ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কিছুই বললেন হাতুরা

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কিছুই বললেন হাতুরা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ হাতুরা সিংহের হঠাৎ বিদায় নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। অনেক নাটকীয়তার পর বাংলাদেশে এসে বোর্ড (বিসিবি) কর্তাদের দায়িত্ব ছাড়ার কারণ জানিয়েছেন। তবে মিডিয়ার মুখোমুখি হননি। টাইগার ক্রিকেট নিয়ে সফলতম কোচের ভাবনাটা তাই অজানাই ছিল। সামনে নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার কোচ হিসেবে বাংলাদেশে আসছেন। এত দিনে ক্রিকেটের এক জনপ্রিয় সাইটে দেয়া বিশদ সাক্ষাতকারে অনেক কিছুই বললেন তিনি। যেখানে তাকে উদ্ধৃত করে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দেয়া নাজমুল হাসান পাপনের বক্তব্যকে ‘বিসিবি বস ইজ ভেরি ক্লেভার (বুদ্ধিমান)’ বলে উল্লেখ করেছেন। জানিয়েছেন টাইগার ক্রিকেটের সঙ্গে কাটানো ভাল-মন্দ স্মরণীয় সব স্মৃতির কথাও। সর্বোপরি জন্মভূমি শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটের দায়িত্ব পেয়ে খুশি হাতুরা। ‘এটা আসলে সত্যি নয়। মি. নাজমুল হাসান খুব চালাক, বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি কিছু কারণে ওই মন্তব্য ব্যবহার করেছেন। হয়ত সাকিবকে ‘ফায়ার আপ’ করার জন্য কাজটা করতে পারেন। সাকিবকে এখন অধিনায়ক করা হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতি সামলে নিতে তিনি খুবই বুদ্ধিমান।’Ñ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট থেকে বিশ্রাম নিয়ে আলোচনায় ছিলেন সাকিব। কারণ ব্যাখ্যা করতে বাংলাদেশে আসার পর হাতুরা কি বলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে পাপনের বক্তব্য ছিল, ‘সফরটা নিয়ে প্রথম থেকেই তার (হাতুরা) একটা অসন্তুষ্টি ছিল। খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়েও তার সমস্যা ছিল। উদাহরণ হিসেবে, সাকিব টেস্ট খেলেনি, এটাও সে মেনে নিতে পারেনি। তার কথা, সাকিব কেন খেলবে না? এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা সফরে এমন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় কেন দেশের হয়ে খেলবে না!’ ক্রিকবাজের শ্রীলঙ্কা প্রতিনিধিকে দেয়া আলোচিত সাক্ষাতকারে বিষয়টা এভাবে ব্যাখ্যা করেন হাতুরা। একপর্যায়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বাংলাদেশে তার তার স্মরণীয় মুহূর্ত কি? ‘অনেকগুলো মুহূর্তই আছে। তবে একটি ঘটনা আমাকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছিল। একবার আমি অস্ট্রেলিয়ার সিডনির ওয়েস্টফিল্ড শপিং সেন্টারের সামনে হাঁটছিলাম। হঠাৎ এক তরুণ এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম। তাকে সরিয়ে দিয়ে বন্ধনমুক্ত হলাম। তখন সেই তরুণ হেসে আমাকে বলল, “দেখ, আমি একজন বাংলাদেশি। তুমি আমাদের ক্রিকেটের জন্য যা করেছ, সে জন্য অফিসে আমার মাথা উঁচু হয়েছে। তোমাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।’ হাতুরা বলেছেন, ‘এটি আমার জন্য অসাধারণ একটি ঘটনা ছিল। আমার মনে হয়েছে, বাংলাদেশের ক্রিকেটের উন্নয়নে তাহলে কিছু ভূমিকা আমি রাখতে পেরেছি। একই ধরনের অনুভূতি আমি পেয়েছিলাম ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর। তখন শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটপ্রেমীরা আমাদের এভাবেই ভালবাসত। মাঠের সাফল্যে বিশেষ মুহূর্ত সম্পর্কে তিনি বলেন পি সারা ওভালে তার নিজ দেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে দিন বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট জিতেছিল সেই দিনটির কথা, ‘শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট জয় আমার কোচিং ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। আসলে ম্যাচটি আমার জন্য খুব আবেগের ছিল। কারণ আমি শ্রীলঙ্কার নাগরিক, আর পি সারা ওভাল আমার ঘরের মাঠ। তা ছাড়া বাংলাদেশের শততম টেস্ট ছিল সেটি। এমন এক ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে দেয়া ছিল দুর্দান্ত এক অর্জন। সেদিনের স্মৃতি আমি কখনোই ভুলব না।’ জন্মভূমির দায়িত্ব প্রসঙ্গে হাতুরা বলেন, ‘শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে এটা আমার চতুর্থবারের মতো ফিরে আসা। এখন এমন একটা পর্যায়ে এসেছি যে পরিবার থেকে বেশিদিন দূরে থাকতে পারব না। শ্রীলঙ্কার কোচ হওয়ার স্বপ্ন ছিল আমার। বাংলাদেশে সাড়ে তিন বছর থাকার পর যদি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পূর্ণ চার বছর কাটাতে পারি, তাহলে সেটাই হবে সেরা সময়।’
×