খবর পাই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। ছুটে এসে জামাইয়ের বাসার বারান্দায় আমরা মেয়ের মরদেহ শুয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পাই। কিন্তু বাসায় জামাই ও তাদের আট বছরের বড় ছেলে রওনাকুল ইসলাম ওরফে জিসানকে খুঁজে পাই না। পুলিশসহ তাদের কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। ছোট ছেলেটাকে বাসায় ফেলে রেখে জামাই পালিয়ে যায়।
×