ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আমিরাতের প্রথম নারী চিকিৎসক

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭

আমিরাতের প্রথম নারী চিকিৎসক

ভারতীয় নাগরিক জুলেখা দাউদকেই সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম নারী চিকিৎসক বলে মনে করা হয়। দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পাল্টে দেয়ার ক্ষেত্রে এক বড় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। জুলেখা দাউদের বয়স এখন ৮০। ১৯৬৩ সালে প্রথম যেদিন তিনি দুবাইতে এসে নামলেন, সেই দিনটির কথা এখনও মনে করতে পারেন। তিনি বলেন, আমরা যখন নামলাম, তখন সেখানে কোন বিমানবন্দর ছিল না। কেবল একটা রানওয়ে। নামার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গায়ে এসে লাগল গরম হলকা। সেই গরম সহ্য করার মতো ছিল না। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এখনকার স্বাস্থ্য সেবার মান দেখলে সে সময়ের অবস্থা কল্পনাও করা যাবে না। তখন সেখানে হাসপাতাল বলতে কিছু ছিল না। অন্যান্য দেশ থেকে ধার করে আনা ডাক্তার দিয়ে কোন রকমে স্বাস্থ্য সেবা চালাচ্ছিল তারা। ডাঃ দাউদ করেন, কত রকম অসুখ-বিসুখে ভুগছিল তখন আমিরাতের মানুষ। যক্ষ্মা থেকে শুরু করে ডায়রিয়া। মেয়েদের সন্তান প্রসব করানোর মতো নারী ডাক্তার পর্যন্ত ছিল না। অপুষ্টিতে ভুগছিল শিশুরা। তিনি বলেন, আমিতো দুবাই আসার আগে এই জায়গার নাম পর্যন্ত শুনিনি। এখানে আসার পরই বুঝতে পেরেছিলাম এখানকার জীবন কত কষ্টের। তখন দুবাইতে এয়ারপোর্ট যেমন ছিল না, তেমনি ছিল না কোন সমুদ্র বন্দর। এয়ারকন্ডিশনিং ব্যবস্থা তখনও স্বপ্ন। একটা শহরে যে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার, তার কিছুই ছিল না সেখানে। বিদ্যুৎ থাকত না সবসময়। ডাঃ দাউদের মতো সিরিয়া এবং লেবানন থেকে এসেছিলেন আরও অনেক ডাক্তার। তারা সেখানে কাজ করতে চাচ্ছিলেন না। এরা ফিরেও গেছেন। কিন্তু ডাঃ দাউদ রয়ে গেলেন। তার মনে হলো এখানে অনেক কাজ করার আছে। ডাঃ জুলেখা দাউদ একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। কিন্তু দুবাইয়ের তখনকার অবস্থার কারণে তাকে জেনারেল প্র্যাকটিশনার হিসেবেই কাজ শুরু করতে হলো। ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে দুবাই পর্যন্ত তার এই দীর্ঘযাত্রা সহজ ছিল না। তিনি পাশ করেছিলেন নাগপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে। দুবাইতে তার প্রথম কাজ পড়েছিল মরুভূমির মাঝে একটা অস্থায়ী হাসপাতালে। সেখানে চারদিকে উপজাতীয়রা থাকত। এরপর দিনে দিনে ডাঃ দাউদের সুখ্যাতি বাড়তে লাগল। পেশায় উন্নতি হতে লাগল। স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন তিনি। ১৯৭১ সালে যখন সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠিত হলো, তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব¡ পেলেন। এরপর তিনি নিজেই স্বাস্থ্যখাতে উদ্যোক্তার ভূমিকায় নামলেন। এখন তিনি তিনটি বড় হাসপাতালের মালিক।-বিবিসি অনলাইন
×