ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফারুক হোসেন

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ॥ সমাবর্তনে প্রাণের উচ্ছ্বাস

প্রকাশিত: ০৬:৫৭, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ॥ সমাবর্তনে প্রাণের উচ্ছ্বাস

আনন্দ মূখর পরিবেশে সম্পন্ন হলো ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৫ম সমাবর্তন। গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে সদ্য উত্তীর্ণ গ্র্যাজুয়েটদের পদভারে মূখরিত হয়ে ওঠে ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ। তাদের পরনে ছিল সমাবর্তনের কালো গাউন ও মাথায় ছিল টার্সেল। অনুষ্ঠান শুরু হওয়া কথা ছিল সকাল ১০টায়। কিন্তু সাড়ে ৮টা থেকে তাদের ভিড় জমতে থাকে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন এর সামনে কেউ সেলফি তুলছে গ্রুপ হয়ে, আবার কেউ ছবি তুলছে ভবিষ্যত জীবনকে স্মৃতিময় করে তুলতে। হ্যাঁ, ওইদিন জীবনকে স্মৃতিময় করে তোলার ক্ষেত্র বটে। অধ্যয়ন শেষে সবাইকে তো কর্মময় জীবনে প্রবেশ করতে হবে। এরপর সাংসারিক জীবন। তখন আর বন্ধুদের সান্নিধ্য নেয়া বা দেয়া সম্ভব হবে না। কারণ, জীবন তখন ব্যস্ত ও কঠিন হয়ে পড়ে। তখন স্মৃতিই ভরসা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিভাগ অনুযায়ী সারিবদ্ধভাবে হলে প্রবেশ করতে থাকে সদ্য গ্র্যাজুয়েটরা।্ প্রবেশ মুখে তাদের অভ্যর্থনা জানান, ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কে এম মোহসীন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ডা. শহীদুল কাদির পাটোয়ারী ও ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। কিছুক্ষণের মধ্যে কানায় কানায় ভরে যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের হল। শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান। সমাবর্তনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে দক্ষ, সৎ এবং নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সমাবর্তন বক্তা ড. আকবর আলী খান বলেন ‘শিক্ষা অবশ্যই আমাদের অনেক নতুন তথ্য শিখিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করে। কিন্তু শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য শুধু তথ্যের সম্প্রসারণ নয়। মূল লক্ষ্য হলো, শিক্ষার্থীদের মূল্যবোধে উজ্জীবিত করা। সমাবর্তনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘২০১০ সালের শিক্ষা আইন অনুসারে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চললে কোন সমস্যা থাকত না। কোন কোন বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসরণ না করায় নানাবিধ সমস্যা হচ্ছে। স্বাগত বক্তব্যে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ডা. শহীদুল কাদির পাটোয়ারী বলেন, ‘জ্ঞানই শক্তি’ আমরা এ আদর্শকে ধারণ এবং শিক্ষাদানে কোয়ালিটি বজায় রেখে এ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. কে এম মোহসীন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. এবিএম মফিজুল ইসলাম পাটোয়ারী ১৯৯৫ সালে ৭ এপ্রিল মহান আদর্শ নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। তিনি মূলত মধ্যবিত্ত ও নি¤œবিত্তদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষাক্ষত্রে বৈপব্লিক পরিবর্তন এসেছে। ফলে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। সমাবর্তনে ২ জন চ্যান্সেলর’স এ্যাওয়ার্ড, ৭ জন ভাইস চ্যান্সেলর’স এ্যাওয়ার্ড ও ৩ জন ডিন’স এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন ইসরাফিল আলম এমপি, ইতিহাসবিদ ও অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম। এ ছাড়াও সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, সিনেট সদস্য, একাডেমেমিক কাউন্সিলের সদস্য, অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, শিক্ষকসহ সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। শেষে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন প্রখ্যাত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ।
×