ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

হাতুরা ছিলেন কঠোর, অনুশীলনে আদর করেন সুজন

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

হাতুরা ছিলেন কঠোর, অনুশীলনে আদর করেন সুজন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ দলের সাবেক প্রধান কোচ ছিলেন চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে। তিনি খুব কঠোর ছিলেন। এখন দলকে তত্ত্ব¡াবধান করছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি টিম ডিরেক্টরের পদে আছেন। তবে কাজ প্রধান কোচের মতোই। তিনি ক্রিকেটারদের যা বোঝান, আদর করেই বোঝান। বকা দিলেও পরে আদর করে বুঝিয়ে দেন। আর তাই আসন্ন ত্রিদেশীয় সিরিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ নিয়ে চলা জাতীয় দলের প্রস্তুতির পর শনিবার পেসার তাসকিন আহমেদকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হাতুরাসিংহের সঙ্গে সুজনের পার্থক্য কি? তাসকিন যা বললেন, তাতে ‘কঠোর’ হাতুরাসিংহের পর ‘আদুরে’ সুজনের ক্লাসেই যে আছেন ক্রিকেটাররা। তাই বোঝা গেছে। তাসকিন এ নিয়ে বলেছেন, ‘একেকজনের বলার ধরন একেকরকম। উনি (চন্দ্রিকা হাতুরাসিংহে) হয়ত রাগ করলে বকাঝকা করতেন। (খালেদ মাহমুদ) সুজন স্যার, উনিও বকেন। কিন্তু আদর করে আবার বুঝিয়ে শুনিয়ে দেন।’ তাতেই বোঝা যাচ্ছে, হাতুরাসিংহে কত কঠোর ছিলেন। ক্রিকেটারদের বকাঝকার ওপর রাখতেন। আর সুজন বকলেও পরে আদর করে সব বুঝিয়ে দেন। আর এজন্য জাতীয় দলের অনুশীলনে ক্রিকেটাররাও যেন ফুরফুরে মেজাজেই অনুশীলন করছেন। যে মেজাজ হাতুরাসিংহের আমলে দেখা যায়নি। সব সময় ক্রিকেটাররা একটা ভয়ের মধ্যে যেন থাকতেন। এই না কোন ভুল হয়ে যায়। বকা ঝকা শুরু হয়ে যায়। বাংলাদেশ পেসারদের কাছ থেকে ব্যাটিংয়ে ভাল কিছুই আদায় করার অনুশীলন চলছে এখন। টেলএন্ডাররা যেন দলকে ব্যাট হাতে রান উপহার দিতে পারেন। সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। পেসারদের, টেলএন্ডারদেরও ব্যাটিংটা ভালভাবে রপ্ত করার কাজ চলছে। তাসকিনও মনে করেন, এটা জরুরী, ‘অনেক ক্লোজ ম্যাচে বোলারদেরও ব্যাট হাতে ভূমিকা রাখতে হয়। সেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের লোয়ার অর্ডার অনেক উন্নত। আমাদের যে উন্নতি হয়নি, তা নয়। আগের থেকে উন্নতি হয়েছে। যদি ১৫/২০টা রান করতে পারি লোয়ার অর্ডারে, তাহলে দলের লাভ হবে, জেতার সম্ভাবনাও বাড়বে।’ ইতিবাচক খেলার অনুশীলন এখন চলছে। তাসকিনও সেই কথাই জানালেন, ‘পজেটিভ খেলার অনুশীলন করছি। যেটা বাজে বল ওটাকে পানিশ করা। উল্টাপাল্টা না। বেসিকে সোজা খেলা। বোলারদেরও ভাল ব্যাটিং দেখতে পাবেন।’ শুধু টেলএন্ডারদের ব্যাটিং নয়, বোলিং নিয়েও বিশেষ কাজ হচ্ছে। তাসকিন তা বুঝিয়েও দিলেন, ‘এটা আসলে স্কিল নিয়ে ড্রিল করছিলাম। সিম পজিশন ঠিক করা, যার যা শক্তি, আউটসুইং, ইনসুইং, ইনকাট। যা যা শক্তির জায়গা ওটা কিভাবে ইম্প্রুভ করা যায় এবং একুরেসি কীভাবে বাড়ানো যায়। সত্যি কথা বলতে শেষ দুটি সিরিজ আমাদের ভাল যায়নি। বিশেষ করে সাউথ আফ্রিকা সিরিজটা বোলারদের জন্য খুব খারাপ ছিল। আশা করি আমরা নেক্সট সিরিজে ফিরে আসব। সবাই হার্ড ওয়ার্ক করতেছে। তাগিদটাও সবার বেশি। সেজন্য আউটকামও ভাল হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘যারা ক্রিকেট ভাল বোঝে তারা বুঝবে যে সাউথ আফ্রিকায় আসলে ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব ভাল উইকেট হয়। নাম শুনে সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডে বোলিং ট্র্যাক হয় ভাবা হবে ভুল। আসলে ওখানে ৩৫০ রান হয়। আমরা আসলে রানও কম করেছি। খালি বোলারদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। যাই হোক যেদিন চলে গেছে তা নিয়ে আর কথা না বলি। সামনে নতুন বছর আসতেছে। নতুন শুরু হবে ইনশাল্লাহ।’ সুজন কেমন, তা জানাতে গিয়ে তাসকিন আরও বললেন, ‘সুজন স্যারের সঙ্গে আমরা বোলাররা যারা আছি তারা ছোটবেলা থেকেই কাজ করছি। কারণ তিনি জানেন কার কি শক্তি। আমার যেটা ন্যাচারাল ইনকাটটা ছিল, আমি হয়ত সাউথ আফ্রিকাতে আউট সুইং নিয়ে বেশি কাজ করতে গিয়ে হয়ত মূল শক্তির জায়গায় ফোকাস করা হয়নি। এখন আবার সেটা করছি। সুজন স্যার ওখানেই ফোকাস করাচ্ছেন। আশা করি ঠিক হয়ে যাবে।’ উইকেট কেমন চান? তাসকিন বলেন, ‘বাংলাদেশে যেরকম উইকেট হয় অমন উইকেটে কিন্তু আমরা ভাল করেছি। ভারত, সাউথ আফ্রিকা, পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতেছি। যে উইকেটেই হোক স্কিল এক্সিকিউশনটাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সুজন স্যার স্পটে ফেলে দেখছেন কার কত একুরেসি, ভিডিও করা হচ্ছে। ভিন্ন ধরনের ট্রেনিং করা হচ্ছে।’ এখন জাতীয় দলের কেউ কথা বলা মানেই অবধারিতভাবেই একটি বিষয় চলে আসছে। হাতুরাসিংহে এখন বাংলাদেশের কোচ নন। তিনি শ্রীলঙ্কার কোচ। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই আবার হাতুরাসিংহের শ্রীলঙ্কার এ্যাসাইনমেন্ট শুরু হচ্ছে। তাসকিনকেও তাই প্রশ্ন করা হয়েছে। হাতুরাসিংহে শ্রীলঙ্কার কোচ। সুবিধা পাবে কিনা? তাসকিন জানান, ‘হাতুরাসিংহে আমাদের অনেকদিন কোচ ছিলেন। তিনি আসলে আমাদের ভাল মন্দ জানেন যে কার কি শক্তি-দুর্বলতা। এটা হয়ত ওদের বাড়তি সুবিধা দিতে পারে। তাও আমার বিশ্বাস দেশের মাটিতে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেললে ভাল কিছু হবে।’ দলে অনেক পেসার। নতুন চ্যালেঞ্জ কিনা? তাসকিন বলেন, ‘এটা তো শুধু এখন না, সব সময় চ্যালেঞ্জ ফিল করতাম। যারাই আছে স্কোয়াডে সবাই স্কিলফুল।’
×